পুরশুড়া, ৪ এপ্রিল (হি.স.) : “গুজরাট বাংলা শাসন করবে, সেটা হতে দেব না। বাংলা বাংলাকেই শাসন করবে।” রবিবার হুগলির পুরশুড়ার জনসভা থেকে বিজেপিকে এ ভাবেই হুঁশিয়ারি দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিধানসভা ভোটের তৃতীয় দফার নির্বাচন আগামী ৬ এপ্রিল মঙ্গলবার। আজ রবিবার তৃতীয় দফা নির্বাচনের শেষ প্রচার। এদিন সকল থেকে তিনি হুগলি, হাওড়াসহ পাঁচটি জনসভা করেন। এদিন তিনি হুগলির পুরশুড়ার জনসভা থেকে বিজেপিকে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, নিজে না সরলে তাঁকে সরানো অত সহজ নয়।
তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিজেপি ভারতের জঘন্য রাজনৈতিক দল। তাদের কাজ একটাই, রোজ রোজ মিথ্যা কথা বলা, কুৎসা করা।” তাঁর কথায়, “দেশে এ রকম সরকার আগে কখনও দেখা যায়নি। এ রকম বাজে রাজনৈতিক দল দেখিনি। যারা ক্ষমতায় থেকে মানুষকে খুন করে।”নরেন্দ্র মোদীকে ‘বাজে প্রধানমন্ত্রী’ এবং অমিত শাহকে ‘বাজে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী’ বলেও আক্রমণ করেছেন মমতা। তাঁর বক্তব্যে এনআরসি, এনপিআর-এর প্রসঙ্গ উঠে এসেছে।
দিল্লি থেকে উত্তরপ্রদেশে এনসিআর-এর নামে বিজেপি ‘মানুষ খুন করেছে’ বলেও অভিযোগ তুলেছেন তিনি। বিজেপি-র স্লোগান ‘আসল পরিবর্তন’ নিয়েও কটাক্ষ করেছেন মমতা। তৃণমূলের জমানায় বাংলায় কোনও উন্নয়ন হয়নি। এই অভিযোগ বিভিন্ন জনসভা থেকে বারংবার তুলেছেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। খোদ প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মুখেও এ কথা শোনা গিয়েছে। সেই উন্নয়নের প্রসঙ্গ টেনেই বিজেপি-কে তুলোধোনা করেছেন মমতা। তাঁর কথায়, “বিজেপি বলছে বাংলায় নাকি উন্নয়ন হয়নি। তাই বাংলায় নাকি পরিবর্তন দরকার। আমি বলি, পরিবর্তন স্লোগানটা আমারই।” এর পরই তাঁর হুঁশিয়ারি, “আমি যত দিন নিজে না যাচ্ছি, আমাকে সরানো অত সহজ নয়, এটা জেনে রেখো বিজেপি দল।”
বাংলাকে গুজরাত বানানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূল নেত্রী। তবে বাংলাকে তিনি যে গুজরাত হতে দেবেন না পুরশুড়ার জনসভা থেকে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন তিনি। বলেন, “তোমরা যদি মনে করো গুজরাত বাংলা শাসন করবে, সেটা হতে দেব না। বাংলা বাংলাকেই শাসন করবে।” বিজপি-র বিরুদ্ধে ভোটে টাকা ছড়ানোর অভিযোগ তুলেছেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘আমার সরকার কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, পথশ্রী, কর্মশ্রী করেছে। কিন্তু বিজেপি মানুষ খুন করেছে।’’
জেলার আরামবাগ, খানাকুলে বন্যা পরিস্থিতি নিয়েও বিজেপি-র বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন মমতা। তবে তাঁর সরকার বন্যা নিয়ন্ত্রণে অনেক কাজ করেছে বলেও দাবি করেন মমতা। সিপিএমের আমলে ওই সব এলাকায় যে হাল হত, এখন সেই পরিস্থিতি হয় না বলে উল্লেখ করেন। তাঁকে না জানিয়েই ঝাড়খণ্ড থেকে জল ছাড়া হত বলেও অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূল নেত্রী। তিনি লড়াই করেছেন এর জন্য। বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে একটা ‘মাস্টারপ্ল্যান’ তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে বলেও তিনি জানিয়েছেন। আগামী দিন বন্যা নিয়ন্ত্রণ করার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে বলে দাবি করেছেন মমতা।