কদমতলা (ত্রিপুরা), ৯ ডিসেম্বর (হি.স.) : নিশিকুটুম্বের হানা পড়ল শিবমন্দিরে। এতে ধর্মপ্রাণ মানুষ রাগে, ক্ষোভে পথ অবরোধ করেন। উত্তর ত্রিপুরা জেলার কদমতলা থানাধীন ইছাই লালছড়া শিবমন্দিরে গতকাল বুধবার গভীর রাতে চুরির ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার স্থানীয় জনগণ ধর্মনগর-কদমতলা সড়ক অবরোধ করেন। প্রায় দুই ঘণ্টা অবরোধের ফলে যান চলাচল ব্যাহত হয়। কদমতলা থানার ওসি অবশেষে আশ্বাস দেন, শিব মন্দিরে চুরির সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর পরই অবরোধ প্রত্যাহার হয়েছে।
আজ প্রাতঃভ্রমণ বেরিয়ে স্থানীয় জনগণ শিবমন্দিরে মূল ফটকের তালা ভাঙা দেখেন। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকাবাসী ছুটে আসেন মন্দিরে। স্থানীয় জনগণের দাবি, মন্দিরের প্রণামী বাক্স থেকে নগদ দশ থেকে বারো হাজার টাকা এবং স্বর্ণালংকার ও মন্দিরে ব্যবহৃত পূজার সামগ্রী চুরি হয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ১৫ দিন আগেও এই শিবমন্দিরে চুরির ঘটনা ঘটেছে। অথচ, পুলিশে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও কোনও কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ফলে, গতকাল রাতে পুনরায় চোরের দল শিবমন্দিরে হানা দিয়েছে।
স্থানীয়দের বক্তব্য, প্রতি বছর এই শিব মন্দিরে পাঁচ থেকে ছয়বার চুরির ঘটনা সংগঠিত হয়। চোর আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু চুরি থামানো যায়নি। তাই আজ পুলিশের উপর থেকে আস্থা হারিয়ে এলাকাবাসী সড়ক অবরোধ করেন।
এদিকে খবর পেয়ে কদমতলা থানার কৃষ্ণধন সরকার পুলিশ বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে এসে অবরোধকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। অবরোধ প্রত্যাহার করতে আপ্রাণ চেষ্টা করেন ওসি সহ পুলিশকর্মীরা। কিন্তু অবরোধকারীরা কোনও অবস্থায় রাজি হচ্ছিলেন না।
স্থানীয় জনগণের বক্তব্য, ইছাই লালছড়া শিবমন্দিরটি বহু প্রাচীন এবং ধর্মপ্রাণ মানুষের বিশ্বাসের স্থল। প্রতিদিন মন্দিরে ভক্তরা পূজা দেন। বিভিন্ন পার্বণ ঘটা করে পালন করা হয় ওই মন্দিরে। অথচ, ভগবানের বাসস্থানই এখন নিরাপদ নয়। চোরের দল প্রতিবছর হানা দিয়ে সব লুটেপুটে নিয়ে যাচ্ছে। পুলিশ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। এদিন অবরোধকারীরা সকাল আটটা থেকে দশটা পর্যন্ত ধর্মনগর-কদমতলা সড়ক অবরোধ করে রাখেন। অবশেষে কদমতলা থানার ওসি কৃষ্ণধন সরকার অবরোধকারীদের সাথে কথা বলেন এবং আশ্বাস দেন শিবমন্দিরে চুরির সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওই আশ্বাসের ভিত্তিতে অবরোধকারীরা দুই ঘণ্ট পর অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন।