আগরতলা, ৫ জানুয়ারি (হি. স.) : পূর্বতন সরকারকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যে ছ্যাকা খেয়ে আজ তেলেবেগুনে জ্বলে উঠেন বিরোধী দলনেতা তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। তাই তিনি প্রধানমন্ত্রীকে চাঁচাছোলা ভাষায় বিধেছেন। তারই পাল্টা জবাবে তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে ত্রিপুরায় বাম জমানায় ২৫ বছরের অপশাসন মনে করালেন। সাথে তিনি প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে ভাষার প্রয়োগে সংযত হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
আজ বিজেপি প্রদেশ কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে সুশান্ত চৌধুরী বলেন, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার স্বাধীনতা আন্দোলনে বিজেপির কোন অবদান ছিল না বলে দাবি করেছেন। অথচ দেশ স্বাধীন হওয়ার পশ্চিমবঙ্গে কমিউনিস্টরা এই স্বাধীনতা মিথ্যা এবং তাঁরা তা মানেন না বলে শ্লোগান দিয়েছেন। তিনি দাবি করেন, ব্রিটিশদের কমিউনিস্টরাই গোপনে মদত দিয়েছেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ত্রিপুরাকে হীরা মডেল দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এবং গতকাল ভাষণে সেবিষয়েই তিনি তুলে ধরেছেন। সাথে ত্রিপুরার উন্নয়নে আরো সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বিদ্রুপ করে বলেন, বাম নেতারা ত্রিপুরা এবং পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতা হারিয়ে হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন এবং তাঁরা পুরনো খেলায় মেতে উঠেছেন।
এদিন সুশান্ত চৌধুরী একাধিক দুর্নীতির সাথে জড়িত থেকে বামফ্রন্ট সরকারের কলঙ্কিত অধ্যায়গুলি মনে করিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, বাম জমানায় একের পর এক দুর্নীতি হয়েছে। আদা কেলেঙ্কারী, রোজ ভ্যালি চিটফান্ড কান্ড, ব্লকে দুর্নীতি গুনে শেষ করা যাবে না। ২০১৮ পর্যন্ত দুর্নীতির দীর্ঘ তালিকা ত্রিপুরাবাসী এখনো ভুলে যাননি, কটাক্ষের সুরে বলেন তিনি।
এমবিবি বিমান বন্দর নিয়েও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে একহাত নিয়েছেন সুশান্ত চৌধুরী। তিনি বলেন, বামফ্রন্ট আমলে বিমানবন্দরের সম্প্রসারণের অনুমোদন হয়েছে ঠিকই। কিন্ত, কাজের সফল বাস্তবায়ন বিপ্লব দেবের নেতৃত্বের সরকারের জমানায় হয়েছে। তিনি দাবি করেন, বাম জমানা হলে বিমান বন্দরের কাজ সমাপ্ত হওয়ার বদলে শুধুই দুর্নীতির প্রমান মিলত। কিন্ত, এখন গুনমান বজায় রেখে সঠিক সময়ের বিমানবন্দরের কাজ সমাপ্ত হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছেন ত্রিপুরায় রেল বামেদের দীর্ঘ আন্দোলনের ফলে সম্ভব হয়েছে। কিন্ত, বামেরা ভুলে গেছেন, কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে সরকারের সদিচ্ছায় অল্প সময়ের রেল যোগাযোগের ক্ষেত্রে ত্রিপুরার বিরাট প্রাপ্তি হয়েছে। তাঁর কটাক্ষ, বামেরা শুধুই কৃষক ও ছাত্রছাত্রীদের দলীয় পতাকা বহন এবং মিছিলে হেটে তাঁদের স্বার্থে প্রচার সম্পন্ন করতেন।
আজ মানিক সরকার কেন্দ্র এবং রাজ্যের সরকার পরিচালনায় স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তার জবাবে সুশান্ত চৌধুরী সুর চড়িয়ে বলেন, কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের দুর্নীতির একটি প্রমান তুলে ধরুন। তাঁর দাবি, টিএসআর নিয়োগে স্বচ্ছ নিয়োগ নীতি অবলম্বন করা হয়েছে, তাই বামেদের ঘরেও চাকুরীর অফার গিয়েছে।