পাটনা, ১০ নভেম্বর (হি. স.): পূর্ব ভারতের অতি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য বিহারে অভূতপূর্ব ফল বিজেপির। সব হিসেব নিকেশ উল্টে এই রাজ্যে এগিয়ে এনডিএ জোট । অন্যদিকে ভালো লড়াই দিয়েছে আরজেডি ।
বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটকে যে জোর টক্কর দিতে পেরেছে আরজেডি তা স্পষ্ট করে দিলেন মনোজ ঝা। মঙ্গলবার আরজেডির রাজ্যসভার সাংসদ মনোজ ঝা জানিয়েছেন, সংখ্যাতত্ত্বের নিরিখে খুব কাছাকাছি। পার্থক্যটাও খুব কম। কিন্তু অন্যদের তুলনায় আরজে ডির স্ট্রাইকরেট খুব ভালো। জেডিইউ- বিজেপি নেতারা এখন মুখ্যমন্ত্রী বাসভবনে বসে রয়েছেন। এই সকল নেতাদের কাছে এবং প্রশাসনের কাছে অনুরোধ যে প্রশাসনের ভূমিকা নিরপেক্ষ হওয়া উচিত।জয়ী বিধায়কদের মানপত্র সরবরাহ করতে দেরি করা হচ্ছে। ওই প্রার্থীদের কোনো কথা শোনা হচ্ছে না। এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মনোজ ঝা প্রথমেই ভিকট্রি সাইন দেখাতে থাকেন। এক সাংবাদিকের উত্তরে তিনি জানিয়েছেন, আরজেডি নেতৃত্বাধীন মহাজোটের বিহারে ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা ২০০ শতাংশ। নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে এখনো পর্যন্ত ৯২টি আসনের পূর্ণাঙ্গ ফল ঘোষণা করা হয়েছে। এরমধ্যে বিজেপি ২৮, আরজেডি ২৫, জেডিইউ ১৭, কংগ্রেস ৭, সি পি আই এম এল ৬, বিকাশশীল ইনসান পার্টি ২, এআইএমআইএম ২, সি পি আই ১, সিপিআইএম ১, হাম(এস) ১, নির্দল ১ আসনে জয়যুক্ত হয়েছে। সার্বিকভাবে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এন ডি এ জোট এগিয়ে রয়েছে ১২৬, আরজেডি নেতৃত্বাধীন মহাজোট এগিয়ে ১১০।
কমিশনের তরফে আরও জানানো হয়েছে রাত আটটা পর্যন্ত ৩.৪০ কোটি ভোট গণনা করা হয়েছে। সব মিলিয়ে বিহারে ভোট পড়েছিল ৪.১০ কোটি। ইতিমধ্যে নির্বাচনে জিতে গিয়েছেন আরজেডি প্রার্থী তেজ প্রতাপ যাদব, হিন্দুস্থান আওয়াম মোর্চা (সেকুলার) প্রার্থী জিতেন রাম মাঝি। বিকেল ছটার সময় কমিশনের তরফ থেকে জানানো হয়েছিল দুই-তৃতীয়াংশ ভোট গনা হয়ে গিয়েছে। এদিন সন্ধ্যার দিকে রাজ্যের জেডিইউ সুপ্রিমো তথা বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের বাড়িতে গেলেন বিজেপি নেতা সুশীল কুমার মোদী এবং মঙ্গল পান্ডে। এর আগে এদিন দুপুরের দিকে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দলের রাজ্যসভার সাংসদ মনোজ ঝাঁ জানিয়েছেন, বিহার তার নিজের সরকার পেতে চলেছে। কেউ তাকে আটকাতে পারবে না। রাজ্যের বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ রিটার্নিং আধিকারিকদের ভোট গণনা প্রক্রিয়া ধীরে করার নির্দেশ দেবেন না। এতে করে আপনি আপনার পরাজয় দেরি করে দিচ্ছেন। বিজেপিকে জোজোর টক্কর দিতে পেরেছে আরজেডি সেটা দলের মনোভাব থেকে স্পষ্ট। দলীয় টুইট বার্তায় দলটি দাবি করেছে যে দলের সমস্ত প্রার্থী এবং কর্মীদের সঙ্গে ক্রমাগত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। প্রতিটি জেলার থেকে খবর আসছে। পরিস্থিতি আমাদের পক্ষে রয়েছে। আজ, মঙ্গলবার মধ্যরাত পর্যন্ত গণনা চলবে। আমরা নিশ্চিত মহাজোট সরকার গড়বে। বিহার পরিবর্তন ঘটিয়ে দিয়েছে। গণনা না হওয়া পর্যন্ত প্রার্থী এবং কর্মীরা যেন গণনাকেন্দ্র ত্যাগ না করে।
এদিকে হিন্দুস্থান আওয়াম মোর্চা (সেকুলার) নেতা জিতেন রাম মাঝি ইমামগঞ্জ কেন্দ্র থেকে জয় যুক্ত হয়েছেন। তিনি তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দী উদয় নারায়ন চৌধুরীকে পরাস্ত করেছেন। অন্যদিকে হাসানপুর কেন্দ্র থেকে জয়যুক্ত হয়েছেন আরজেডি নেতা তেজ প্রতাপ যাদব। তিনি তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি রাজ কুমার রায়কে পরাজিত করেছেন। বৈশালী জেলার মহুয়া বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক ছিলেন তেজ প্রতাপ সেখান থেকে নিজের আসন পরিবর্তন করে হাসানপুর কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এবার। এই কেন্দ্রে অর্থাৎ হাসানপুর মুসলিম এবং যাদব ভোট তার পকেটে গিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। এখনো যা পরিস্থিতি তাতে এগিয়ে রয়েছে এনডিএ জোট। কিন্তু নির্ণায়ক হয়ে দেখা দিতে পারে বিএসপি এবং আসাদউদ্দিন ওয়েইসির দল। কংগ্রেসের তরফ থেকে ইভিএম কারসাজির অভিযোগ তোলা হয়েছিল কিন্তু তা খারিজ করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।