আগরতলা, ২১ ডিসেম্বর (হি. স.) : রাজনৈতিক দিশাহীনতা ও হতাশায় ভোগছেন বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার। ত্রিপুরায় সিপিএমের জনভিত্তি তলানীতে এসে ঠেকায় পুরোপুরি হতাশা গ্রাস করেছে বিরোধী দলনেতা মানিক সরকারকে। আজ এভাবেই বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার ও সিপিএম-কে বিধলেন তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী।
তিনি বলেন, ক্ষমতা হারানোর পর থেকেই বার বার মিথ্যা ও অপপ্রচারকে ভিত্তি করে রাজনৈতিক জমি ফিরে না পেয়ে ত্রিপুরাবাসীকে বিজেপি সরকার সম্পর্কে নানাভাবে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন মানিক সরকার। বিরোধী দলনেতা হিসাবে তাঁর পদমর্যাদা পর্যন্ত বজায় রাখতে পারছেন না তিনি। শেষ পর্যন্ত বিজেপি এবং রাজ্য সরকার সম্পর্কে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও মিথ্যাচারে নেমেছেন তিনি। তাতে তাঁর এবং সি পি এমের কোন রাজনৈতিক লাভ হবে না, ক্ষোভের সুরে বলেন তথ্য মন্ত্রী। সাথে তিনি যোগ করেন, দিন দিন দলের নেতিবাচক রাজনৈতিক ভূমিকায় সিপিএম আরো জনভিত্তি হারাবে।
এদিন তিনি বলেন, বাম আমলে মজলিশপুর ছিলো আতঙ্কের ও সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘর। দিন দুপুরে খুন হওয়া রবি – লিটন দেববর্মার বিচার হয়নি, খুন হয়েছে সাংবাদিক শান্তনু ভৌমিক, ২০০৩ সনের মান্দাই চৌমুহনীর ১১ জন গনহত্যার বিচার হয়নি। মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বলেন, সম্পূর্ন জনভিত্তি হারিয়ে সি পি এম নেতৃত্ব দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। চরম হতাশায় ভোগছেন। সি পি এমের কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচীতে মানুষ আসছে না।
তাঁর বক্তব্য, ২৫ বছর সি পি এমের শাসনে রাজ্যের শিক্ষিত বেকার যুবক থেকে শুরু করে শিক্ষক কর্মচারীদের সঙ্গে নানা ভাবে প্রতারণা করেছে। দুর্নীতিতে আপাদমস্তক ডুবে গিয়েছেন সিপিএম নেতা মন্ত্রীরা। খুন সন্ত্রাস ছিল প্রতিদিনের নিত্য ঘটনা। অথচ, কোন ঘটনারই বিচার পাননি মানুষ। এমনকি থানা-পুলিশ মামলা গ্রহণ করত না।
তাঁর কথায়, সাধারণ মানুষই খুন হয়েছেন এমনটা নয় – সি পি এমের টানা ২৫ বছরে ত্রিপুরায় হাজারো রাজনৈতিক খুনের ঘটনা ঘটেছে। তিনি বলেন, সালেমায় খুন হন তৎকালীন বিরোধী দলের প্রার্থী মঙ্গল প্রসাদ দেববর্মা। খোদ রাজধানীতে খুন হন বিধায়ক মধু সূদন সাহা। খুন হন সি পি এম নেতা তথা মন্ত্রী বিমল সিনহা, বিধায়ক পরিমল সাহা, গৌতম দত্ত সহ বহু নেতা। শুধু তাই নয়, খুন হয়েছেন সদর এস ডি এম সুখরাম দেববর্মা। এটাই ছিল সিপিএম রাজত্বে রাজ্যের নিত্যদিনের ঘটনা।
শ্রীচৌধুরী বলেন, বামফ্রন্ট আমলে রাজ্যে গনতন্ত্র বলে কিছুই ছিলো না। ছিল শুধুই দলতন্ত্র। ছিল না রাজ্যবাসীর মৌলিক অধিকার। তাঁর কটাক্ষ, সিপিএমের মিছিলে না হাটলে, নেতাদের বাড়ি বাড়ী হাজিরা না দিলে রেগার কাজ পেতেন না মানুষ। সিপিএম নেতা-কর্মী না হলে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ঘর পেতেন না সাধারন গরীব মানুষ।
তাঁর দাবি, বিজেপি রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। দলমতের বিচার না করে সবাইকে ঘর প্রদান করা হচ্ছে । মুখ্যমন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ইতিমধ্যে একদিনে প্রধামন্ত্রীর হাত ধরে প্রায় দেড়লক্ষ পরিবারকে পাকা ঘরের জন্য ব্যাংকে প্রথম কিস্তির টাকা প্রদান করা হয়েছে। শ্রী চৌধুরী জানান, রাজ্যে ২০১৮ সালে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর প্রায় দু’বছর কোভিড মহামারী সত্ত্বেও সর্বস্তরে উন্নয়নের কর্মসূচী চলছে। পরিকাঠামোর উন্নয়ন হচ্ছে। শিক্ষা- স্বাস্থ্য, সর্বক্ষেত্রে উন্নয়নের কাজ তরান্বিত হয়েছে। ২০১৮ সালেও যারা মিছিলে হাটতেন তারা রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর জনকল্যাণে রাজ্যে সরকারের গৃহীত একের পর এক ইতিবাচক সিদ্ধান্ত দেখে দলে দলে সি পিএম ছেড়ে বি জে পিতে যোগ দিচ্ছেন। তাতে চরম হতাশায় ভোগছেন বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার সহ সিপিএম নেতৃত্ব।
শ্রীচৌধুরী বলেন, এখন মানুষ সিপিএমের মিছিল-মিটিংয়ে যাচ্ছেন না। এমন পরিস্থিতিতে সম্পূর্ন দিশাহীন ও হতাশাগ্রস্থ হয়ে বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার রাজ্যের চলমান উন্নয়নমূলক কাজকে কৌশলে স্তব্ধ করে দিতে বিজেপি সরকার সম্পর্কে রাজ্যবাসীকে বিভ্রান্ত করতে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। তাঁর সাফ কথা, সিপিএমের ঘোলাজলে মাছ শিকারের রাজনীতি সফল হবে না। ত্রিপুরাবাসী রাজ্য সরকারের উন্নয়ন যজ্ঞের পাশে রয়েছেন। তিনি বলেন, সম্প্রতি রানীর বাজারে সিপিএমের সভায় হামলার ঘটনা তাদের আমলে বঞ্চিতদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ । ঘটনার সঙ্গে বি জে পি দলের কোন নেতা জড়িত ছিলো না।