নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৮ আগস্ট৷৷ বর্তমান সরকার রাজ্যকে একটি মেডিক্যাল হাব বানানোর প্রয়াস নিয়েছে৷ রাজ্য সরকার রাজ্যে একটি ডেন্টাল হাসপাতাল স্থাপনের বিষয়েও চিন্তাভাবনা করছে৷ আগামী ৩১-আগস্ট আগরতলায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মধ্যে সবচেয়ে অত্যাধুনিক ক্যান্সার হাসপাতালের উদ্বোধন করা হবে৷ মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব আজ মহাকরণের ২নং কনফারেন্স হলে জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের উদ্যোগে আয়োজিত দন্ত শল্য চিকিৎসকদের একদিনের প্রশিক্ষণ ও কর্মশালায় প্রধান অতিথির ভাষণে একথাগুলো বলেন৷ এই কর্মশালায় প্রায় ১০০ জন দন্ত শল্য চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মী অংশ নেন৷
প্রধান অতিথির ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী শ্রীদেব বলেন, ডাক্তার ও শিক্ষকগণ সমাজ বদলে দিতে পারেন৷ ডাক্তারী পেশা সমাজে সবচাইতে সম্মানজনক পেশা৷
সাধারণ মানুষ ডাক্তারদের ভগবান বলে মান্য করেন৷ তাই চিকিৎসকদের আরো ধৈর্যশীল হতে হবে৷ যে যেই গ্রামে কাজ করেন সেখানকার সমাজ ব্যবস্থার সাথে সম্পৃক্ত হতে হবে৷ তবেই ধীরে ধীরে সমাজের আস্থা অর্জন করতে পারবেন৷ মানুষ আপনাদের আপন মনে করবেন, শ্রদ্ধা করবেন৷ যেমনটা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ’মনকি বাত’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দেশের মানুষের সাথে কথা বলে তাদের মন জয় করেছেন৷ দেশবাসী নরেন্দ্র মোদীকে পুনরায় প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়েছেন৷ তিনি বলেন, রাজ্য সরকার রাজ্যের দন্ত চিকিৎসা ব্যবস্থাকে কিভাবে আরও আধুনিক করা যায় সে বিষয়ে সচেষ্ট রয়েছেন৷ বাম আমলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় অনিয়ম ছিল৷ এখন ধীরে ধীরে ইতিবাচক পরিবর্তন আসছে৷ আমরাও চাইছি রাজ্যে স্বাস্থ্যের সার্বিক উন্নয়নে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশীপ বা পি পি পি মডেল গড়ে উঠুক৷ পি পি পি মডেলে রাজ্যবাসী আরও ভাল স্বাস্থ্য পরিষেবার সুুযোগ পাবেন৷
রাজ্যে কর্মসংস্থানের উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী শ্রীদেব বলেন, আগে মানুষ কর্মসংস্থানের বিষয়ে গুজরাট, মহারাষ্ট্র, উত্তর-প্রদেশ, হরিয়ানার নাম উল্লেখ করত৷ ত্রিপুরাকে গুরুত্ব দিত না৷ আজ দেশবাসীর কাছে এ ধারণা পাল্টাচ্ছে৷ ধীরে ধীরে ত্রিপুরা স্বনির্ভর রাজ্য হওয়ার পথে এগিয়ে চলেছে৷ ক’ষি, পর্যটন, কুটিরশিল্প, বাঁশ চাষ, মৎস্য চাষ প্রভ’তি বিকল্প স্ব-রোজগারে ত্রিপুরা এগিয়ে চলেছে৷ সরকার চায় সবকা সাথ সবকা বিকাশ৷ তিনি বলেন, ন্যাশনাল ক্যারিয়ার সার্ভিস সেন্টার থেকে জানাযায় বর্তমানে রাজ্যে প্রক’ত বেকার রয়েছেন ১ লক্ষ ৫৬ হাজার ৪০০ জন৷ বহু বেকার লোন নিয়ে বা অন্যভাবে কর্মসংস্থানে যুক্ত হয়েছেন৷
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরায় যাতে সার্বিক উন্নয়ন হয় সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সচেষ্ট রয়েছেন৷ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ত্রিপুরার মানুষ থেকে শিখতে হবে৷ এর চাইতে বড় প্রাপ্তি আর কি হতে পারে৷ মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তারদের উদ্দেশ্যে বলেন, কিছু পাওয়ার জন্য কিছু ত্যাগ করতে হয়৷ নরেন্দ্র মোদী অনেক কিছু ত্যাগ করেছেন বলেই প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন৷ আমরা সবাইকে নিয়ে মডেল রাজ্য বানাতে চাই৷
বিশেষ অতিথির ভাষণে স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিব ডা. দেবাশিষ বসুু বলেন, দন্ত শল্য চিকিৎসার সার্বিক উন্নয়নে সরকার সচেষ্ট রয়েছেন৷
দন্ত শল্য চিকিৎসকদের নিজ নিজ কর্মস্থলে আরো আন্তরিকভাবে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি৷ সচিব বলেন, রাজ্য সরকার ডেন্টাল এসিস্ট্যান্ট ও দন্ত শল্য চিকিৎসক নিয়োগে উদ্যোগ নেবে৷ এছাড়া বক্তব্য রাখেন ডেন্টাল কাউন্সিল অব ইণ্ডিয়ার সদস্য ডা. মানিক সাহা৷ স্বাগত ভাষণ দেন জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের মিশন অধিকর্তা অদিতি মজমদার, দন্ত শল্য চিকিৎসা বিষয়ে পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশন করেন বহির্রাজ্য থেকে আগত ডা. ধীরেন্দ্র শ্রীবাস্তব ও ডা. বিনীতা শ্রীবাস্তব৷ কর্মশালায় অন্যান্যদের মধ্যে স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডা. পি কে মজমদার, স্বাস্থ্য ও জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের কর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন৷