BRAKING NEWS

Trinamool attack Tripura : বেকারত্ব নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির তোপের জবাবে ত্রিপুরাকে নিশানা তৃণমূলের

আগরতলা/কলকাতা, ৩০ জুন (হি. স.) : বেকারত্ব নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল সরকার প্রধান বিরোধী দল বিজেপির তীব্র সমালোচনার জবাবে মুখ রক্ষায় নিশানা হিসেবে বেছে নিয়েছে ত্রিপুরাকে। আজ দিনভর টুইটারে ত্রিপুরায় বিজেপির শাসনে বেকারদের চরম দুর্দশা, এমনই ট্রুল করা হয়েছে। আশ্চর্যের বিষয়, তৃণমূল আইটি সেলের পাশাপাশি তারকেশ্বরের বিধায়কও ট্রলিং-এ মেতেছেন। অথচ জাতীয় রিপোর্ট ঘেঁটে দেখা যাচ্ছে, গত তিন বছরে পশ্চিমবঙ্গে বেকারত্ব বেড়েছে এবং ত্রিপুরায় কমেছে। এ-বিষয়ে বিজেপি ত্রিপুরা প্রদেশ মুখপাত্র নবেন্দু ভট্টাচার্য-র কটাক্ষ, ত্রিপুরায় সাম্রাজ্য বিস্তারে দিবা স্বপ্ন দেখছে তৃণমূল। কিন্ত, ত্রিপুরার জনগণ অতীত অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ। তাঁরা বিজেপি-র সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি হোক চাইছেন।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় ফেইসবুকে লেখেন, গত ১০ বছরে পশ্চিমবঙ্গে কতজন রাজ্য সরকারি চাকুরী পেয়েছেন বলতে পারেন? প্রাইমারি টেট থেকে শুরু করে এসএসসি সব কিছুর নিয়োগ বন্ধ। আর যদিও বা দু একটার মেরিট লিস্ট বেরিয়েছে তার সবটাই জালিয়াতিতে ভর্তি..!! চাকরির বদলে আমরা শুধু দেখেছি খেলা, মেলা, উৎসব….!!!

তিনি কটাক্ষের সুরে আরও লেখেন, আর বেসরকারি চাকরির জন্য কত হাজার লোক যে বাংলার বাইরে থাকেন অথবা থাকতে বাধ্য হন তা আমরা আগের বছর লকডাউনের সময় দেখেছি… মাননীয়ার অনুপ্রেরণায় এখানে শিল্প বলতে বোঝায় আলুর চপ…আর চাকরি বলতে শুধুই ঢপ..! এছাড়া এদানীং কালের নকল অফিসার, নকল ভ্যাকসিন ইত্যাদির মতো….(লিস্ট শেষ হবে না!!) নানারকমের ‘দুয়ারে দুর্নীতি’ প্রকল্প….!“

এদিকে আজ পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ চাকুরী নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিধেছেন। তিনি একটি ছবি পোস্ট দিয়ে বলেন, আমরা নৈরাজ্য এবং নেই রাজ্যে বসবাস করছি। চাকরি নেই, শিল্প নেই, যুবকদের ভবিষ্যৎ নেই। নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর মেধা তালিকাভুক্ত চাকরি প্রার্থীরা ১৫০ দিন ধরে নিজেদের প্রাণ বিপন্ন করে সল্টলেকের ফুটপাতে অবস্থান করছেন। চাকরি নেই, তাই তারা নিজেদের প্রাণের কথা ভুলে সুবিচারের আশায় বসে আছেন। মূলত, ওই ছবিতে আন্দোলনকারীদের পোস্টারে লেখা ছিল, আমরা নবম দশম ও একাদশ-দ্বাদশ স্তরের মেধাতালিকাভুক্ত বঞ্চিত অপেক্ষমাণ শিক্ষক শিক্ষিকা পদপ্রার্থী। আমরা সল্টলেকের ফুটপাতে বজ্রবিদ্যুৎ এর মাঝে ১৪৮দিন ধরে অবস্থান করছি। দিলীপ বাবু আরও লেখেন, রাজ্যে টাকার বিনিময়ে চাকরি দেওয়ার প্রবণতা তৈরি হওয়ার ফলে যোগ্য ব্যক্তিরা চাকরি থেকে বঞ্চিত এবং শাসক দলের ঘনিষ্ঠ অযোগ্যরা শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে ঢুকে রাজ্যের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে পঙ্গু করে দিচ্ছে।

