নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১০ আগস্ট।। রেগার কাজ না করিয়ে ভূয়া ল্যান্ড লেভেলিং দেখিয়ে কদমতলা ব্লকের কালা গাঙ্গের পার গ্রাম পঞ্চায়েতে ছয় নং ওয়ার্ডে টাকা আত্মসাৎ করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। আর্থিক নয়-ছয় অভিযোগ খোদ জমি মালিকের। এবার রেগার কাজে দুর্নীতির গুরুতর অভিযোগ উঠলো কদমতলা ব্লকাধীন কালাগাঙ্গের পার গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে।অভিযোগের তীর গ্রাম পঞ্চায়েতের পঞ্চায়েত সচিব এবং প্রধানের বিরুদ্ধে।
ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি উঠেছে।ঘটনার বিবরণে জানা যায়, উত্তর জেলার কদমতলা ব্লকাধীন কালাগাঙ্গের পার গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার জনৈক ওয়াব আলী নিজের পকেটের অর্থ ব্যয় করে নিজ বাড়িতে ডজার দিয়ে মাটি কাটান।কিন্তু স্হানীয় পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ এই কাজকে পঞ্চায়েতের ল্যান্ড লেভেলিং কাজ দেখিয়ে অর্থ আত্মসাথ করেছে বলে অভিযোগ।রেগা প্রকল্পে ভুয়া ল্যান্ড লেভেলিং এর কাজ দেখিয়ে অর্থ নয়ছয় নিয়ে কদমতলা ব্লকের বিডিও এর নিকট লিখিত ভাবে অভিযোগ জানালেও কদমতলা ব্লকের বিডিও এই ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেননি বলে অভিযোোগ। কালাগাঙ্গের পার গ্রাম পঞ্চায়েতে রেগা প্রকল্পের অর্থ নয়ছয়ের ঘটনা সামনে আসতেই গোটা এলাকা জুড়ে চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে।রাজ্যে বিজেপি জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হন। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হলেও নিচুঁ স্তরে এক শ্রেনীর নেতা এবং সরকারী কর্মচারী পরিকল্পনা মাফিক দুর্নীতিতে জড়িয়ে রাজ্য সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে।
স্হানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের ছয় নং ওয়ার্ডের জনৈক ওয়াব আলী অভিযোগ করে বলেন, বছর খানেক পূর্বে তার নিজ বাড়িতে ডজার দিয়ে তার টিলা ভূমি সমতল করেন। টিলা ভূমি সমতল করার কিছু দিন পর গ্রামের প্রধান ইসলাম উদ্দিন তার বাড়িতে এসে তাকে এই সমতল ভূমিতে আগর বাগানের পরার্মশ দেন এবং এই ব্যাপারে পঞ্চায়েত থেকে আর্থিক সহায়তারও আশ্বাস দেন। গ্রাম প্রধানের আশ্বাস মোতাবেক ওয়াব আলীর ব্যাঙ্ক একাউন্টে আঠারোশ টাকাও ঢুকেছে বলে গৃহস্থ ওহাব আলির বক্তব্য। এই টাকা ঢোকার কিছু দিন পর পঞ্চায়েত থেকে একটি সাইনবোর্ড তার সমতল করা জমিতে লাগানো হয়। কিন্তু পঞ্চায়েতের তরফ থেকে সাইনবোর্ডটি লিখতে আসলে ঝুলি থেকে বিড়াল বেরিয়ে আসে। ওহাব আলি তাদের কাছ থেকে জানতে পারেন তার নামে পঞ্চায়েত থেকে তার টিলা ভূমি সমতল করার ওয়ার্ক অর্ডার বের করে অর্থ আত্মসাৎ করেছে।যাতে ব্যায় হয়েছে ১লক্ষ ৬২ হাজার টাকা। এই সাইনবোর্ড দেখে জমির মালিকের চক্ষু চড়ক গাছ হয়ে যায়। জমির মালিক ওহাব আলি সাইনবোর্ডটি লিখতে না দিয়ে এ ব্যাপারে স্হানীয় পঞ্চায়েত প্রধান ও পঞ্চায়েত সচিবের কাছে গেলে তারা নানা তালবাহানা করে এড়িয়ে যান বলে অভিযোগ।
এই ব্যাপারে জমির মালিক ওয়াব আলী ৩০ জুলাই কদমতলা বিডিও কমল দেববর্মার নিকট লিখিত আভিযোগ করলেও এই ব্যাপারে সামান্যতম পদক্ষেপ গ্রহন করেনি বলে অভিযোগ করেন জমির মালিক। অথচ তার জায়গাতে ল্যান্ড লেভেলিং হয়েছে বলে ওয়ার্ক অর্ডার করা হয় এবং মাষ্টার রুলেও তা অন্তরভুক্ত করা হয়ে গেছে। এদিকে এই ব্যাপারে কালাগাঙ্গের পার পঞ্চায়েতের পঞ্চায়েত সচিব হিরণময় নাথকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান কোথায় কি কাজ হয়েছে ,কবে হয়েছে তা তিনি খোঁজ খবর না নিয়ে কিচ্ছূ বলতে পারবেন না বলে এড়িয়ে যান।সাথে গ্রাম প্রধান ইসলাম উদ্দিনকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করবেননা বলে জানিয়ে দেন।
অপরদিকে কালাগাঙ্গের পার পঞ্চায়েতে রেগা প্রকল্পের কাজ না করিয়ে অর্থ নয়ছয় এর খবর চাউর হতেই এলাকাতে তীব্র চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। এমনকি ৬ নং ওয়ার্ডের নির্বাচিত মেম্বার এই ঘটনাটি সম্পর্কে অবগত নন বলেও জানান। এলাকার জনগন দাবি তুলছেন এই ব্যাপারে সুষ্ঠ তদন্ত ও দোষী ব্যাক্তিদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের।