BRAKING NEWS

রাজস্থানে বিক্রি হয়ে যাওয়া কদমতলার গৃহবধূ ফিরে এল ২ বছর পর, পুলিশ ধরল দালালকে

নিজস্ব প্রতিনিধি, চুড়াইবাড়ি, ২৪ জুন৷৷ ত্রিপুরা রাজ্য থেকে বহিঃ রাজ্যে নারী পাচার কান্ড নতুন কোনো বিষয় নয়৷ একের পর এক রাজ্যের নারীরা যে অর্থের বিনিময়ে পাচার ও প্রেমের ফাঁদে পড়ে বহিঃরাজ্যে বিবাহ হয়েছে তার নজির ভুরি ভুরি রয়েছে৷ আর তাতে এক শ্রেণীর দালালচক্র রাজ্যে সক্রিয়ভাবে কাজ করে চলছে৷ এরকমই একটি ঘটনা ঘটল উত্তর জেলার কদমতলা থানাধীন কালাগাঙ্গের পাড় গ্রামে৷
ওই গ্রামের ৫ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মিনারা বেগম স্বামী মৃত মইন উদ্দিন অপর বিতরগুল গ্রামের এক নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা রশিদ আলী পিতা মৃত আফতাব আলী ওরফে বটুলের সঙ্গে দীর্ঘ দিনের পরিচয়৷ আর সেই সুবাদে আজ থেকে দুই বছর পূর্বে কালাগাঙ্গের পারস্থিত নিজ বাড়ি থেকে কদমতলা আসার পথে মিনারা বেগমকে রশিদ আলী নিজের অটোতে তুলে নিয়ে আসে৷

আর তখনই ঘটে চরম বিপত্তি৷ বহিঃরাজ্যের রাজস্থানে বিক্রি হওয়া মিনারা বেগম জানান তখন ওই দালাল অটোচালক রশিদ আলী ওরফে বটুল তাকে একটি পান খাওয়ার জন্য দেয়৷ ওই মহিলাও নিঃসন্দেহে পানটি খেয়ে নেয়৷ আর ওই এক পান খেয়েই তিনি দিল্লি চলে যান৷ দিল্লি গিয়ে যখন উনার জ্ঞান ফিরে তখন দেখতে পান দুজন অপরিচিত হিন্দি ভাষী লোক তাকে ধরে ট্রেন থেকে নামিয়ে নিয়ে যাচ্ছে৷ তখন তিনি চিৎকার চেচামেচি করলে ওই হিন্দিভাষী লোকজন বলে আমরা ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকার বিনিময়ে তোমাকে ক্রয় করে নিয়েছি৷ দরিদ্র গ্রাম্য স্বামীহারা ওই মহিলা তিন সন্তানের জননী মিনারা বেগম হতভম্ব হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন৷ তিনি যখন ওই অপরিচিত যুবকদের বলেন কি করে দিল্লিতে তিনি আসলেন তখন উত্তরে ওই দুই যুবক বলে মোটা অর্থের বিনিময়ে তোমাকে তোমার ভাই রশিদ আলীর কাছ থেকে ক্রয় করে আমরা সেখানে নিয়ে আসি বিবাহ করব বলে৷ অথচ ওই মহিলার কদমতলা স্থিত নিজ বাড়িতে তিনটি মেয়ে সন্তান রয়েছে৷


সেই সব কথা অপেক্ষা করেও সেখানে সুরেশ খান নামের এক ব্যক্তি তাকে বলপূর্বক বিবাহ করে দু বছর সেখানে রেখে একটি সন্তান জন্ম দিয়ে ও চরম অশান্তি ও দুর্ব্যবহার করে৷ কিন্তু অপহৃতা মিনারা বেগম যখন বাড়িতে ফেরার জন্য মন আকুল হয়ে ওঠে তখন তাকে মারধর করতে থাকে৷ এভাবে যখন দুটি বছর অতিক্রান্ত হয়ে যায় তখন হঠাৎ বাড়িতে ফেরার জন্য আকুল হওয়ায় তাকে কয়েকজন মিলে মারধর করে আহত করে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে৷ আর সেখান থেকেই সকলের অলক্ষ্যে ওই মহিলা পালিয়ে যায়৷ সুদূর রাজস্থানের রিনজা খানি গ্রাম থেকে পালিয়ে অজানা ট্রেনে উঠে এক সপ্তাহ পূর্বে বিভিন্ন জিজ্ঞাসাবাদ করতে করতে নিজ বাড়িতে ফিরে আসে৷


কদমতলার নিজ বাড়িতে এসেই তিনি প্রথমে অপহরণকারী রশিদ আলী ওরফে বটুলের বিরুদ্ধে কদমতলা থানায় লিখিত একটি মামলা করেন৷তারপর অপহরণকারী রশিদ আলী ওরফে বটুলকে কদমতলা বাজারে দেখতে পেয়ে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় থানায় নিয়ে যান মিনারা বেগম৷ বর্তমানে অপহরণকারী ওই দালাল রশিদ আলীকে জেলা আদালতে সোপর্দ করেছে কদমতলা থানার পুলিশ৷ সাথে অপহরণ কাণ্ডে ব্যবহৃত টিআর০২/এ/২৫২৩ নম্বর অটোটিও আটক করেছে কদমতলা থানার পুলিশ৷ সেই বিষয়ে কদমতলা থানায় একটি মামলা নথিভুক্ত করা হয়৷

মামলার নম্বর ৩৬/১৯৷ ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৬৬/৩৪ আইপিসি ধারায় মামলা দায়ের করেছে কদমতলা থানার পুলিশ৷ বর্তমানে কদমতলা থানার পুলিশ তদন্ত শুরু করছে অপরাধীর বিরুদ্ধে৷ মিনারা বেগমের একটাই দাবি তার তিনটি মেয়ে সন্তানকে ফেরত পেতে চান ও অপহরণকারী বটুলের কঠোর শাস্তির দাবি জানান৷ এদিকে অপরাধী তথা দালাল রশিদ আলী এলাকায় ত্রাস সৃষ্টিকারী একজন ব্যক্তি বলে জানা যায়৷ তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে কদমতলা থানায়৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *