আগরতলা, ১২ মার্চ : আজাদি কা অমৃত মহোৎসবের অঙ্গ হিসাবে ‘এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত’ কর্মসূচিতে আজ সন্ধ্যায় উজ্জয়ন্ত প্রাসাদ প্রাঙ্গণে বর্ণময় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ফ্যাশন শো অনুষ্ঠিত হয়। ভারত সরকারের পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উত্তর-পূর্বাঞ্চল বিভাগের উদ্যোগে এবং ত্রিপুরা পর্যটন উন্নয়ন নিগম লিমিটেডের সহযোগিতায় এই অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। এতে ত্রিপুরা, বিহার এবং মিজোরাম এই তিন রাজ্যের ট্যুর অপারেটর, ট্রেভেল এজেন্ট এবং হোটেল ব্যবসায়ীরা অংশ নেন। উদ্দেশ্য পর্যটন শিল্পকে আরো কিভাবে বিকশিত করা যায়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে বিধানসভার অধ্যক্ষ রতন চক্রবর্তী বলেন, আত্মনির্ভর ত্রিপুরা গড়তে হলে পর্যটনকে হাতিয়ার করতে হবে। সে লক্ষ্যে ত্রিপুরা আজ এগিয়ে চলেছে। রাজ্যের পর্যটন শিল্পকে বিকশিত করার লক্ষ্যে অনেকগুলি জাতীয় সড়ক নির্মাণের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। রাজ্যের স্থলপথ, রেলপথ, আকাশপথে যোগাযোগের মান অনেক উন্নত হয়েছে। ধীরে ধীরে দক্ষিণ এশিয়ার করিডোর হচ্ছে ত্রিপুরা।
অধ্যক্ষ শ্রী চক্রবর্তী বলেন, এ রাজ্য প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর। একে কাজে লাগাতে হবে। জ্যে পর্যটকদের আগমন বাড়লে অর্থনৈতিক উন্নয়নও ত্বরান্বিত হবে। তিনি বলেন, পর্যটন প্রসারের সাথে সাথে এ রাজ্য কাঁঠাল, আনারস, লেবু রপ্তানিতে আন্তর্জাতিক বাজারে খ্যাতি অর্জন করেছে। আমরা চাই নেশামুক্ত, হিংসামুক্ত, উন্নয়নমুখী ত্রিপুরা। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ত্রিপুরার উন্নয়নে আন্তরিক রয়েছেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির ভাষণে কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আঞ্চলিক অধিকর্তা শঙ্খশুভ্র দেববর্মণ বলেন, ত্রিপুরার প্রাকৃতিক বৈচিত্র বড় মনোরম। পর্যটনেও এ রাজ্য দ্রুত এগিয়ে চলছে। প্রসাদ ও স্বদেশ প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের পর্যটন স্থলগুলির বহুমুখী উন্নয়ন কাজ এগিয়ে চলেছে।
অনুষ্ঠানে উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে অতিথিদের সংবর্ধনা জ্ঞাপন করা হয়। অনুষ্ঠান উপলক্ষে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে রাজ্যের শিল্পীরা হজাগিরি, মামিতা, দেশাত্মবোধক, লোকনৃত্য ও একক সংগীত পরিবেশন করেন। উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশন করেন তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের শিল্পীগণ। তাছাড়া রাজ্যের জাতি, জনজাতির যুবক-যুবতীরা চিরাচরিত পোশাকে ফ্যাশন শো-এ অংশ নেয়। অনুষ্ঠানে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন দূরদর্শন কেন্দ্র ত্রিপুরা প্রোগ্রাম হেড আল্পনা দাস। এদিকে পর্যটন দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয় এই কর্মসূচির অঙ্গ হিসাবেই ১১ মার্চ উদয়পুরের ভূবনেশ্বরী মন্দির প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়েছে স্বচ্ছ ভারত অভিযান। এরপর ত্রিপুরা, মিজোরাম ও বিহারের ট্যুর অপারেটর ও ট্যুর এজেন্টদের ছবিমুড়া ও ডুম্বুর পর্যটন কেন্দ্র পরিদর্শন করানো হয়।এই উপলক্ষে আজ সকালে গীতাঞ্জলি পর্যটন আবাসে ত্রিপুরা, মিজোরাম ও বিহারের ট্যুর অপারেটর, ট্যুর এজেন্ট ও হোটেল ব্যবসায়ীদের মধ্যে মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আঞ্চলিক অধিকর্তা শঙ্খশুভ্র দেববর্মণ, ত্রিপুরা পর্যটন উন্নয়ন নিগম লিমিটেডের এম ডি তড়িৎ কান্তি চাকমা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। মত বিনিময় সভায় এই তিন রাজ্যের পর্যটকরা যাতে প্যাকেজ ট্যুরের মাধ্যমে যাতায়াত করতে পারেন সে বিষয়ে রূপরেখা তৈরি করা হয়।

