শিলচর (অসম), ১৬ ফেব্রুয়ারি (হি.স.) : শিলচর নর্মাল স্কুল প্রাঙ্গণে লায়ন্স ক্লাব আয়োজিত গণবিবাহে সানাই বাজিয়ে বিয়ে হল কাছাড়ের ১৮ জোড়া পাত্রপাত্রীর। নব দম্পতিদের ১৭ জোড়া চা বাগান অঞ্চলের। রয়েছেন এক জোড়া বাঙালিও। লায়ন্স ক্লাব শিলচর সেন্ট্রালের এই গণ বিবাহের আয়োজনে এবার ১৬ বছরে পা পড়েছে। ২০০৫ ইংরেজি থেকে এ ধরনের গণ বিবাহের আয়োজন করে আসছে শিলচর লায়ন্স ক্লাব।
বহু মানুষের অংশগ্রহণে গণবিবাহের অনুষ্ঠান রীতিমতো উৎসবে পরিণত হয়েছিল। রবিবার সকালে নর্মাল স্কুল প্রাঙ্গণে চার চারটি কুঞ্জে বিয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। পুরোপুরি শাস্ত্রীয় রীতি মেনে অগ্নিকে সাক্ষী রেখে চার হাত এক করে দেওয়া হয়েছে ১৮ জোড়া দম্পতির। গণ বিবাহের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন শিলচরের বিধায়ক দিলীপকুমার পাল, কাছাড়ের জেলাশাসক বর্ণালী শর্মা-সহ অনেকেই। শামিল হয়েছিলেন রোটারি ক্লাবের সদস্যরাও।
দিনভর শহরের বিশিষ্ট শিল্পীদের সঙ্গীত ও নৃত্য পরিবেশনে মুখরিত হয়ে ওঠে বিয়ের অনুষ্ঠানস্থল। ধামাইল নাচে কোমর দুলিয়েছেন লায়নেস সদস্যরা। সবশেষে নবদম্পতিদের শংসাপত্র দেন গণবিবাহ প্রকল্পের চেয়ারম্যান অংশুমান রায়। তিনি জানান, লায়ন্স ক্লাবের ব্যবস্থাপনায় প্রথম বছর ৬ জোড়া যুবক-যুবতী বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন। ২০০৫ সাল থেকে শুরু হয়ে আজ পর্যন্ত গণবিবাহ সমারোহে মোট ৩৮২ জোড়া পাত্রপাত্রীর বিবাহ সম্পন্ন হয়েছে। যার মধ্যে ২০১৭ সালে সর্বাধিক ৩৪ জোড়া বিবাহ সম্পন্ন হয়েছিল।
এবারের বিয়েতেও নব দম্পতিদের লায়ন্স ক্লাবের তরফে প্রতিবারের মতো গৃহস্তালির প্রয়োজনীয় সব কিছুই প্রদান করা হয়েছে। তবে বাড়তি পাওনা হচ্ছে অসম সরকারের তরফে প্রদত্ত সোনা। অসম সরকারের ‘অরুন্ধতি স্বর্ণ প্রকল্প’-এর অধীনে বিয়ে করলে নতুন বউকে ১০ গ্রাম সোনা প্রদানের প্রকল্প চালু করা হয়েছিল। এই প্রকল্পের অধীনে প্রায় ৩০ হাজার টাকার সোনা পাচ্ছেন নববধূরা।
তবে এক্ষেত্রে শর্ত হলো, সংশ্লিষ্ট নববধূকে অন্তত মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। অবশ্য চা জনগোষ্ঠীর জন্য বিশেষ ছাড় রয়েছে। যেমন মাধ্যমিক উত্তীর্ণ না হলেও হবে।
আজকের ১৮ জোড়া দম্পতির বিয়ে যথারীতি রেজিস্টার্ড করানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানে ক্লাবের তরফে সুবোধ রঞ্জন দেব, সুমিত দাস-সহ বরাক উপত্যকার বিভিন্ন স্থান থেকে অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।