আগরতলা, ৮ ডিসেম্বর (হি. স.) : সকলেই হয়তো নিজেদের মধ্যেই সীমিত হয়ে রয়েছেন। তাই, সংগঠন বিস্তারে এবং জনকল্যানে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের ‘ট্রিপল এস’ মন্ত্র ভুলে গেছেন কার্যকর্তাগণ। ফলে, বিজেপি প্রদেশ সভাপতিকে প্রত্যেক কার্যকর্তার নিয়মিত পাঠ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। সাথে ‘ট্রিপল এন’ মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে জনকল্যানে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর সাফ কথা, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র সকলের ত্রাতা হয়ে আসবেন না। প্রত্যেক কার্যকর্তাকে জনগণের সাথে নিবিড় যোগাযোগ স্থাপন করতে হবে। আজ আগরতলা রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে পুর নিগমের নব নির্বাচিত সদস্য-সদস্যদের সপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে এভাবেই প্রত্যেক কার্যকর্তাকে সতর্ক করেছেন তিনি।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেন, আগরতলা পুরনিগম এলাকার সার্বিক বিকাশে বর্তমান সরকার যথেষ্ট আন্তরিক। ত্রিপুরায় পুর ও নগর এলাকায় অত্যাধুনিক পরিষেবা প্রদানেও আন্তরিক সরকার। তাই তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস, আগরতলা পুর নিগমের নব নির্বাচিত সদস্যদের নিষ্ঠাপূর্বক দায়িত্ব সম্পাদন নাগরিক পরিষেবা সুনিশ্চিতিকরণে অগ্রণী ভূমিকা নেবে।
মুখ্যমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, আগরতলা পুরনিগমের নব নির্বাচিত সদস্য ও সদস্যাগণ নিগম এলাকায় অত্যাধুনিক পরিষেবা প্রদানে ও স্মার্ট সিটি রূপে আগরতলাকে সাজিয়ে তুলার পথে দায়িত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন। তাঁর মতে, সরকারের গৃহীত উন্নয়ন কর্মসূচির সঠিক বাস্তবায়ণে উদ্ভাসিত হবে পুরনিগম এলাকা। মুখ্যমন্ত্রী নিগম এলাকার মানুষের সমস্যার প্রতি যথার্থ সম্মান জানিয়ে সমস্যা সমাধানে আন্তরিকতার সাথে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছেন।
তাঁর সাফ কথা, সমস্ত সংকীর্ণতার উর্ধ্বে উঠে সমাজের সকলস্তরের নাগরিকদের কল্যাণেও কাজ করতে হবে। জনগণের দ্বারা ন্যস্ত দায়িত্বের প্রতি যথার্থ সম্মাননা স্বরূপ উন্নত নাগরিক পরিষেবা সুনিশ্চিতকরণে আগরতলা পুর নিগম অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে, আশা প্রকাশ করে বলেন মুখ্যমন্ত্রী। সাথে প্রথম দুই বছর বিশেষ অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে গুরুত্ব সহকারে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
এদিন তিনি বলেন, মানুষ চাইছেন প্রত্যেক জনপ্রতিনিধি তাঁদের পাশে থাকুক। তাঁর মতে, যে সকলের পাশে দাঁড়ায় নেতা সেই হয়। এই বার্তা দিয়ে তিনি সংগঠনের হাল-হকিকত বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করেন। তিনি প্রশ্ন করেন, ‘ট্রিপল এস’ সম্পর্কে নিশ্চই সকলের মনে রয়েছে। কিন্ত তিনি অবাক হন, হলে উপস্থিত একজন কার্যকর্তাও মুখ্যমন্ত্রীর এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি। তিনি পুণরায় ‘ট্রিপল এস’-র বিস্তারিত তুলে ধরেন। বলেন, সংবাদ, স্বভাব এবং স্বদাচার এই তিন মন্ত্রে সকলের দীক্ষিত হতে হবে। সাথে তিনি জুড়ে দেন, ‘ট্রিপল এন’ মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে এখন থেকে কাজ করতে হবে। তার বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, নিয়ত, নীতি এবং নিয়ম এই তিন মন্ত্রে দীক্ষা নিয়ে সকলকে কাজ করতে হবে। কারণ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সকলের জন্য ত্রাতা হয়ে আসবেন না। মুখ্যমন্ত্রী এ-বিষয়ে প্রদেশ বিজেপি সভাপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, প্রত্যেক কার্যকর্তার নিয়মিত ভিত্তিতে পাঠ দিন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে উপমুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণু দেববর্মা বলেন, গণতন্ত্রে মানুষই শেষ কথা বলে। ত্রিপুরা রাজ্যের মানুষ চায় শান্তি, সম্প্রীতি ও উন্নতি। মানুষ সবকা সাথ সবকা বিশ্বাস এই নীতিতেই বিশ্বাসী। তিনি বলেন, এখন রাজ্যের নতুন সংস্কৃতি হচ্ছে উন্নয়নের সংস্কৃতি। উন্নয়নের জন্য রাজ্য সরকারের কাছে অর্থের কোন অভাব নেই। আগেও ছিলনা। কিন্তু ছিল সদিচ্ছার অভাব। উপমুখ্যমন্ত্রী বলেন, করোনা অতিমারীর সময়েও রাজ্য সরকার সামর্থ্যের বাইরে গিয়ে রাজ্যবাসীর কল্যাণে কাজ করেছে। প্রদেশ বিজেপি সভাপতি ডা: মানিক সাহা বলেন, সন্ত্রাসে বিশ্বাসী নয় বিজেপি। প্রেম-ভালবাসার মাধ্যমে এগিয়ে যাব আমরা।