নয়াদিল্লি ও আগরতলা, ১৩ জুলাই (হি. স.) : পূর্বোত্তরে সাপ্তাহিক সংক্রমনে শীর্ষে রয়েছে সিকিম। সর্বনিম্ন সংক্রমিত রাজ্য অসম। আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির কোভিড পরিস্থিতি পর্যালোচনায় এই তথ্য উঠে এসেছে। ক্রমান্বয়ে দেখা গেলে সিকিম ছাড়া মেঘালয়, মণিপুর এবং ত্রিপুরায় সাপ্তাহিক সংক্রমণের হার ৯ শতাংশের অধিক রয়েছে। এদিন প্রধানমন্ত্রী ওই চারটি রাজ্যে সংক্রমণের হার নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য সঠিক পদ্ধতি অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন। এক্ষেত্রে উদাহরণ হিসেবে তিনি অসমের কোভিড ব্যবস্থাপনা তুলে ধরে প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন, অসম সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে লকডাউনের পথে হাটেনি। বরং মাইক্রো কন্টেইনমেন্ট জোন গঠন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখেছে।
তথ্য বলছে, সিকিমে সাপ্তাহিক সংক্রমণের হার ২৪.৯৮ শতাংশ। তাত্পর্যের বিষয় হল ওই রাজ্যে পূর্বোত্তরের মধ্যে সবচেয়ে অধিক ৭৪ শতাংশ নমুনা পরীক্ষা আরটি-পিসিআর মাধ্যমে হচ্ছে। সিকিমে চারটি জেলায় ১০ শতাংশের অধিক সংক্রমণের হার দেখা গেছে। সে মোতাবেক পশ্চিম জেলায় ৪৭.১০ শতাংশ, পূর্ব জেলায় ২১.১৩ শতাংশ, দক্ষিণ জেলায় ১৮.০৪ শতাংশ এবং উত্তর জেলায় ১২.৬৪ শতাংশ সাপ্তাহিক সংক্রমণের হার রয়েছে। ওই রাজ্যে পূর্ব জেলায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে। এদিকে, ১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সী ৯৫ শতাংশ যোগ্য ব্যক্তির প্রথম ডোজটিকাকরণ সম্পন্ন হয়েছে।
পূর্বোত্তরে সাপ্তাহিক সংক্রমনে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে মেঘালয়। ওই রাজ্যে সাপ্তাহিক সংক্রমণের হার ১৪.৭৭ শতাংশ। রাজ্যে মাত্র ১১ শতাংশ নমুনা আরটি-পিসিআর মাধ্যমে পরীক্ষা করা হচ্ছে। মেঘালয়ে ৭টি জেলায় ১০ শতাংশের অধিক সংক্রমণের হার রয়েছে। তাতে, উত্তর গারো পাহাড় ৩১.৯৩ শতাংশ, রি ভৈ ২৯.৫৩ শতাংশ, পূর্ব খাসি পাহাড় ২০.৫৭ শতাংশ, দক্ষিণ গারো পাহাড় ১৬.৩১ শতাংশ, পশ্চিম জয়ন্তিয়া পাহাড় ১৪.৯৬ শতাংশ, পূর্ব জয়ন্তিয়া পাহাড় ১০.৯৬ শতাংশ এবং পশ্চিম খাসি পাহাড়ে ১০.৫৩ শতাংশ সংক্রমণের হার রয়েছে। ১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সী ৩৪ শতাংশ যোগ্য ব্যক্তির প্রথম ডোজ টিকাকরণ সম্পন্ন হয়েছে।
এদিকে, এই অঞ্চলে মণিপুর সাপ্তাহিক হারের নিরিখে তৃতীয় স্থানে রয়েছে। মণিপুরে সাপ্তাহিক সংক্রমণের হার ১৪.৬৯ শতাংশ। সারা রাজ্যে ১৯ শতাংশ নমুনা আরটি-পিসিআর মাধ্যমে পরীক্ষা করা হচ্ছে। ওই রাজ্যে ৮টি জেলায় সংক্রমণের ১০ শতাংশের অধিক পাওয়া গেছে। তাতে, তেংনৌপাল ৫৭.৩৯ শতাংশ, বিষ্ণুপুর ২৬.02 শতাংশ, কাকচিং ২১.৪৮ শতাংশ, থৌবাল ১৮.৯৯ শতাংশ, ইম্ফল পশ্চিম ১৮.৭৩ শতাংশ, ইম্ফল পূর্ব ১৬.