BRAKING NEWS

wife died three days after : স্বামীর আত্মহত্যার তিন দিনের মাথায় মৃত্যু হল স্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৪ জুলাই।। স্ত্রীর উপর প্রাণঘাতী হামলা চালিয়ে স্বামীর আত্মহত্যার তিন দিনের মাথায় মৃত্যু হল স্ত্রীর। ঘটনাকে কেন্দ্র করে কদমতলা থানাধীন হাপাই টিলা এলাকায় গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে। উত্তর ত্রিপুরা জেলার কদমতলা থানাধীন হাপাই টিলা এলাকায় স্ত্রীর উপর প্রাণঘাতী হামলা চালিয়ে স্বামী গুরু প্রসাদ শর্মা আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিল। আত্মহত্যার পর তিন দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল স্ত্রী। মৃত স্ত্রীর নাম পম্পি শর্মা (২৭)। ফলে মা বাবাকে হারিয়ে অনাথ দুটি শিশু। রাজ্য সরকার ও হৃদয়বান ব্যক্তিদের অনাথ দুই শিশুর পাশে দাঁড়ানোর আর্জি স্থানীয়দের। ঘটনা কদমতলা থানাধীন হাপাই টিলা এলাকায়।ঘটনার বিবরণে প্রকাশ,গত ২০ জুলাই মঙ্গলবার উত্তর জেলার কদমতলা থানাধীন দক্ষিণ কদমতলায় এক লোমহর্ষক ঘটনাটি সংঘটিত হয়। দক্ষিণ কদমতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের ৩ নং ওয়ার্ডের হাপাই টিলা এলাকার বাসিন্দা গুরু প্রসাদ শর্মা কাকভোরে স্ত্রী পম্পি শর্মার উপর রাগান্বিত হয়ে লোহার রড দিয়ে মাথায় আঘাত করেন।সাথে সাথে আধমরা অবস্থায় রক্তাক্ত হয়ে ঘরের মেঝেতে লুটিয়ে পড়ে পম্পি।

আশপাশের লোকজন দমকল অফিসে খবর দিলে দমকল কর্মীরা কদমতলা সামাজিক হাসপাতালে গুরুতর অবস্থায় পম্পি শর্মাকে নিয়ে যায়। পম্পি শর্মার মাথায় আঘাত এতটাই গুরুতর’ ছিল যে, কর্তব্যরত চিকিৎসক অবস্থা বেগতিক দেখে জেলা হাসপাতালে রেফার করেন।পরবর্তীতে জেলা হাসপাতাল থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় শিলচর নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসক। কিন্তু আর্থিক প্রতিকূলতার কারণে পম্পির শ্বশুরবাড়ির লোকজন আগরতলা জিবি হাসপাতালে তাকে নিয়ে যান। এদিকে স্ত্রীকে রক্তাক্ত অবস্থায় ঘরের মেঝেতে ফেলে রেখে স্বামী গুরু প্রসাদ শর্মা বাড়ির সামনের নিজ দোকান ঘরে ফাঁসি লাগিয়ে আত্মহত্যা করে। কদমতলা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে কদমতলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে ময়নাতদন্তের পর মৃতদেহ পরিবারের হাতে তুলে দেয় পুলিশ।জানা গেছে, মৃত গুরু প্রসাদ শর্মা বছর দশেক পূর্বে ভালোবেসে পাশের গ্রামের পম্পিকে বিয়ে করে। তারপর তাদের ঘর আলো করে একটি ছেলে ও কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। বর্তমানে ছেলেটির বয়স আট বছর ও মেয়েটি সবেমাত্র তিন বছরে পড়েছে। ঘরে অভিভাবক হিসেবে ছিলেন অসুস্থ বৃদ্ধ পিতা।ফাসি লেগে বাবা আত্মহত্যার পর ছেলেটি কিছুটা টের পেলেও তিন বছরের ছোট্ট মেয়েটি কিছুই বুঝতে পারেনি।সাথে মা মৃত্যুর সঙ্গে জিবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

জিবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পম্পির শারীরিক অবস্থা অবনতি ঘটতে থাকে। কিন্তু আর্থিক প্রতিকূলতার কারণে জিবি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে পারেনি পম্পি শর্মা। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় পম্পিকে নিয়ে আসা হয় হাপাই টিলা স্থিত স্বামীর বাড়িতে। কিন্তু যত সময় যেতে থাকে পম্পির অবস্থা ততটাই শোচনীয় রুপ ধারণ করতে থাকে। নিরুপায় হয়ে বৃহস্পতিবার দুপুর নাগাদ এলাকাবাসী সহযোগে আশঙ্কাজনক অবস্থায় পম্পিকে কদমতলা সামাজিক হাসপাতালে ভর্তি করান। কিন্তু নিয়তির নির্মম পরিহাস দুটি ছোট্ট শিশুকে রেখে অর্থের অভাবে এই পৃথিবীকে বিদায় জানাতে হয় পম্পির। বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক এগারোটা নাগাদ কদমতলা হাসপাতালেই মৃত্যু হয় পম্পির। তারপর হাসপাতালের তরফ থেকে মৃতদেহটি পম্পির পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। কদমতলা হাসপাতালের চিকিৎসক জানিয়েছেন, লোহার রড দিয়ে পম্পি শর্মার মাথায় আঘাত করে মাথার অধিকাংশ থেঁতলে দেওয়া হয়েছে।

মাথা ফেটে চৌচির হয়ে গিয়েছিল। অপরদিকে মা বাবাকে হারিয়ে অনাথ হয়ে পড়েছে ছোট ছোট ভাই বোন। যারা এখনো এই সংসারের হিংসা, স্বার্থ ,ন্যায় ,অন্যায় কিছুই বুঝে উঠতে পারলোনা।তার আগেই নিয়তি তাদের কাছ থেকে মা-বাবাকে কেড়ে নিলেন। বর্তমানে পরিবারটি অসহায় হয়ে পড়েছে। অসুস্থ দাদু আট বছরের নাতি ও তিন বছরের নাতনিকে কিভাবে লালন-পালন করবেন তা নিয়ে চরম উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। মানবিক দৃষ্টিতে রাজ্য সরকার পিতৃ-মাতৃ হারা অনাথ শিশু দুটির পাশে দাঁড়ানোর জুড়ালো আর্জি জানান স্হানীয় এলাকাবাসী।সাথে আবেদন করেন,যদি কোন হৃদয়বান ব্যক্তি শিশু দুটির পাশে দাঁড়ান তাহলে তাদের কোমল জীবনটি পূর্ণতা পাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *