BRAKING NEWS

Heavy rains and landslide : ভারী বর্ষণে বন্যা পরিস্থিতি বিলোনিয়ায়, ধস পরে মৃত এক, আহত দুই, মুখ্যমন্ত্রীর সাহায্য ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৫ আগস্ট।। ভারী বর্ষণে দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলায় বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছিল। বিলোনিয়া শহর জলমগ্ন হয়ে পড়েছিল। ধানের জমি, রাস্তাঘাট, বাড়িঘর, সরকারী অফিস, বিদ্যালয়ে জল জমে ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখা দিয়েছিল। কিন্ত, বেলা গড়াতেই জল নামতে শুরু করেছে। বৃষ্টি থেমে যাওয়ায় নতুন করে জল জমতে পারেনি। তবে, ধস পরে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। আরও দুই নাবালক অল্পেতে প্রাণে বেচেছে। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে প্রশাসনের তরফে তিনটি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। কিন্ত, একটি ত্রাণ শিবিরে একটি পরিবারের ৪ জন সদস্য আশ্রয় নিয়েছেন। এদিকে, মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার ধস পরে মৃতের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের ঘোষণা দিয়েছেন। এছাড়া, বন্যা পরিস্থিতির কারণে ক্ষতিগ্রস্তদের সমস্ত রকম সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।


মঙ্গলবার রাত থেকে দক্ষিণ জেলায় বিভিন্ন এলাকায় অবিরাম বর্ষণ হয়েছে। তাতে, রাস্তাঘাট, ধানের জমি সমস্ত কিছুই জলের তলায় চলে গেছে। সকালে রাস্তায় হাটু জল ছিল। বিলোনিয়া শহরবাসীর দাবি, বহু বছর পর বিলোনিয়ায় এমন বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। সকালে মুহুরী নদীর জল বিপদসীমার খুব কাছাকাছি বইতে দেখা গেছে। তাছাড়া, ভারী বর্ষণ এবং ধস পরার কারণে বহু বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে প্রশাসনের তরফে জানা গিয়েছে।


এদিকে, পৃথক দুইটি স্থানে ধস পরে এক যুবকের মৃত্যু এবং দুই নাবালক গুরুতর আহত হয়েছেন। আজ সকালে বিলোনিয়া উত্তর সোনাইছড়ি দাস পাড়া এলাকায় বসতঘরে ধস পরে নারায়ণ ভৌমিকের ঘুমন্ত অবস্থায় মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। খবর পেয়ে দমকল কর্মীরা ঘটনাস্থলে ছুটে যান এবং স্থানীয় যুবকদের সহায়তায় প্রায় দুই ঘন্টার চেষ্টায় মৃতদেহ উদ্ধারে সক্ষম হন। দমকল কর্মীরা তাঁর মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য বিলোনিয়া হাসপাতালে নিয়ে যান। ময়না তদন্তের পর মৃতদেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। বিলোনিয়া মহকুমা শাসক মানিক লাল দাস জানান, মৃতের পরিবারকে সহায়তা বাবদ ততক্ষনাত ১০ হাজার নগদে এবং ১০ হাজার টাকা অনলাইনে দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে, বিলোনিয়া ঝড়ঝরি এলাকায় তিনটি বসতঘর ধস পরার কারণে মাটির নিচে চাপা পরে যায়। তাতে, রফিক মিয়ার দুই ছেলে রাসেল মিয়া(১২) এবং রহিম মিয়া(১১) ঘরের ভেতরে মাটি চাপা পরে যায়। স্থানীয় মানুষের সহায়তায় তাদেরকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। খবর পেয়ে দমকল ছুটে আসেন। কিন্ত, দমকল কর্মীরা আসার আগেই ওই দুই নাবালককে উদ্ধার করতে সক্ষম হন স্থানীয় মানুষ। তাদের চিকিত্সার জন্য বিলোনিয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আপাতত, তারা বিপদমুক্ত বলে চিকিত্সকরা জানিয়েছেন। বিলোনিয়া মহকুমা শাসক বলেন, ওই দুই নাবালকের চিকিত্সা বাবদ ৫০০০ টাকা তাদের বাবাকে দেওয়া হয়েছে।


মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব এক টুইট বার্তায় বলেন, দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলায় গতকাল মধ্য রাত থেকে মুষলধারে বৃষ্টিপাত হয়েছে। তাতে, পরিস্থিতি নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের সাথে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে এবং নজরদারি চলছে। ইতিমধ্যে উদ্ধার কার্যে কর্মীদের মোতায়েন করা হয়েছে। তিনি বলেন, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্থদের সমস্ত রকম সহায়তা করবে ত্রিপুরা সরকার। বিলোনিয়ার বিধায়ক অরুন চন্দ্র ভৌমিক জানিয়েছেন, ভারী বর্ষণে চারিদিকে জলমগ্ন হওয়ায় বহু মানুষ বাড়িঘরে বন্দী অবস্থায় রয়েছেন। এমন ২৮২ জনকে প্রশাসনের তরফে রান্না করা খাবার বিলি করা হয়েছে। বিলোনিয়া মহকুমা শাসক জানিয়েছেন, বিভিন্ন এলাকা থেকে জল নামতে শুরু করেছে। ফলে, তিনটি ত্রাণ শিবির খোলা হলেও একটি ত্রাণ শিবিরে এক পরিবারের ৪ জন আশ্রয় নিয়েছেন। এছাড়াও ক্ষয়ক্ষতি নিরুপনের কাজ চলছে। তিনি বলেন, ভারী বর্ষণে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রশাসনের তরফে সমস্ত সহায়তা দেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *