নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৮ জানুয়ারি৷৷ কৃষি, পর্যটন ও পরিবহণ দপ্তরের মন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহরায় আজ ধর্মনগর কৃষক বন্ধ কেন্দ্র ও কৃষি আঞ্চলিক কার্যালয়ের দ্বারোদঘাটন করেন৷ উদ্বোধনের পর কৃষক বন্ধ কেন্দ্র ও কৃষি আঞ্চলিক কার্যালয় পরিদর্শন করেন৷
পরিদর্শনকালে কৃষক বন্ধ কেন্দ্রের যাবতীয় সুুযোগ সুুবিধার দিক কৃষিমন্ত্রী দেখেন এবং কৃষক বন্ধরা যাতে সার্বিক সুুযোগ সুুবিধা এখান থেকে পেতে পারেন এজন্য দপ্তরের আধিকারিকদের তিনি প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন৷ এরপর কৃষিমন্ত্রী ইচাইলালছড়ায় ১,০০০ মেট্রিক টন ক্ষমতাসম্পন্ন বীজাগারের দ্বারোদঘাটন করেন৷ বীজাগার হলে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উদ্বোধকের ভাষণে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ২০২২ সালের মধ্যে কৃষকের আয় দ্বিগুণ করার প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণাকে বাস্তবায়িত করার জন্য রাজ্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে৷ কৃষকদের আর্থিক অবস্থার উন্নতি করতে না পারলে দেশের উন্নতি হবে না৷
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মাননিধি যোজনায় রাজ্যে ২ লক্ষ ৩৫ হাজার কৃষক উপকৃত হয়েছেন৷ উত্তর জেলায় ১৬ হাজার ৮৯৯ জন কৃষক কিষাণ সম্মাননিধি যোজনায় উপকৃত হয়েছেন৷ তিনি বলেন, কৃষকদের আর্থসামাজিক জীবনমান উন্নয়নে কেসিসি কার্ডধারী ১ লক্ষ ৪৫ হাজার কৃৃষক প্রায় ৩০০ কোটি টাকা ঋণ পেয়েছেন৷ তিনি বলেন, কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে রাজ্য সরকার চলতি অর্থবছরে ২০ হাজার মেট্রিকটন ধান কৃষকদের কাছ থেকে কিনবে প্রতি কেজি ১৮ টাকা ৬৮ পয়সা দরে৷ ১,০০০ মেট্রিকটন ক্ষমতাসম্পন্ন বীজাগারের উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে উত্তর জেলার কৃষকগণ বিশেষভাবে উপকৃত হবেন বলে তিনি উল্লেখ করেন৷ উত্তর জেলায় ১৫ হাজার হেক্টর এলাকায় অর্গানিক পদ্ধতিতে চাষ হবে বলে তিনি জানান৷ রাজ্যের ৩৬টি কৃষি মহকুমায় কৃষক বন্ধ কেন্দ্র হবে বলে তিনি জানান৷
প্রধান অতিথির ভাষণে ত্রিপুরা বিধানসভার উপাধ্যক্ষ বিশ্ববন্ধ সেন বলেন, কৃষক বন্ধ কেন্দ্র ও বীজাগারের উদ্বোধনের মাধ্যমে কৃষকগণ উপকৃত হবেন৷ কৃষি ও কৃষক পরিবারের উন্নতি হলে দেশের উন্নতি হবে৷ শক্তিশালী ত্রিপুরা ও শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা হবে৷ উপাধ্যক্ষ আলোচনাকালে কি কি ভাবে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার কৃষকদের উপকার করছেন তা তুলে ধরেন৷ তিনি বলেন, কৃষকের আয় বাড়াতে রাজ্য সরকার ২০১৮ সালে প্রতি কেজি ১৭ টাকা ৬৫ পয়সা, ২০১৯ সালে ১৮ টাকা ১৫ পয়সা করে কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনেছে৷ ২০২১ সালে প্রতি কেজি ধান ১৮ টাকা ৬৮ পয়সা ধরে কৃষকের কাছ থেকে কেনা হবে বলে তিনি বলেন৷
উত্তর ত্রিপুরা জিলা পরিষদের সভাধিপতি ভবতোষ দাস বলেন, কৃষকদের আজ আনন্দের দিন৷ কৃষক বন্ধ কেন্দ্র, কৃষি আঞ্চলিক কার্যালয়, বীজাগার উদ্বোধনের ফলে কৃষকগণ বিশেষভাবে উপকৃত হবেন৷ কৃষি ও কৃষকের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাথে সাথে রাজ্য ও দেশ শক্তিশালী হবে বলে তিনি জানান৷ অনুষ্ঠানে বিশিষ্টদের মধ্যে আলোচনা করেন বিশিষ্ট সমাজসেবী মলিনা দেবনাথ৷ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জিলা পরিষদের কৃষি স্থায়ী কমিটির সভাপতি কাজল দাস৷ স্বাগত বক্তব্য রাখেন ক’ষি দপ্তরের অধিকর্তা ড. দেবপ্রসাদ সরকার৷ ধর্মনগর কৃষক বন্ধ ও কৃষি আঞ্চলিক কার্যালয় নির্মাণে প্রায় ৫৮ লক্ষ টাকা এবং ইচাইলালছড়ায় ১,০০০ মেট্রিকটন বীজাগার নির্মাণে ১ কোটি ১৪ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নির্বাহী বাস্তুকার জানিয়েছেন৷ অনুষ্ঠানে বিশিষ্টদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জিলা পরিষদের সহকারি সভাধিপতি বিশ্বজিৎ ঘোষ, কালাছড়া পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান টিংকু শর্মা, কদমতলা পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান সুুবত দেব, বিশিষ্ট সমাজসেবী সুুদীপ দেব, লিপিকা দেবনাথ, বৃন্দাবন নাথ ও তম্বী সিনহা প্রমুখ৷