BRAKING NEWS

মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সরকার অগ্রাধিকার দিয়েছে : মুখ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩ জানুয়ারি৷৷ রাজ্যের বিকাশ ও মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সরকার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে৷ আত্মনির্ভর ত্রিপুরা গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার৷ রাজ্যের পূর্বতন সরকার এই বিষয়ে কোন উদ্যোগই নেয়নি৷ নতুন সরকার ক্ষমতায় এসে রাজ্যের সার্বিক উন্নয়নের পাশাপাশি মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সরকার অগ্রাধিকার দিয়েছে৷ বেকার যুবক-যূবতীদের স্বরোজগারী করে তুলতে সরকার বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়েছে৷ আজ ঊনকোটি জেলার কুমারঘাট মহকুমার ফটিকরায় প্রাথমিক কৃষি সমবায়ের সমিতি লিমিটেডের নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত এক সমাবেশে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব একথা বলেন৷


ফটিকরায় তহশীল ময়দানে আয়োজিত এই সমাবেশে ফটিকরায় দ্বাদশ শ্রেণী বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের বাই সাইকেল বিতরণ, আয়ুমান ভারত প্রকল্পে ই-কার্ড বিতরণ, মুখ্যমন্ত্রী স্বনির্ভর যোজনায় বীমার প্রিমিয়াম বিতরণ, কগুষকদের মধ্যে কৃষি যন্ত্রপাতি বিতরণ ও জাতীয় পুরস্কারে ভূষিত কৃষক প্রবেশ দেববর্মাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়৷ সমাবেশ মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক সুুধাংশু দাস, বিধায়ক ভগবান দাস, বিধায়ক রামপদ জমাতিয়া, ঊনকোটি জিলা পরিষদের সভাধিপতি অমলেন্দ দাস, কুমারঘাট পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান হ্যাপি দাস, জিলা পরিষদের সদস্য নীলকান্ত সিনহা৷


মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব আজ কুমারঘাট মহকুমার ফটিকরায় সফরে এসে ফটিকরায় প্রাথমিক ক’ষি সমবায় সমিতি লিমিটেডের নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধন করেন৷ ৯০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ফটিকরায় প্রাথমিক কৃষি সমবায়ের সমিতি লিমিটেডের নবনির্মিত ভবনে ২৫টি কক্ষ রয়েছে৷ এই কক্ষগুলিতে আগামীদিনে বেকার স্বউদ্যোগী যুবকদের ব্যবসার জন্য খুলে দেওয়া হবে৷ সমাবেশ মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী সবরী কলা চাষে অসামান্য অবদানের জন্য সম্পতি ভারতীয় ক’ষি গবেষণা পর্ষৎ থেকে জাতীয় পুরস্কারে ভূষিত জেলার ঊনকোটি ভিলেজের চিনিবাগানের প্রবেশ দেববর্মার হাতে দিল্লী থেকে প্রেরিত পুরস্কার, মারক ও শাল তুলে দেন৷ তাছাড়া মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব এদিন ৩ জনের হাতে আয়ুমান ভারত প্রকল্পের ই-কার্ড, ৪ জন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর হাতে মুখ্যমন্ত্রী স্বনির্ভর যোজনায় বীমার প্রিমিয়াম সংক্রান্ত কাগজপত্র, কৃষকদের হাতে পাওয়ারটিলার, ধান কাটার মেশিন, ধান মাড়াইয়ের মেশিন সহ কৃষি সহায়ক অন্যান্য যন্ত্রপাতি ও পাঁচ জন নবম শ্রেণীর ছাত্রীর হাতে বাই সাইকেল তুলে দেন৷


সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেন, সরকারের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মানুষের যে জমায়েত হচ্ছে তাতে মায়েদের উপস্থিতি জানান দিচ্ছে রাজ্য এগিয়ে যাচ্ছে৷ এখানেও মায়েদের উপস্থিতি লক্ষ্যনীয়৷ তিনি বলেন, রাজ্যে নতুন সরকার প্রতিষ্ঠার আগে পূর্বতন সরকার এই অঞ্চলের উন্নয়নে কোন কাজ করেনি৷ এমনকি নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুুবিধাগুলি থেকেও মানুষকে বি’ত রাখা হয়েছিল৷ এখন রাজ্যের কৃষকগণ প্রধানমন্ত্রী কৃষি সম্মান নিধি যোজনায় বছরে ছয় হাজার টাকা, প্রধানমন্ত্রী উজ্জলা যোজনায় মহিলা সুুবিধাভোগীদের বিনামূল্যে গ্যাস সংযোগ, সৌভাগ্য যোজনায় বিদ্যৎ সংযোগ, অটল জলধারায় পানীয়জলের সংযোগ পাচ্ছেন৷ কেন্দ্রীয় সরকারের ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্পগুলির সুুবিধা রাজ্যের অন্তিম মানুষের কাছে সরকার পৌঁছে দিচ্ছে৷
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের সহায়তায় রাজ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থায় অভূতপূর্ব উন্নয়নের ফলে উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির মধ্যে ত্রিপুরা এখন ব্যবসা বাণিজ্যের প্রধান কেন্দ্র হতে চলেছে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পর্যটন শিল্প রোজগার বাড়াতে সহায়ক তাই রাজ্যের পর্যটন ক্ষেত্রগুলিকে আকর্ষণীয় করে তোলা হচ্ছে৷ ফটিকরায়ের সন্নিকটে বিলাসপুরের বিশাল জলাশয়কে কেন্দ্র করে একটি পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার উদ্যোগ নেবে সরকার৷ মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব সমাবেশে ফটিকরায়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা, মোটরস্ট্যাণ্ড, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, কমিউনিটি শৌচালয়, বিদ্যৎ সংযোগ, পানীয়জলের উন্নয়ন, বীজ, তিনটি বিদ্যালয়কে ইংলিশ মিডিয়াম সুকলে রূপান্তর, মুখ্যমন্ত্রী সফল বীমা যোজনায় ৩,৫২৯ জন ক’ষকের অন্তর্ভুক্তি সহ যে সকলে ক্ষেত্রে উন্নয়ন হয়েছে তা তুলে ধরেন৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই সরকার আসার পর আড়াই বছরে মানুষের গড় আয় ২৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে৷


মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেন, উত্তর ও ঊনকোটি জেলায় বড় মাত্রায় আগর গাছ রয়েছে৷ কিন্তু পূর্বতন সরকার আগর গাছকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়িক ভিত্তিক রোজগার বাড়াবার কোন উদ্যোগ নেয়নি৷ নতুন সরকার ত্রিপুরায় আসার পর আগর গাছচাষের উপর গুরুত্ব দিয়েছে৷ বিদেশে আগর গাছের চাহিদা রয়েছে৷ আগর গাছ চাষ থেকে আগামীদিনে রোজগারের বড় সম্ভাবনা রয়েছে৷ রাজ্যের বিকাশে সরকার আগর চাষের উপর অগ্রাধিকার দিয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্য এখন নতুন দিশায়, নতুন মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে চলেছে৷ যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রভূত উন্নয়নের ফলে ত্রিপুরা এখন বিকাশের পথে হাঁটছে৷ আগামীদিনে জলপথে চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে পাড়ি দেবে ত্রিপুরার আনারস, লেবু সহ কৃষিজাত ফসল৷ মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, সাবমে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে উঠছে৷ সেখান থেকে আগামীদিনে আড়াই হাজার মানুষের রোজগারের সুুযোগ তৈরি হবে৷ রাজ্যের বাঁশ বেতের সামগ্রীর বাজার রয়েছে দেশ বিদেশে৷ সেদিকে লক্ষ্য রেখে সরকার এসব ক্ষেত্রে যারা যুক্ত রয়েছেন তাদের রোজগার বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে৷ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিধায়ক সুুধাংশু দাস৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *