রেলের উন্নয়নে সর্বদা ভারতকেই পাশে চায় বাংলাদেশ : রেলপথ মন্ত্রী

কিশোর সরকার
ঢাকা, ৭ ডিসেম্বর (হি.স.): বাংলাদেশ রেলের অনেক কিছুর সঙ্গেই ভারতীয় রেলের সাদৃশ্য রয়েছে। তাই রেলের উন্নয়নে সর্বদা ভারতকেই পাশে চায় বাংলাদেশ। বহুভাষী সংবাদ সংস্থা ‘হিন্দুস্থান সমাচার’-এর সঙ্গে বিশেষ সাক্ষাৎকারে এমনই জানিয়েছেন বাংলাদেশের রেলপথ মন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন। একইসঙ্গে রেলপথ মন্ত্রী জানিয়েছেন, আগামী ১৭ ডিসেম্বর চিলহাটি-হলদিবাড়ি রেল লাইনের উদ্বোধন হতে চলেছে। বাংলাদেশ রেলের প্রগতি, যমুনা নদীর উপরে বঙ্গবন্ধু রেল সেতুর কাজের উদ্বোধন, কোচ স্বল্পতার কারণে রেল চলাচল ব্যহত হওয়া প্রভৃতি বিষয়ে হিন্দুস্থান সমাচার-এর বাংলাদেশের প্রতিনিধি কিশোর সরকারকে বিশেষ স্বাক্ষাৎকার দিয়েছেন রেলপথ মন্ত্রী। ভারতের সীমান্ত লাগোয়া, বাংলাদেশের পঞ্চগড়ের এমপি (সাংসদ) রেলপথ মন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন বাংলাদেশের রেল যোগাযোগের ক্ষেত্রে ভারত কীভাবে সহযোগিতা করতে পারে সে বিষয় তুলে ধরেছেন।


হিন্দুস্থান সমাচার: বাংলাদেশ রেলের উন্নয়নে ভারত কীভাবে সাহায্য করতে পারে?

রেলপথ মন্ত্রী : বাংলাদেশের সকল রেলপথ মিটারগেজ থেকে ব্রডগেজে উন্নিত করা হচ্ছে। বাংলাদেশ রেলের অনেক কিছুর সঙ্গেই ভারতীয় রেলের সাদৃশ্য রয়েছে। ভারতের রেলওয়ের লোকোমোটিভ, কোচ-সহ সবকিছুই বাংলাদেশের রেল ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তাই ভারত চাইলে অনেকক্ষত্রেই বাংলাদেশকে বেশী সহযোগিতা করতে পারবে। এরইমধ্যে অনুদান হিসেবে ১০টি ব্রডগেজ লোকোমোটিভ অনুদান হিসেবে দিয়েছে। ২০১০ সাল থেকে এ পর্যন্ত ভারতের লাইন অব ক্রেডিটের (এলওসি) আওতায় বেশ কিছু প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে এবং কিছু প্রকল্পের কাজ এখনও চলছে। তাই রেলের উন্নয়নে ভারতকেই পাশে চায় বাংলাদেশ।


হিন্দুস্থান সমাচার: কোচ সঙ্কট মেটাতে ভারত থেকে কোচ সংগ্রহের কী পরিকল্পনা রয়েছে?  

বাংলাদেশ রেলপথ মন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন

রেলপথ মন্ত্রী: বেশ কিছু মিটার গেজ কোচ চিন, ইন্দোনেশিয়া ও কোরিয়া থেকে আসার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। তবে, ব্রডগেজ কোচের সঙ্কট রয়েছে। যে কারণে উত্তরবঙ্গের অনেক ট্রেন পুরানো কোচ দিয়েই চালাতে হচ্ছে। কিন্তু, ঋণের মাধ্যমে বা অনুদানের ভিত্তিতে ভারত থেকে কোচ সংগ্রহের প্রস্তাব এখনও আসেনি। আর এ সব বিষয় সাধারণত দু’দেশের প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ে ঠিক হয়। এছাড়া যে দেশ সরবরাহ করে সাধারণত তাঁদের পক্ষ থেকেই প্রস্তাব আসে। ভারতের দিক থেকে সেই ধরণের কোনও প্রস্তাব এখনও পর্যন্ত আসেনি।    

হিন্দুস্থান সমাচার : চিলহাটি-হলদিবাড়ি রেল লাইনের উদ্বোধন কবে হবে?

রেলপথ মন্ত্রী : কোভিড পরিস্থিতির কারণে আগামী ১৭ ডিসেম্বর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ভারত, দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী মালবাহী ট্রেন চলাচল উদ্বোধন করবেন। তবে আগামী বছর এই রুটে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের পরিবল্পনা রয়েছে। 


হিন্দুস্থান সমাচার: যমুনা নদীর উপরে বঙ্গবন্ধু রেল সেতু ভারতের পূর্ব-পশ্চিম যোগাযোগে কতটা ভুমিকা রাখবে?

রেলপথ মন্ত্রী: বর্তমানে বঙ্গবন্ধু সেতুর উপর দিয়ে প্রতিদিন ২২টি ট্রেন চলাচল করে। তবে, সেতুর ভারবহন ক্ষমতা কম হওয়ায় বাংলাদেশের আভ্যন্তরীন রুটের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে ট্রেন চলাচলই ঠিক ভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না। ভারত থেকে ট্রেনে পণ্য এনে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পারে নামানো হচ্ছে। এই সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হলে শুধু দেশের ভিতরে নয় ভারতের পূর্ব-পশ্চিম যোগাযোগে বিরাট ভুমিকা রাখবে। এখন বঙ্গবন্ধু সেতুর উপর দিয়ে ঘন্টায় ২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চালাতে হয়। কিন্তু, যমুনা নদীর উপরের বঙ্গবন্ধু রেল সেতুর উপর দিয়ে ঘন্টায় একশো কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চালানো যাবে। আর ডাবল লাইন হওয়ায় রেল ব্যবস্থাপনায় আমুল পরিবর্তন আসবে। যার সুফল বাংলাদেশে জনগণের পাশাপাশি ভারতের নাগরিকরাও পাবেন।