BRAKING NEWS

টানা ছয় মাস পর কোভিড বিধি মেনে আগামী ২৪ তারিখ খুলবে কামাখ্যা মন্দির, প্রস্তুতি দুরন্ত গতিতে

গুয়াহাটি, ২২ সেপ্টেম্বর (হি.স.) : করোনা সংক্রমণ ও লকডাউনে জেরে গত ২০ মার্চ থেকে গুয়াহাটির মালিগাঁওয়ে নীলাচল পাহাড়ে অবস্থিত বিশ্ববিখ্যাত শক্তিপীঠ কামাখ্যা ধাম বন্ধ ছিল। বহু টানাপোড়েনের পর মন্দির খোলার প্রস্তুতি চালিয়েছে মন্দির পরিচালন সমিতি। সব কিছু ঠাকঠাক থাকলে আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে ভক্ত ও দর্শনার্থীদের জন্য মন্দিরের কপাট খুলে দেওয়া হবে।

কামাখ্যা মন্দির খোলার প্রসঙ্গ নিয়ে গত শনিবার ১৯ সেপ্টেম্বর কামরূপ মহানগরের জেলাশসকের কার্যালয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই সভার পর জেলাশাসক বিশ্বজিত পেগু করোনা অতিমারির প্রটোকল রক্ষা করে একটি গাইডলাইন মন্দির পরিচালন সমিতিকে প্রেরণ করেন।

এ প্রসঙ্গে মঙ্গলবার দুপুরে মন্দির পরিচালন সমিতি এক সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করে। সাংবাদিক সম্মেলনে মন্দির খোলার বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিয়েছেন সমিতির পদাধিকারীরা। তাঁরা জানান, জেলা প্রশাসনের গাইডলাইন অনুযায়ী প্রত্যেক দর্শনার্থীকে মুখে মাস্ক পরে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং শৃঙ্খলাবদ্ধ ভাবে মা কামাখ্যা ধামে যেতে হবে। এছাড়া দর্শনার্থীদের নিয়ন্ত্রণ করার জন্য প্রতিদিন পাঁচশোর বেশি পুণ্যার্থী তথা ভক্ত-দর্শনার্থীকে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না। এর জন্য উপযুক্ত হোল্ডিং এরিয়ার ব্যবস্থা করা, অনলাইনে তীর্থযাত্রীদের প্রবেশপত্রের ব্যবস্থা করা, কামাখ্যা মন্দির তথা নীলাচল পাহাড়ের নীচে পুণ্যার্থীদের মেডিক্যাল টেস্ট করানো, পুলিশ প্রশাসনের জন্য অস্থায়ী আবাসন নির্মাণ ইত্যাদির ব্যবস্থাদি সম্পূর্ণ করে আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে কামাখ্যা মন্দির খোলার অনুমতি প্রদান করেছে জেলা প্রশাসন।

সমিতির পদাধিকারীরা জানিয়েছেন, জেলাশাসক কর্তৃক প্রদত্ত গাইডলাইন অনুযায়ী পাঁচ শতাধিক তীর্থযাত্রীর জন্য প্রয়োজনীয় হোল্ডিং এরিয়ার ব্যবস্থা করতে মন্দির পরিচালন কর্তৃপক্ষ সিদ্ধেশ্বর মন্দির চত্বরকে সে অনুযায়ী তৈরি করেছেন।  এর সাথে গাড়ি রাখার নবনির্মিত স্থানটিও ব্যবহার করা হবে। কিন্তু এই কাজটি সম্পন্ন হতে আরও বেশ কিছুদিন সময় লাগবে। হোল্ডিং এরিয়া ছাড়া ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হবে।

অন্যদিকে জেলাশাসকের গাইডলাইন অনুযায়ী অনলাইনের সাহায্যে পরিচয়পত্র প্রদান করার সম্পর্কে মন্দির কর্তৃপক্ষ জানান, অনলাইন ব্যবস্থা কামাখ্যা দেবালয়ের কাছে নতুন ধারণা। এক্ষেত্রে কামাখ্যার পুজারি, পাণ্ডা, সেবাইত সবার সাথে আইটি বিশেষজ্ঞদের বিস্তারিত আলোচনার পর প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ইতিমধ্যে তিনটি হোল বডি স্ক্যানিং টানেল সংস্থাপিত করা হয়েছে। হোল্ডিং এরিয়াকে স্যানিটাইজ করার জন্য প্রয়োজনীয় স্প্রে মেশিন তথা থার্মাল স্ক্যানারের ব্যবস্থাও ইতিমধ্যে করা হয়েছে বলে জানান মন্দির পরিচালন সমিতির পদাধিকারীরা।

এদিকে মন্দির খুলে যাওয়ার পর মন্দিরে প্রবেশ করতে হলে প্রবেশদ্বারে কোভিড টেস্টে নেগেটিভ সার্টিফিকেট দেখাতে হবে। তিন দিন আগের নেগেটিভ সার্টিফিকেট প্রদর্শন করেই ব্যক্তিরা মন্দিরে প্রবেশ করার অনুমতি পাবেন। এছাড়া মন্দির চত্বরে থাকবে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থাও।

প্রসঙ্গত, গত ৮ জুন রাজ্য সরকার কিছু কিছু মঠ ও মন্দির খোলার ছাড়পত্র দিয়েছিল। কিন্তু করোনা সংক্রমণের কথা ভেবে কামাখ্যা মন্দির পরিচালন সমিতি মন্দির বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। মার্চ থেকে প্রায় ছয় মাস বন্ধ থাকার পর বর্তমানে কামাখ্যা মন্দির খোলার প্রস্তুতি জোরগততিতে চলছে। করোনা সংক্রমণের জন্য বেশ কয়েক মাস রাজ্যের বন্ধ মঠ মন্দিরগুলো ইতিমধ্যে খুলতে শুরু করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *