BRAKING NEWS

নাগরোটার ঘটনায় পাক হাইকমিশনারকে ডেকে পাঠাল নয়াদিল্লি

নয়াদিল্লি, ২১ নভেম্বর(হি.স.): জম্মু-কাশ্মীরের নাগরোটা ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে নিয়ে পাক হাইকমিশনারকে শনিবার ডেকে পাঠাল নয়াদিল্লি। সূত্রের খবর, সীমান্তে সন্ত্রাস নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে ভারত দাবি জানিয়েছে, জঙ্গিদের মদত দেওয়া বন্ধ করুক পাকিস্তান। সঙ্গে স্পষ্ট  বার্তা দিয়েছে, দেশের নিরাপত্তাকে সুরক্ষিত রাখতে যা যা পদক্ষেপ করা প্রয়োজন ভারত তাই করবে।  

সামনেই মুম্বই হামলার বর্ষপূর্তি। আবারও ২৬/১১ স্মৃতি উস্কাতেই নিহত জঙ্গিদের এদেশে পাঠান হয়েছিল বলে গোয়েন্দাদের প্রাথমিক রিপোর্টে উঠে আসছে। জম্মুর নাগরোটায় এনকাউন্টারে নিহত সন্ত্রাসীদের পাকিস্তানের সংযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে। নাগরোটা এনকাউন্টারে নিহত সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া জিনিস থেকে সীমান্তের ওপারের  সংযোগ প্রকাশ পেয়েছে। বলা হচ্ছে যে সন্ত্রাসীরা পাকিস্তানে বসা জইশ-ই-মহম্মদ -এর অপারেশনাল কম্যান্ডার মুফতি রউফ আসগর  ও কারি জারার -এর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছিল । আর ফতি আসগর হল জইশ প্রধান, রাষ্ট্রসঙ্ঘের তালিকাভুক্ত আন্তর্জাতিক জঙ্গি মাসুদ আজহারের ছোট ভাই। এনকাউন্টারে নিহত সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে পাকিস্তানি সংস্থার একটি ডিজিটাল মোবাইল রেডিও (ডিএমআর) উদ্ধার করা হয়েছে। সূত্রের খবর,  সন্ত্রাসীরা পাকিস্তানে থাকা মূলচক্রীগের সাথে কী কথা বলছিল, তা উদ্ধার হওয়া ডিএমআর থেকে পাওয়া গেছে। সন্ত্রাসীদের ডিএমআরে বার্তা দেওয়া হয়েছিল কোথায় পৌঁছাতে হবে তা জানতে। নিহতদের মোবাইল ফোন ও জিপিএস ঘেঁটে এ বিষয়ে তদন্তকারীরা নিশ্চিত হয়েছেন।

এদিকে, শনিবারই ভারতীয় গোয়েন্দা সূত্রে দাবি করা হয়, নিহত জইশ জঙ্গিদের কাছ থেকে যে ফোন, ওষুধ এবং বেশি কিছু জিনিস উদ্ধার হয়েছে, তা থেকে স্পষ্ট যে জঙ্গিরা পাকিস্তানেরই। গোয়েন্দারা আরও জানিয়েছেন, জঙ্গিদের কাছ থেকে যে স্মার্টফোন উদ্ধার হয়েছে তা পাকিস্তানের সংস্থা ‘কিউ মোবাইল’-এর। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া ওষুধ এবং জুতোও পাকিস্তানে তৈরি। জঙ্গিরা যে পাকিস্তানের তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া জিনিসগুলো এই দাবিকে আরও জোরালো করছে বলেই মত গোয়েন্দাদের। গোয়েন্দারা আরও জানিয়েছেন, জঙ্গিদের কাছ থেকে যে স্মার্টফোন উদ্ধার হয়েছে তা পাকিস্তানের সংস্থা ‘কিউ মোবাইল’ ।

এরপরই জম্মু-কাশ্মীরের নাগরোটা ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে নিয়ে পাক হাইকমিশনারকে ডেকে পাঠাল নয়াদিল্লি। সূত্রের খবর, সীমান্তে সন্ত্রাস নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে ভারত দাবি জানিয়েছে, জঙ্গিদের মদত দেওয়া বন্ধ করুক পাকিস্তান। সঙ্গে স্পষ্ট  বার্তা দিয়েছে, দেশের নিরাপত্তাকে সুরক্ষিত রাখতে যা যা পদক্ষেপ করা প্রয়োজন ভারত তাই করবে।  

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার গোয়েন্দাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে নাগরোটার কাছে বান টোল প্লাজায় একটি ট্রাক থামান জওয়ানরা। কাশ্মীরে স্থানীয় ডিডিসি নির্বাচনের আগে জঙ্গিরা বড় আক্রমণ করতে পারে, সেরকম খবর ছিল নিরাপত্তাবাহিনীর কাছে। সেই অনুযায়ী ট্রাকটিকে আটকানো হয়েছিল। কিন্তু  সঙ্গে সঙ্গেই ট্রাকের ভিতর থেকে গুলি চালানো শুরু হয়। নিরাপত্তাবাহিনীর পাল্টা গুলিতে নিহত হয় চার জইশ জঙ্গির। তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণে অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করা হয়। এবার তদন্ত নেমে জানা গেল ২০০৮-এর ২৬ নভেম্বর মুম্বই হানা যেমন হয়েছিল, সেই দিনেই বড়সড় আক্রমণের ছক ছিল এই জঙ্গিদের। সেটাকে থামাতে পেরে বড় সাফল্য পেল জম্মু-কাশ্মীরের পুলিশ ও সিআরপিএফ।

বস্তুত শুক্রবার, নাগরোটার এই ঘটনার পরই জরুরি ভিত্তিতে নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মোদী বলেন, “সেনাদের সাহসিকতার জন্যই জম্মু-কাশ্মীরে তৃণমূল স্তরে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার উপর আঘাত রুখে দেওয়া সম্ভব হয়েছে।”

এদিকে, ভারত-পাক সীমান্তে নিয়ন্ত্রণরেখায় পাক সেনাদের অশান্তি বর্তমান। জম্মু-কাশ্মীরের রাজৌরিতে এদিন সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করে পাক সেনা। যাতে এক জওয়ানের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। গত কয়েকদিন ধরেই পাক সেনা লাগাতার সংঘর্ষ বিরতি লঙ্ঘন করে চলেছে। গত বুধবারই পুঞ্চে দু’বার সংঘর্ষ বিরতির অভিযোগ উঠেছিল পাক আর্মির বিরুদ্ধে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *