নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২২ আগস্ট৷৷ নির্যাতিত মহিলাদের সাহায্যে নরসিংগরস্থিত সংযোজিত আঞ্চলিক দিব্যাঙ্গজন পুনর্বাসন কেন্দ্র চত্বরে ‘‘ওয়ান স্টপ সেন্টারের’ দ্বারোদঘাটন করা হয়েছে আজ৷ ত্রিপুরা সরকারের সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তরের ‘‘সখী’’ নামাঙ্কিত এই পশ্চিম ত্রিপুরা ওয়ান স্টপ সেন্টারের নিজস্ব নবনির্মিত দ্বিতল পাকাবাড়ির দ্বারোদঘাটন করেন সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষামন্ত্রী সান্ত্বনা চাকমা৷ তাঁর কথায়, অনেক মহিলারা নির্যাতনের অব্যক্ত কাহিনী কাউকে জানাতে পারেন না৷ এই সেন্টারটি তাদের জন্যই গড়ে তোলা হয়েছে৷
প্রসঙ্গত, ওই সেন্টারটি ২০১৭ সালের ৪ এপ্রিল থেকে মহিলা কমিশনের কার্যালয়ে পরিচালনা করা হত৷ এদিন পশ্চিম ত্রিপুরা ওয়ান স্টপ সেন্টারের দ্বারোদঘাটন করে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা মন্ত্রী সান্ত্বনা চাকমা বলেন, বিভিন্নভাবে মহিলারা নির্যাতিত হচ্ছেন৷ এই নির্যাতনের কথা কখনও প্রকাশ পায়, আবার কখনও কেউ জানতে পারেন না৷ এই ‘‘ওয়ান স্টপ সেন্টার’’-এ নির্যাতিত মহিলাদের জরুরী চিকিৎসা, আইনী সহায়তা, পরামর্শ প্রদান, মানসিক প্রশান্তির জন্য কাউন্সিলিং করানো সহ প্রাথমিক পর্যায়ের নির্যাতিতাদের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে৷
তাঁর দাবি, মহিলা ও পুরুষের প্রতি সমদৃষ্টিভঙ্গীই দেশকে উন্নততর করতে পারে৷ মহিলারাদের সুরক্ষায় পুরুষদেরও সচেতন করা প্রয়োজন৷ সুকল কলেজে বিভিন্ন আইনী পরিষেবা সংক্রান্ত সচেতনতা শিবির করতে হবে৷ তিনি বলেন, অনেকে জানা সত্ত্বেও নির্যাতিতাদের পাশে থাকেন না৷ সহযোগিতা করেন না৷ এই মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে৷ সাথে যোগ করেন, ক্লাব, সামাজিক সংস্থাগুলোকে এ সম্পর্কে আরও সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ গ্রহণ করতে হবে৷
তিনি জানান, আগামী ১ বছরের মধ্যে রাজ্যে বাকি ৭টি জেলাতেও এধরনের সেন্টার খোলার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে এবং অতিসত্বর শুধুমাত্র মহিলাদের জন্য হেল্পলাইন নম্বর ১৮১ চালু করার দিশাতেও কাজ হচ্ছে৷ তিনি আরও বলেন, রাজ্যকে মডেল স্টেট এবং নেশামুক্ত রাজ্য গঠন করতে চাইছেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী৷ এক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের পাশাপাশি সমাজের সকলস্তরে মানুষকে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করতে হবে৷
এদিন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিধায়ক কৃষ্ণধন দাস বলেন, সামাজিক সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের মানসিকতা গড়ে ওঠা উচিত৷ বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিধায়ক ডা দিলীপ দাস বলেন, আমাদের সমাজে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নির্যাতিতাদেরই দোষী সাব্যস্ত করা হয়৷ আত্মীয় পরিজনরা তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়৷ নির্যাতিতার সঠিক ন্যায়ের জন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশাপাশি সমাজকেও এগিয়ে আসতে হবে৷ এই অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ত্রিপুরা মহিলা কমিশনের ভাইস চেয়ারপার্সন অস্মিতা বণিক, সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা গুঞ্চা সনোরার, জেলা সমাজ শিক্ষা পরিদর্শক সুদীপ দেববর্মা প্রমুখ৷ এখানে উল্লেখ্য, ওয়ান স্টপ সেন্টার সম্পূর্ণ কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প৷ পাঁচ শয্যা বিশিষ্ট এই সেন্টারের মাধ্যমে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকল নির্যাতিতা মহিলারাই সাহায্য পাবেন৷