BRAKING NEWS

অশান্ত মেঘালয়, কেন্দ্রের কাছে পাঁচ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চাইলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, বেড়েছে কারফিউয়ের মেয়াদ

শিলং, ১৬ আগস্ট (হি.স.) : মেঘালয়ের পরিস্থিতি স্বাভিবিক করতে স্বরাষ্ট্র দফতরের কাছে অনন্ত পাঁচ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড কে সাংমা। রাজধানী শিলঙের আইন-শৃঙ্খলার দ্রুত অবনতি হচ্ছে। পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে কারফিউয়ের সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। পূর্ব খাসিপাহাড় জেলা সদর শিলং ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় গতকাল রাত আটটা থেকে জারি করা হয়েছিল কারফিউ। এরই মধ্যে গতকাল রাত প্রায় সাড়ে দশটা নাগাদ শিলং-চেরাপুঞ্জি সড়কের তিনমাইল এলাকায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড কে সাংমার ব্যক্তিগত বাসভবনে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করেছে কতিপয় দুষ্কৃতী। এতে মুখ্যমন্ত্রীর ব্যক্তিগত একটি গাড়ির ক্ষতি হয়েছে। তবে কোনও হতাহতের খবর নেই। তাছাড়া, মুখ্যমন্ত্রীও সে সময় তাঁরি নিজস্ব বাড়িতে ছিলেন না।

এ ঘটনার কিছুক্ষণ পর কারফিউ কবলিত রাজধানী শিলঙের মওলাই এলাকায় টহলদারি সিআরপিএফ-এর একটি গাড়িতে দুঃসাহসিক হামলা চালিয়েছে দুষ্কৃতকারীর আরেক দল। কতিপয় হামলাবাজ সিআরপিএফ জওয়ানদের গাড়িকে লক্ষ্য করে অবিরত পাথর ছুঁড়তে থাকে। উন্মত্ত জনতাকে নিয়ন্ত্ৰণ করতে সিআরপিএফ জওয়ানরা গাড়ি থেকে নেমে লাঠি চার্জ করে। পালিয়ে রক্ষা পায় দুর্বৃত্তের দল।


এদিকে গতরাতেই সেই মওলাই এলকার অন্য এক জায়গায় কতিপয় উন্মত্ত যুবক নাশকতার চেষ্টা করলে পুলিশ ও সিআরপিএফ প্রথমে লাঠিচার্জ এবং পরে শূন্যে গুলি চালাতে বাধ্য হয়েছে, জানা গেছে রাজ্য পুলিশের সদর দফতর সূত্রে।

‘হাইনেউত্রিপ ন্যাশনাল লিবারেশন কাউন্সিল’ (এইচএনএলসি) নামে মেঘালয়ের এক জঙ্গি সংগঠনের প্ৰাক্তন সাধারণ সম্পাদক চেস্টারফিল্ড থাংখিউ পুলিশের এনকাউন্টারে নিহত হওয়ার পর পূর্ব খাসিপাহাড় জেলা সদর শিলং ও পার্শ্ববর্তী এলাকা সহ সংলগ্ন তিনটি জেলায় বিক্ষিপ্ত নাশকতামূলক ঘটনা সংগঠিত হচ্ছে। টহলদারি পুলিশের দুটি গাড়ি ও বন্দুক ছিনতাই করা ছাড়াও গাড়ি দুটিতে অগ্নিসংযোগ এবং নানা স্থানে পাথরের ঢিল ছোঁড়া, সাধারণ নাগরিকদের যানবাহনে হামলা করছে একাংশ উন্মত্ত যুবক। এরই পরিপ্রক্ষিতে গতকাল রাত ৮:০০ থেকে শিলং সহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় প্রথমে ১৭ আগস্ট ভোর পর্যন্ত কারফিউ জারি করেছিল রাজ্য প্রশাসন। তবে পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় কারফিউয়ের মেয়াদ আরও একদিন বাড়ানো হয়েছে।


ঘটনার পরিপ্রক্ষিতে মেঘালয়ের পুলিশ-প্রধান (ডিজিপি) আর চন্দ্রনাথন হিন্দুস্থান সমাচার-কে জানান, পুলিশের এনকাউন্টারে নিহত বছর ৫৪-এর চেস্টারফিল্ড থাংখিউ এইচএনএলসি জঙ্গি সংগঠনের আমৃত্যু একজন কট্টর অলিখিত সদস্য ছিলেন। পুলিশের কাছে তার বিরুদ্ধ যথেষ্ট প্রামাণিক তথ্য মজুত আছে। গত ১০ তারিখ লাইটুমখ্রা বাজারে আইডি বিস্ফোরণের সঙ্গে সে সরাসরি জড়িত ছিল। এর আগে পূ্ৰ্ব জয়ন্তিয়াপাহাড় জেলা সদর পুলিশ রিজাৰ্ভের স্পেশাল পুলিশ ব্যারাকে আইইডি বিস্ফোরণের সঙ্গেও চেস্টারফিল্ডের নাম জড়িত। ওই বিস্ফোরণে কয়েকজন পুলিশ কর্মী জখম হয়েছিলেন।

ডিজিপি জানান, ১৯৮৭ সালে ভূমিষ্ঠ জঙ্গি সংগঠন এইচএনএলসি-র প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ছিল চেস্টারফিল্ড থাংখিউ। পরবর্তীতে ২০১৮ সালের ১৮ অক্টোবর রাজ্যের উপ-মুখ্যমন্ত্রী প্রিস্টন টিনসঙের সামনে অস্ত্রসংবরণ করে জাতীয় জীবনের মূলস্রোতে ফিরে এসেছিল চেস্টারফিল্ড। কিন্তু এটা ছিল তার নাটক। সমাজে বুক ফুলিয়ে ঘোরাফেরা করলেও গোপনে সে এইচএনএলসি-র সঙ্গে যোগসূত্ৰ বজায় রেখে নাশকতাজনিত কার্যকলাপ চালিয়ে যেতে নানা ছক কষত, বলেন পুলিশ-প্রধান (ডিজিপি) আর চন্দ্রনাথন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *