BRAKING NEWS

রাজস্ব হ্রাসের মোকাবিলা করতে পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল বৃদ্ধির উপর গুরুত্ব রেলওয়ের

গুয়াহাটি, ৩১ জুলাই (হি.স.) : করোনা-প্রকোপের পরিস্থিতিতে রাজস্ব হ্রাসের মোকাবিলায় পণ্যবাহী ট্রেনের চলাচল বৃদ্ধির উপর গুরুত্ব দিয়েছে রেলওয়ে।

শুক্রবার উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, বর্তমানে কোভিড-১৯ অতিমারির জেরে অধিকাংশ যাত্রীবাহী ট্রেন পরিষেবা বাতিল থাকায় রাজস্ব আয়ের ক্ষেত্রে ভারতীয় রেলওয়েকে এক বিশাল প্রত্যাহ্বানের মুখে পড়তে হয়েছে। তবে এই প্রত্যাহ্বানের মোকাবিলা করার জন্য ভারতীয় রেলওয়ে সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত হয়ে উঠেছে। ব্যয় সীমিত করার জন্য একাধিক পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি রাজস্ব হ্রাসজনিত সমস্যার সমাধান করতে রেলওয়ের পক্ষ থেকে পণ্যবাহী ট্রেনের মাধ্যমে রাজস্ব আয়ের উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।

এ ক্ষেত্রে গৃহীত পদক্ষেপগুলির মধ্যে অন্যতম হল পণ্যবাহী ট্রেনের চলাচল বৃদ্ধি করা ও পণ্য বহণ থেকে যুক্তিসঙ্গতভাবে রাজস্ব আয় বৃদ্ধি করার পাশাপাশি সর্বোত্তম আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সাথে সংমিশ্রণ ঘটাতে শিল্পের জন্য পণ্যের ভাড়া হ্রাস করা। পণ্য বহণের জন্য মাশুল হ্রাস করার পাশাপাশি জল পরিবহণ, ভূতল সড়ক পরিবহণ ও রেলওয়ে পরিবহণকে একক পরিবহণ পরিষেবায় সংযুক্ত করার উদ্দেশ্যে রেলওয়ের পক্ষ থেকে মাল্টি-মডেল ইন্টিগ্রেশনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এর ফলে অর্থনৈতিক সক্ষমতা অর্জন ও পারিপার্শ্বিক সুবিধাগুলি লাভ করা যাবে।

বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, ভারতীয় রেলওয়ে ইতিমধ্যে বিগত চার মাস ধরে উল্লেখযোগ্যভাবে পণ্যবাহী ট্রেনগুলির গতি বৃদ্ধি করেছে। বিগত বছরের তুলনায় বর্তমানের গতি ৬৬ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে, ২০১৯ সালের জুলাই মাসের সাথে তুলনা করলে দেখা যাবে যে ২০২০ সালের জুলাই মাসে পণ্যবাহী ট্রেনগুলির গতি প্রায় দ্বিগুণ হারে বৃদ্ধি লাভ করেছে। গতির এই কার্যকরী বৃদ্ধির ফলে এখন থেকে পচনশীল সামগ্রী ও দূরপাল্লার গন্তব্যস্থানে দ্রুতগতিতে পরিবহণ করা সম্ভব হবে।

বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, গতির এমন উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি সম্ভব হয়েছে কারণ, রেলওয়ে শুধুমাত্র বিগত চারমাসের মধ্যে ২০০-এর অধিক পরিকাঠামোগত উন্নয়নমূলক কাজ সম্পূর্ণ করে একাধিক বাধা দূর করতে সক্ষম হওয়া। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ৮২টি সেতু পুনঃনির্মাণ এবং ৪৮টি লেভেল ক্রসিং বন্ধ করা। জরাজীর্ণ সেতুগুলি এবং লেভেল ক্রসিংগুলি ট্রেনের গতি বৃদ্ধিতে বাধার সৃষ্টি করেছিল, যার ফলে ট্রেন চলাচলে বিলম্ব হতো।

অধিক পণ্য ব্যবসার প্রত্যাশার জন্য মিশন মোড থেকে গুডস শেড সুবিধাগুলির উন্নয়ন শুরু হয়েছিল। বর্তমানে ১,২৭১টি গুডস শেড, ৫২টি রেলওয়ে-মালিকানাধীন সাইডিং, ৮৮৪টি ব্যক্তিগত সাইডিং এবং ৬৭টি ব্যক্তিগত ফ্রেইট টার্মিনাল ভারতীয় রেলওয়ের মধ্যে রয়েছে। আরও ৪১টি ব্যক্তিগত সাইডিং এবং ১৮টি ব্যক্তিগত ফ্রেইট টার্মিনাল ২০২১ সালের মার্চ মাসে যুক্ত করা হবে।

উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের পক্ষ থেকেও পণ্যবাহী ট্রেনের চলাচল বৃদ্ধির জন্য অতিরিক্ত ফ্রেইট টার্মিনাল প্রস্তুত করার উদ্দেশ্যে নির্দিষ্টকরণের প্রক্রিয়া চালানো হচ্ছে। প্রবেশ পথ, আলোর ব্যবস্থা, প্ল্যাটফর্ম সারফেস লোডিঙের জন্য মেরামতির মতো গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন এবং ওয়েটিং রুম, টয়লেট, ওয়াটার সাপ্লাই ইত্যাদির মতো উপভোক্তামূলক সুবিধাগুলির উন্নয়নের জন্য এই ফ্রেইট টার্মিনালগুলি নেওয়া হবে।

বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, যাত্রী পরিষেবা বাতিলকরণের ফলে রাজস্ব হ্রাসের যে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছিল তার মোকাবিলা করতে পণ্যবাহী ট্রেনের চলাচল উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় সাধারণভাবে ভারতীয় রেলওয়ে এবং বিশেষভাবে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে আশাবাদী হয়ে উঠেছে। শিল্প-উদ্যোগের সুবিধার জন্য রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সমস্ত অংশীদারদের সাথে এবং বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ইউনিট (বিডিইউ)-এর আধিকারিকদের দলের সাথে বিস্তৃত আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। উল্লেখ্য, শিল্প-উদ্যোগের সহজ ব্যবসা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিডিইউ-এর দলটি মুখ্য কার্যালয় ও ডিভিশনাল স্তর থেকে নির্বাচিত করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *