যাঁরা কোভিড থেকে সেরে উঠেছেন কিন্তু থেকে যাওয়া নানা শারীরিক প্রতিক্রিয়ায় ভুগছেন, সেই সব রোগীদের সাহায্য করবে এই সব ক্লিনিক
কলকাতা, ১৯ অক্টোবর : অ্যাপোলো গ্লেনেগলস কলকাতা, অ্যাপোলো গ্রুপের হসপিটাল নেটওয়ার্ক জুড়ে পোস্ট কোভিড রিকভারি ক্লিনিক চালু করার কথা ঘোষণা করল আজ।
কোভিড থেকে সেরে ওঠার পর বহু রোগী সংক্রমণের কারণে থেকে যাওয়া মৃদু ও দীর্ঘস্থায়ী প্রতিক্রিয়া থেকে ভুগছেন। এধরনের ক্রমবর্ধমান রোগীর সমস্যার দেখভাল করবে এই ক্লিনিকগুলি। প্রায় ৫০ শতাংশের বেশি কোভিড রোগী ভোগেন শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা, হার্টের সমস্যা, গাঁটের ব্যথা, দৃষ্টিশক্তির সমস্যা এবং স্মৃতি হারানোর সমস্যায় ভোগেন। নোভোল করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কয়েক মাস পরেও এসব চলতে থাকে। পোস্ট কোভিড রিকভারি ক্লিনিকগুলিতে থাকবেন একদল বিশেষজ্ঞ যাঁদের মধ্যে রাখা হবে নিউরোলজিস্ট ও ইমিউনোলজিস্টদের। তাঁরা রোগীদেরকোভিড পরবর্তী সমস্যাগুলি মেটাতে সাহায্য করবেন এবং তাঁদের সুস্থ করে তুলতে সাহায্য করবেন। কলকাতায় পোস্ট কোভিড রিকভারি ক্লিনিক হবে অ্যাপোলো গ্লেনেগলস হাসপাতালে।
অ্যাপোলো হসপিটালস গ্রুপ সিইও (ইস্টার্ন রিজিয়ন) রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে অনেকেই কোভিড ১৯ থেকে সেরে উঠেছেন। তাঁরা নানা শারীরিক লক্ষ্মণের কারণে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। কারণ তাঁরা বুঝতে পারছেন না ওই সব সমস্যার জন্য তাঁরা কাদের কাছে যাবেন। কোভিড ১৯ থেকে সেরে ওঠা এই সব রোগীদের স্বাস্থ্যের সমস্যা মেটানোর জন্য আমরা এই পোস্ট কোভিড রিকভারি ক্লিনিক চালু করেছি। কোভিড পরবর্তী চিকিৎসার জন্য এই বিশেষ ক্লিনিকগুলি রোগীদের সাহায্য করবে প্রযোজনীয় বিশেষ যত্ন ও পরিষেবা পেতে। এর জন্য আমরা নির্দেশিকা তৈরি করেছি এবং ক্লিনিসিয়ানদের ট্রেনিং দিয়েছি যাতে রোগীরা সঠিক চিকিৎসা পান। কোভিড ১৯ জনিত শারীরিক প্রতিক্রিয়া থেকে পুরোপুরি সেরে উঠতে সাহায্য করব এই ক্লিনিকগুলি। এবং তাঁরা কোভিডের আগের জীবনে ফিরে যেতে পারবেন।’
দেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের ওপর প্রভাব ফেলে কোভিড ১৯। স্ট্রোক, মাইওকার্ডিয়াল ইনফ্রাকশনের মতো জটিল রোগ, ডায়াবেটিস ও হাইপারটেনসনের মতো ক্রনিক রোগ — এসবই কোক্ভিড ১৯ পরবর্তী রোগের লক্ষ্মণ। কোভিডে াক্রান্ত হোয়ার পর বহু রোগী হঠাৎ মৃত্যুর খবর এসেছে। এবং এসব ক্ষেত্রে বেশিরভাগ মৃত্যুর জন্য দায়ী তীব্র কার্ডিয়াক সমস্যা।