এরপরই নড়েচড়ে বসে তৃণমূলের আইটি সেল। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির তোপের মোকাবিলায় ত্রিপুরা এবং গোটা দেশের অবস্থা নিয়ে টুইটারে ট্রলিং শুরু করেন তারা। টুইটারে ট্রুল চালানো হয়, ত্রিপুরায় বিজেপির শাসনে বেকারদের বড়ই দুর্দশা। বেকারত্বের হার ত্রিপুরায় জাতীয় গড়ের তুলনায় অনেক বেশি। বড় বড় কথা ছাড়া বিজেপি কিছুই দিতে পারেনা। এই বিজেপি অস্তিত্বহীন। বিজেপি থেকে মুক্ত হন এবং দেশ বাঁচান। এই একই বার্তা শতাধিক ব্যাক্তি পোস্ট দিয়েছেন। এমনকি তৃণমূলের তারকেশ্বর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক রমেন্দ্র সিনহা রায়-ও ওই একই পোস্ট দিয়েছেন।

অথচ, দেশের বেকারত্বের চিত্র ঘেঁটে দেখা যাচ্ছে, ২০১৮ সালে জানুয়ারী থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সমীক্ষায় ত্রিপুরায় বেকারত্বের হার ছিল ২৬.৯৬ শতাংশ। ওই সময় ত্রিপুরায় বিজেপি-আইপিএফটি জোট সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্ত তিন বছর বাদে আজ ত্রিপুরায় বেকারত্বের হার কমে দাড়িয়েছে ২০ শতাংশ। অথচ, ২০১৮ সালে জানুয়ারী থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সমীক্ষায় পশ্চিমবঙ্গে বেকারত্বের হার ছিল ১২.৫২ শতাংশ। বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে ১৯.৩ শতাংশ। ত্রিপুরা সরকারের তথ্য অনুসারে, রাজ্যে সরকার পরিবর্তন হওয়ার পর গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ৯৪৮১ জনের চাকুরী হয়েছে এবং ৩০৯৬টি নতুন পদ সৃষ্টি করেছে ত্রিপুরা সরকার। তেমনি, ত্রিপুরায় বর্তমানে বেকার রয়েছেন ১ লক্ষ ৯০ হাজার ২৮৭ জন। সম্প্রতি, ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব ঘোষণা দিয়েছেন, ১১ হাজার স্থায়ী চাকুরী প্রদানের প্রক্রিয়ায় রয়েছে রাজ্য সরকার।

এদিন ত্রিপুরা সম্পর্কে টুইটারে ট্রুল নিয়ে বিজেপি প্রদেশ মুখপাত্র নবেন্দু ভট্টাচার্য বলেন, রাজ্যে বেকারের সংখ্যা আগের তুলনায় অনেক কমেছে। তবে, সকলকে সরকারি চাকুরী দেওয়া সম্ভব নয়। তাই, ত্রিপুরা সরকার সকল বেকারদের স্বাবলম্বী করে তুলার প্রচেষ্টায় রয়েছে। সাথে প্রতিনিয়ত নিয়োগ জারি রেখেছে। তিনি বলেন, বাম জমানায় কর্মবিনিয়োগ দফতরে বেকারদের দীর্গ লাইনে দাড়িয়ে থাকতে দেখা যেত। এখন সেই পরিস্থিতিতে বদল এসেছে। তাঁর কটাক্ষ, তৃণমূল কংগ্রেস ত্রিপুরায় সাম্রাজ্য বিস্তারে দিবাস্বপ্ন দেখছে। এক্ষেত্রে কেউ তাঁদের স্বপ্ন দেখতে আটকাতে পারবে না। তবে, ত্রিপুরার জনগণ অতীত অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ। মানুষ বিজেপির সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করার জন্য তৈরী হচ্ছেন। তাঁদের মধ্যে ওই প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *