তেলিয়ামুড়া, ২৩ ডিসেম্বর : বন্য হাতির তান্ডবে দিশেহারা গ্রামবাসী আজ বাধ্য হয়ে জাতীয় সড়ক অবরোধ করলেন। প্রায় ছয় ঘন্টা অসম-আগরতলা জাতীয় অবরুদ্ধ রাখার পর প্রশাসনের সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে গ্রামবাসী অবরোধ তুলে নেন। তবে, হাতির তান্ডব বন্ধের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণে ৭২ ঘন্টা সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন তাঁরা। এদিন, তেলিয়ামুড়া মহকুমা শাসকের কার্যালয়ের সামনে অসম-আগরতলা জাতীয় সড়ক সহ উত্তর মহারানীর অফিস টিলা এলাকাতেও গ্রামবাসীরা অবরোধ করেছিলেন। তাতে, যান চালচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ৯ ডিসেম্বর থেকে খোয়াই জেলায় বিভিন্ন এলাকায় হাতির তান্ডব চরম আকার ধারণ করেছে। প্রায় প্রতিদিন রাতে বন্য হাতির দল পাহাড় থেকে নেমে সমতলে মানুষের বাড়িঘরে হামলা চালাচ্ছে এবং ফসল নষ্ট করছে। মহারানী পুর কপালীটিলা, কর্মকার টিলা, অফিস টিলা, জুম বাড়ি, ভূমিহীন টিলা, উত্তর কৃষ্ণপুর, চাকমা ঘাট, মধ্য কৃষ্ণপুর, চামপ্লাই সহ বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে বন্য হাতির তান্ডবে গ্রামবাসী অতিষ্ট হয়ে উঠেছেন। গতকাল রাতেও কল্যানপুরে ৮টি বাড়িতে বন্য হাতির দল হামলা করেছে। গ্রামবাসী প্রাণভয়ে পালিয়ে বেঁচেছেন।
লাগাতর হাতির তান্ডবে অতিষ্ট গ্রামবাসী আজ বাধ্য হয়ে জাতীয় সড়ক অবরোধে নেমেছেন। গ্রামবাসীর বক্তব্য, বন্য হাতির তান্ডবে সর্বস্বান্ত হওয়ার উপক্রম, অথচ বন দফতর এবং প্রশাসনের কোন হেলদোল দেখা যাচ্ছে না। তাই আজ তারা জাতীয় সড়ক অবরোধ করেছেন বলে জানিয়েছেন।
খবর পেয়ে অবরোধ স্থলে ছুটে আসেন তেলিয়ামুড়া মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সোনা চরণ জমাতিয়া, তেলিয়ামুড়া ফরেস্ট রেঞ্জ অফিসার সুপ্রিয় দেবনাথ, তেলিয়ামুড়া মহকুমা বন আধিকারিক সাবির কান্তি দাস, মহকুমা প্রশাসনের ডিসিএম প্রদীপ দেববর্মা সহ পদস্থ আধিকারিকরা। তাঁরা অবরোধকারীদের সাথে দফায় দফায় আলোচনা করেও ব্যর্থ হন।
এদিকে, সমস্যা সমাধান নিয়ে জেলা বন আধিকারিকের কার্যালয়ে বনদপ্তরের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে গ্রামবাসীদের মধ্যে থেকে কয়েকজন প্রতিনিধিদের নিয়ে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই বৈঠকে হাতির সমস্যার স্থায়ী সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। সুনির্দিষ্ট আশ্বাস পেয়ে গ্রামবাসীরা প্রায় ছয় ঘন্টা পর অবরোধ তুলে নেন। কিন্ত, সমস্যা সমাধানে ৭২ ঘন্টা সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন। ওই সময়ের মধ্যে সমস্যার স্থায়ী সমাধান না হলে বৃহত্তর আন্দোলন সংগঠিত করার হুশিয়ারী দিয়েছেন তাঁরা।