অ্যাপোলো গ্লেনেগলস হাসপাতাল, কলকাতার ডিরেক্টর অফ মেডিক্যাল সার্ভিসেস (ডিএমএস) ডক্টর শ্যামাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ কোভিড ১৯ শুধু ফুসফুসে সংক্রমণই ঘটায় না। প্রভাবিত করে দেহের অন্য অঙ্গগুলিকেও। ফলে দীর্ঘস্থায়ী শারীরিক সমস্যা থেকে যায়। রোগের তীব্র দশার চিকিৎসার শেষে এবং রোগী সেরে ওঠার কয়েক সপ্তাহ বা কয়েক মাস পরেও কিছু লক্ষ্ণণ দেখা দিতে পারে। এবং রোগের তীব্র দশা চলে যাওয়ার পরেও কোনও ব্যক্তির সাধারণ স্বাস্থ্যের সমস্যা দেখা দিতে পারে। যাঁদের হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল তেমন রোগীর ক্ষেত্রে দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা থেকে যাওয়াটা আরও স্বাভাবিক। আবার যে সব রোগী মৃদু সংক্রমণ থেকে সেরে উঠেছেন তাঁরাও ভাইরাসের দীর্ঘস্থায়ী সংক্রণ থেকে ভুগতে পারেন। দীর্ঘ স্থায়ী প্রতিক্রিয়ার মধ্যে পড়ে এমন সমস্যা যা রোগীকে জটিল অবস্থায় নিয়ে গিয়ে অক্ষম করে ফেলতে পারে। এই বিশেষ ক্লিনিক আমাদের সাহায্য করবে রোগীদের দেহের লক্ষ্মণগুলির ওপর ধারাবাহিকভাবে নজরদারি চালাতে এবং প্রয়োজনের সময়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে।’
অ্যাপোলো গ্লেনেগলস হাসপাতাল, কলকাতার ভাইস প্রেসিডেন্ট (বিজনেস ডেভেলপমেন্ট) সোমনাথ ভট্টাচার্য বলেন, ‘ কোভিড ১৯ এর আগে, আমরা এনসিডি-র সুনামির মুখে পড়েছিলাম। এই রোগগুলি ৭০ শতাংশ মৃত্যুর জন্য দায়ী। এর ওপর চাপ বাড়াচ্ছে পোস্ট কোভিড সিনড্রোম, এবং যদি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করা না হয়, তাহলে কোভিড থেকে সেরে ওঠা ক্রনিক রোগে অসুস্থ বহু ব্যক্তি অতিমারীর পরেও মরবিডিটিতে আক্রান্ত হবেন এবং মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়বে। পোস্ট কোভিড সিনড্রোমের চূড়ান্ত সঙ্কট পর্বের আরও বেশি অবনতি হতে দেবে না এই সব বিশেষ ক্লিনিকগুলি এবং ক্রনিক রোগগুলিকে কার্যকর ভাবে প্রতিরোধ করবে। এটাই হল পোস্ট কোভিড সিনড্রোমের একট অংশ যার মোকাবিলা করা হয় রোগীর ওপর নজরদারি, টেলি পরামর্শ ও ক্লিনিক ভিত্তিক চিকিৎসা পরিষেবার মধ্যে দিয়ে।’
প্রাথমিকভাবে পোস্ট কোভিড রিকভারি ক্লিনিকগুলি চালু হবে কোভিডের চিকিৎসা করা হয় এমন অ্যাপোলো হাসপাতালগুলিতে। এগুলি রয়েছে চেন্নাই, মাদুরাই, হায়দরাবাদ, বেঙ্গালুরু, মাইসুরু, কলকাতা, ভুবনেশ্বর, গুয়াহাটি, দিল্লি, ইন্দোর, লখনউ, মুম্বই ও আমেদাবাদে। ক্লিনিকগুলির নেতৃত্বে থাকবেন নিষ্ঠাবান চিকিৎসকদের টিম এবং সেই টিমে থাকবেন পারিবারিক চিকিৎসক ও নার্সরা।
অ্যাপয়ন্টমেন্টের জন্য দয়া করে ফোন করুন — Dr. Jhuma Bagchi @ 9804000465