৮২ শতাংশ, চুরাচান্দপুর ১৪.০৭ শতাংশ এবং কাংপকপি জেলায় ১১.৯২ শতাংশ সংক্রমণের হার রয়েছে। রাজ্যে ১৮ থকে ৪৪ বছর বয়সী ৪০ শতাংশ যোগ্য ব্যক্তির প্রথম ডোজ টিকাকরণ সম্পন্ন হয়েছে।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সাপ্তাহিক সংক্রমনে ত্রিপুরা চতুর্থ স্থানে রয়েছে। রাজ্যে ৯.৩৯ শতাংশ সাপ্তাহিক সংক্রমণের হার রয়েছে। মাত্র ২৮ শতাংশ নমুনা আরটি-পিসিআর মাধ্যমে পরীক্ষা করা হচ্ছে। ত্রিপুরায় তিনটি জেলায় সংক্রমণের হার ১০ শতাংশের অধিক রয়েছে। তাতে, খোয়াই জেলায় ২২.৫৪ শতাংশ, ঊনকোটি জেলায় ১৫.১৪ শতাংশ এবং ধলাই জেলায় ১১.৫৪ শতাংশ সংক্রমণের হার রয়েছে। রাজ্যে ১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সী ৭৪ শতাংশ যোগ্য ব্যক্তির টিকাকরণের প্রথম ডোজ সম্পন্ন হয়েছে।
মিজোরামে সাপ্তাহিক সংক্রমণের তুলনামূলক কম রয়েছে। ওই রাজ্যে সাপ্তাহিক সংক্রমণের হার ৮.১৫ শতাংশ। রাজ্যে ১৭ শতাংশ নমুনা আরটি-পিসিআর মাধ্যমে প্রক্ষা করা হচ্ছে। তিনটি জেলায় সংক্রমণের হার ১০ শতাংশের অধিক রয়েছে। তাতে, লবঙতলেই ২৮.৯ শতাংশ, লুংলেই ১৫.২১ শতাংশ এবং আইজল জেলায় ১১.২৭ শতাংশ সংক্রমণের হার রয়েছে। রাজ্যে ১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সী ৭৪ শতাংশ যোগ্য ব্যক্তির প্রথম ডোজ টিকাকরণ হয়েছে।
এদিকে, নাগাল্যান্ড-এ সাপ্তাহিক সংক্রমণের হার ৭.১৪ শতাংশ। রাজ্যে ৩৭ শতাংশ নমুনা আরটি-পিসিআর মাধ্যমে পরীক্ষা করা হচ্ছে। তিনটি জেলায় সংক্রমণের হার ১০ শতাংশের অধিক। লুনগ্লেং ২২.৫ শতাংশ, কোহিমা ১৮.৪৩ শতাংশ এবং তুইনসাং জেলায় ১৪.৭১ শতাংশ সংক্রমণের হার রয়েছে। ওই রাজ্যে ১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সী ৩০ শতাংশ যোগ্য ব্যক্তির টিকাকরণ হয়ে গেছে।
অরুনাচল প্রদেশে সাপ্তাহিক সংক্রমণের হার ৬.৭৪ শতাংশ। রাজ্যে মাত্র ৩ শতাংশ নমুনা আরটি-পিসিআর মাধ্যমে পরীক্ষা করা হচ্ছে। পাঁচটি জেলায় সংক্রমণের হার ১০ শতাংশের অধিক। কুরুং কুমেই ২১.৭১ শতাংশ, কামলে ১৫.৭৯ শতাংশ, পূর্ব সিয়াং ১৩.০৬ শতাংশ, দিবাং ভ্যালি ১২ শতাংশ এবং অন্জো জেলায় ১০.৩০ শতাংশ সংক্রমণের হার রয়েছে। ওই রাজ্যে ১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সী ৬১ শতাংশ যোগ্য ব্যক্তির টিকাকরণ হয়ে গেছে।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সবচেয়ে কম সাপ্তাহিক সংক্রমণের হার অসমে। অসমে সাপ্তাহিক সংক্রমণের হার ৪.৪১ শতাংশ। রাজ্যে ১২ শতাংশ নমুনা আরটি-পিসিআর মাধ্যমে পরীক্ষা করা হচ্ছে। চারটি জেলায় সংক্রমণের হার ১০ শতাংশের অধিক। ছারায়দেও ১৪.০১ শতাংশ, জোরহাট ১২.২৭ শতাংশ, লাখিমপুর ১০.১৫ শতাংশ এবং গোলাঘাট জেলায় ১০.০৮ শতাংশ সংক্রমণের হার রয়েছে। ওই রাজ্যে ১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সী ২৯ শতাংশ যোগ্য ব্যক্তির টিকাকরণ হয়ে গেছে। হিন্দুস্থান সমাচার\সন্দীপ