শুরু অসম বিধানসভার বাজেট অধিবেশন, প্রথমদিনেই বহিষ্কৃত অখিল

গুয়াহাটি, ১৪ মার্চ (হি.স.) : রাজ্যপাল অধ্যাপক জগদীশ মুখির ভাষণের মধ্য দিয়ে আজ সোমবার থেকে শুরু হয়েছে অসম বিধানসভার বাজেট অধিবেশন। এদিকে, রাজ্যপাল যখন ভাষণ দিচ্ছিলেন, তখন বিরোধী রাইজর দলের নেতা তথা শিবসাগরে নির্দলীয় বিধায়ক অখিল গগৈ হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভের নামে হইচই শুরু করেন। তাঁর অভিযোগ, রাজ্যপালের ভাষণে অসমের মূল সমস্যাগুলির সামান্যতম কথাও উল্লেখ করা হয়নি। কোনও ভাবে তাঁকে ক্ষান্ত করতে না পারায় অখিল গগৈকে হাউজ থেকে বহিষ্কার করেন অধ্যক্ষ বিশ্বজিৎ দৈমারি।

রাজ্য এক লক্ষ বেকারকে চাকরি দেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতির কী হল ইত্যাদি নানা প্রশ্ন তুলে, হাতে একটি প্ল্যাকার্ড নিয়ে হাউজে প্রতিবাদের নামে উশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি করছিলেন অখিল গগৈ। বিধানসভার অধ্যক্ষ বার বার তাঁকে রাজ্যপালের ভাষণের পর তাঁর বক্তব্য পেশ করার জন্য অনুরোধ করেন। বহুবার অনুনয়ের পরও ক্ষান্ত না হওয়ায় অখিল গগৈকে হাউজ থেকে বহিষ্কার করেন অধ্যক্ষ দৈমারি।

সদনের বাইরে এসে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে অখিল গগৈ বলেন, রাজ্যপাল মিথ্যা কথা বলে ভাষণ দিচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘বিধানসভায় রাজ্যপালের ভাষণ সরকারের নিয়মিত কাজের প্রশংসা ছাড়া আর কিছুই নয়। রাজ্যপালের ভাষণে অসমের মূল সমস্যাবলির সামান্যতম উল্লেখ নেই। অখিল বলেন, ‘রাজ্যপাল তাঁর ভাষণে বলছেন, অসমের কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্ৰয় করা হচ্ছে, সরকার ধান কেনার ব্যবস্থা করছে। ১০ লক্ষ মেট্ৰিকটন ধান অসমের কৃষকদের কাছ থেকে ন্যূনতম সমৰ্থনমূল্যে ক্ৰয় করা হবে।’ তিনি বলেন, ‘এখানে লেখা আছে, ৮৬ হাজার মেট্ৰিকটন ধান এখন পর্যন্ত ক্ৰয় করা হয়েছে। অৰ্থাৎ, ১০ ভাগের এক অংশও সাফল্য লাভ হয়নি। সরকার এক্ষেত্রে ব্যর্থ। অথচ রাজ্যপাল বলছেন, সরকার নাকি সাংঘাতিকভাব সফল হয়েছে। রাজ্যপাল মিথ্যা কথা বলেই থাকবেন, আর জনপ্ৰতিনিধি হিসেবে আমরা মুখ বন্ধ করে বসে থাকব? তা হবে না।’

অখিল গগৈ আরও বলেন, ‘এই সরকার বলেছিল তারা এক লক্ষ নিয়োগ দেবে। ২০২২ সালের ১০ মে-র মধ্যে রাজ্যের বেকারদের নিয়োগ সুনিশ্চিত করা হবে। রাজ্যপাল তাঁর ভাষণে বলেছেন, রাজ্যের ২৭ হাজার বেকারকে নাকি কর্মবিনিয়োগ কমিশন কর্তৃক নিযুক্তি দেওয়া হবে। তাছাড়া ৩৭ হাজার বেকারকেও নিয়োগ পর্ষদের দ্বারা চাকরির ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘রাজ্যপালের ভাষণ অনুযায়ী সরকার কোথায় কী পদক্ষেপ নিয়েছে তা আমাদের জানা নেই। রাজ্যপালের ভাষণে এক লক্ষ বেকারের কর্মসংস্থান নিয়ে মিথ্যাচারের কথা উঠে এসেছে।’

‘তাই এ ধরনের মিথ্যা ভাষণ কোনও জনপ্ৰতিনিধির শোনা উচিত নয়। প্ৰতিবাদ করেছিলাম, তাই আমাকে সদন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এই সংগ্ৰাম অব্যাহত থাকবে, জনতার পক্ষে অবস্থান গ্ৰহণ করেই থাকব। কেবল সদন থেকে বহিষ্কারই নয়। প্রয়োজনে বিধানসভার সদস্যপদও ত্যাগ করতে রাজি। তবে জনতাকে অসার কথা শুনিয়ে, মিথ্যা সংলাপে রচিত গান গাইতে দেব না,’ সাংবাদিকদের সামনে বলেন বামপন্থী নেতা শিবসাগরের বিধায়ক অখিল গগৈ।