আগরতলা, ২৭ জানুয়ারি (হি. স.) : উস্কানিমূলক ভাষণ দিচ্ছিলেন আন্দোলনরত চাকুরিচ্যুত শিক্ষকরা। আইন-শৃঙ্খলার প্রশ্নে ১৪৪ ধারা জারি করা ছাড়া কোন উপায় ছিল না। তবে, পরিস্থিতি বিবেচনা করে আরো ৪৮ ঘন্টা বাড়ানো হচ্ছে ১৪৪ ধারা। বুধবার সন্ধ্যায় সাংবাদিক সম্মেলনে ত্রিপুরা পুলিশের উদ্বৃতি দিয়ে এ-কথা বলেন পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা শাসক ডাঃ শৈলেশ কুমার যাদব। তিনি জানান, আজ চাকুরিচ্যুত শিক্ষকদের আন্দোলন থামাতে গিয়ে ৮৭ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৭০ জন চাকুরিচ্যুত শিক্ষক এবং ১৭ জন পুলিশ কর্মী রয়েছেন। ওই ১৭ জন পুলিশ কর্মী-র মধ্যে ৬ জন মহিলা পুলিশ কর্মী রয়েছেন। পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা শাসক এদিন সাফ জানিয়েছেন, গোয়েন্দা রিপোর্টে আগামীকালও আন্দোলনরত চাকুরিচ্যুত শিক্ষকদের উৎশৃঙ্খল আচরণের সম্ভাবনা প্রবল। ফলে, জন নিরাপত্তায় কঠোর পদক্ষেপ নিতেই হবে।
এদিন পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা শাসক বলেন, আজ ভোরে প্রথমে মাইকিং করে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল পুর নিগম এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হচ্ছে। কিন্তু, সিটি সেন্টারের সামনে গণঅবস্থান মঞ্চে আন্দোলনরত চাকুরিচ্যুত শিক্ষকরা উঠে যাননি। তাই, পুলিশ তাদের আটক করেছে। তাঁর কথায়, ত্রিপুরা পুলিশের লিখিত রিপোর্টের ভিত্তিতে পুর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। তাতে, সাফ বলা হয়েছে, আন্দোলনকারী-রা ক্রমশ উগ্র আন্দোলন শুরু করার পরিকল্পনা নিচ্ছেন।
গোয়েন্দা রিপোর্ট সম্পর্কে এআইজি আইন-শৃঙ্খলা সুব্রত চক্রবর্তী বলেন, যৌথ মঞ্চের নেতৃবৃন্দ গত কয়েকদিন ধরেই উগ্র ভাষণ দিচ্ছিলেন। ২৬ জানুয়ারি সন্ধ্যায় মশাল মিছিলে তারা সমস্ত সীমা অতিক্রম করেছেন। তাঁরা ওই মিছিল থেকে উগ্র আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তাতে, আইন-শৃঙ্খলা ভঙ্গ হতে পারে বলেও স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন। সেই ভাষণের উপর ভিত্তি করেই জেলা শাসকের কাছে রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে, বলেন তিনি।
তাঁর কথায়, গত কয়েকদিন চাকুরিচ্যুত শিক্ষকদের নেতা বিজোড় কৃষ্ণ সাহা উস্কানিমূলক ভাষণ দিচ্ছিলেন। তাই, এদিন তাকে গ্রেফতার করা হবে। শুধু তাই নয়, আজ দিনভর আন্দোলনের নামে হিংস্রতার জন্য চাকুরিচ্যুত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ২টি মামলা রুজু হয়েছে।
এদিন জেলা শাসক জানিয়েছেন, আজকের ঘটনায় চাকুরিচ্যুত শিক্ষক-রা ৪টি গাড়ি ভাংচুর করেছে। এছাড়া একটি বাসেও তারা ভাংচুর করেছেন। ফলে পুলিশের কঠোর পদক্ষেপ নিতে হয়েছে। তাঁর কথায়, ১৪৪ ধারা জারি হওয়ার পর কোনভাবেই একাধিক মানুষের সমবেত হওয়া আইনত দণ্ডনীয়। আন্দোলনকারী-রা আইন নিজেরাই ভেঙেছেন। তাঁর দাবি, গোয়েন্দা রিপোর্টে সাফ বলা হয়েছে আগামীকালও তাঁরা হিংস্র আন্দোলনে রাস্তায় নামবেন। তাই, ১৪৪ ধারা আরও ৪৮ ঘন্টার জন্য সময়সীমা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
এদিনের ঘটনায় আহতদের সম্পর্কে আইজিএম হাসপাতালের মেডিকেল সুপারেনটিনডেন্ট বলেন, সকলেই সামান্য আঘাত পেয়েছেন। প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। শুধু ৯ জন-কে চিকিৎসকদের নজরদারিতে রাখা হয়েছে। তবে, তাঁদের অবস্থাও স্থিতিশীল বলে তিনি দাবি করেছেন।