নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৮ জুন৷৷ ত্রিপুরায় বিচারের অপেক্ষায় দিন কাটাচ্ছেন বাংলাদেশি যুবতী৷ তাকে বিচার পাইয়ে দেওয়ার জন্য ত্রিপুরা মহিলা কমিশন ফের তদন্তে নেমেছে৷ ত্রিপুরায় এসে ওই যুবতী এক যুবকের সাথে বৈবাহিক সম্পর্কে আবদ্ধ হয়েছিলেন৷ কিন্তু বিয়ের কিছুদিন পর তাঁদের দাম্পত্য জীবনে ছেদ পড়ে৷ কারণ, ওই যুবক বাংলাদেশি যুবতীকে ছেড়ে পালিয়ে গেছে৷ তাই বর্তমানে আগরতলায় একটি হোমে তিনি আশ্রয় নিয়েছেন৷ এ-বিষয়ে ত্রিপুরা মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন বলেন, তাঁর অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া আমাদের দায়িত্ব৷ শুধু তাই নয়, প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশের প্রতি আমরা দায়বদ্ধও৷
বর্ণালী গোস্বামীর কথায়, বাংলাদেশের ঢাকার বাসিন্দা ওই যুবতী ফেসবুকে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন আগরতলার এয়ারপোর্ট এলাকার বাসিন্দা সুমন দাসের সাথে৷ ২০১৮ সালে ওই যুবতী বৈধ পাসপোর্ট ও ভিসা নিয়ে ত্রিপুরায় এসে সুমনের সাথে থাকতে শুরু করেন৷ তিনি বলেন, এরই মধ্যে পুরোহিত ডেকে সামাজিক রীতি মেনে তাঁরা বিয়ে সেরে নেন৷ কিন্তু, নববধূকে নিয়ে সুমন বাড়িতে যায়নি৷ তাঁরা অন্যত্র সংসার পাতেন৷ শুধু তা-ই নয়, ওই যুবতী গর্ভবতীও হয়েছিলেন৷ কিন্তু কিছুদিন সংসার করার পর সুমন তাঁকে রেখে পালিয়ে যায়৷ এর পর নববধূ সুমনের বাড়িতে থাকতে গিয়েছিলেন৷ কিন্তু সুমনের বাবা-মা তাঁকে নির্যাতন করে বাংলাদেশ পাঠানোর চেষ্টা করেছিলেন, অভিযোগ তুলেছেন নববধূ৷ এরই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এয়ারপোর্ট থানায় এফআইআর করেছিলেন৷
মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন বলেন, সম্প্রতি ওই যুবতীর মা মেয়েকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর আর্জি জানিয়েছেন৷ কিন্তু আদালতের নির্দেশে তিনি বর্তমানে হোমে রয়েছেন৷ তাই মামলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত দেশে ফেরত পাঠানো যাচ্ছে না৷ তাঁর কথায়, সম্প্রতি সুমন মামলা প্রত্যাহার করার জন্য বার বার তার স্ত্রীকে চাপ দিচ্ছে৷ অবশ্য, ওই যুবতী পুনরায় সুমনের সাথে সংসার শুরু করতে চাইছেন৷ কিন্তু মামলা তুলে নিলে হিতে বিপরীত না-হয়ে যায়, সেই চিন্তায় ভুগছেন তিনি৷
বর্ণালী গোস্বামীর কথায়, আজ মহিলা কমিশনের এক দলকে সঙ্গে নিয়ে তারানগর হোম পরিদর্শন করেছি৷ ওই যুবতীর খোঁজ নিয়েছি৷ তাঁকে সুবিচার পাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা শুরু করেছি৷ তিনি বলেন, এক বছর ধরে যুবতীটি বিচারের অপেক্ষায় দিন কাটাচ্ছেন৷ আদালতের নির্দেশে তিনি হোমে ঠাঁই পেয়েছেন ঠিকই, কিন্তু তাঁর অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া মহিলা কমিশনের দায়িত্ব৷ শুধু তা-ই নয়, প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশের প্রতি আমরা দায়বদ্ধও, দৃঢ়তার সাথে বলেন তিনি৷
তাঁর বক্তব্য, ওই যুবতীর কাউন্সেলিং করেছি৷ তাঁকে ভালো-মন্দ বুঝিয়েছি৷ সুমনের সাথে সংসার নিয়ে তিনি উভয়সংকটে পড়েছেন, সেই সমস্যা সমাধানেও সহায়তার আশ্বাস দিয়েছি৷ বর্ণালী গোস্বামী বলেন, যুবতীর দায়েরকৃত মামলা দ্রুত নিস্পত্তি হোক, সেই চেষ্টাও করব আমরা৷ তবে সবটাই নির্ভর করছে যুবতীর সিদ্ধান্তের উপর৷ তাছাড়া আইনি দিক দিয়ে সমস্ত সহায়তা দেব আমরা, প্রত্যয়ের সুরে বলেন তিনি৷