BRAKING NEWS

রাজনীতিতে চরম অনীহা, দ্বাদশে কৃতীদের পছন্দ ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২১ মে৷৷ বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরিয়ে এখন পেশাগত যোগ্যতা অর্জনের দিকে পা দিতে গিয়ে সম-সুরে রাজনীতির প্রতি চরম অনীহা প্রকাশ করলেন দ্বাদশের বিজ্ঞান বিভাগের কৃতীরা৷ মঙ্গলবার ত্রিপুরা মধ্যশিক্ষা পর্ষদ পরিচালিত দ্বাদশের বিজ্ঞান বিভাগের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে৷ তাতে ১২ জন ছাত্রছাত্রী কৃতী তালিকায় স্থান পেয়েছেন৷ তাঁরা প্রত্যেকেই ডাক্তার কিংবা ইঞ্জিনিয়ার হতে ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন৷ কিন্তু রাজনীতি তাঁদের পছন্দ নয়, তা সাফ জানিয়েছেন৷
নেতাজি সুভাষ বিদ্যানিকেতনের ছাত্র নীলাঞ্জন দেব দ্বাদশে বিজ্ঞান বিভাগে প্রথম হয়েছেন৷ তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৪৮৫৷ ফলাফলেও খুশি নীলাঞ্জন৷ কারণ, মাধ্যমিকে কৃতী তালিকায় না থেকেও দ্বাদশে সোজা প্রথম স্থান অর্জন, নিঃসন্দেহে খুবই কৃতিত্বের এবং গৌরবের বলে দাবি করছেন তাঁর বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গৌতম চক্রবর্তী এবং বাবা নারায়ণ দেব ও মা জয়শ্রী দেব৷ দৈনিক ৫-৬ ঘণ্টা পড়াশুনা করলেও প্রাইভেট শিক্ষক ছিল তাঁর আটজন৷ স্বাভাবিকভাবেই পড়াশুনার চাপ এতটাই ছিল যে এর বাইরে খুব একটা সময় পাওয়া যেত না, জানালেন নীলাঞ্জন নিজেই৷ অবসর সময়ে টিভি দেখা কিংবা বই পড়া তাঁর পছন্দের৷ তবে, বিজ্ঞান-ভিত্তিক বই নিয়েই তাঁর আগ্রহ অত্যাধিক৷ নীলাঞ্জন সাফ জানিয়েছেন, কম্পিউটার সায়েন্স কিংবা ইলেকট্রনিক্স নিয়ে পড়াশুনা করতে চাইছেন৷ তবে, এখনও লক্ষ্য স্থির হয়নি৷ কিন্তু রাজনীতি তিনি পছন্দ করেন না৷ এ-বিষয়ে চর্চাও করতে চাইছিলেন না নীলাঞ্জন৷ তাঁর সাফ কথা, রাজনীতি বুঝি না৷ তাই, এ-বিষয়ে ভাবি না৷ তবে, দেশ ঐক্যবদ্ধভাবে থাকুক, তা তিনি মনেপ্রাণে চাইছেন৷


সন্তানের কৃতিত্বে উচ্ছ্বসিত বাবা-মা নীলাঞ্জনকে তার মর্জিমাফিক ভবিষ্যত জীবন বাছাই করার সুযোগ দিতে চাইছেন৷ তাঁর বাবা-মা সাফ জানিয়েছেন, ছেলে ভালও মানুষ হোক, মনেপ্রাণে এই প্রার্থনাই করি সবসময়৷ ফলাফল ভালো হয়েছে তাতে নিশ্চই খুশি হয়েছি৷ তবে, ভবিষ্যতে নীলাঞ্জন সুনাগরিক হয়ে উঠতে পারলে আরও বেশি খুশি হব, জানালেন তাঁর মা জয়শ্রী দেব৷
নীলাঞ্জনের মতোই, এ-বছর দ্বাদশের কৃতী তালিকায় স্থান অর্জনকারী বাকি ১১ জন ডাক্তার কিংবা ইঞ্জিনিয়ারিঙের প্রতি ঝেঁক দেখা গিয়েছে৷ কিন্তু রাজনীতি নিয়ে আলোচনা করতে চাইছিলেন না তাঁরা৷ চতুর্থ স্থানাধিকারী আবির দেবনাথ তো এককদম এগিয়ে দাবি করেছেন, ভবিষ্যত গড়ে তোলার জন্য রাজনীতিতে নামার কোনও মূল্য নেই৷ শুধু তা-ই নয়, রাজনীতির মাধ্যমে মানুষের প্রকৃত সেবা করাও সম্ভব নয়, তাই আবির ডাক্তারি পাশ করার পর আইএএস হতে চাইছেন৷ দেশের কাজে নিজেকে নিয়োজিত করার ক্ষেত্রে এর থেকে ভালো উপায় হতে পারে না বলে তিনি মনে করেন৷


দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাকে চাইছেন, এই প্রশ্ণে তাঁর সোজা জবাব, দেশকে মজবুত করতে পারবেন এবং উন্নতির দিকে নিয়ে যেতে পারবেন এমন ব্যক্তিই প্রধানমন্ত্রী হোন তা চাইছেন তিনি৷
এদিকে, উত্তর ত্রিপুরা জেলার ধর্মনগরের বিবিআই সুকলের ছাত্র পল্লব দেবনাথ সব বিষয়ে লেটার মার্ক-সহ ৪৬৪ নম্বর পেয়ে অষ্টম স্থান দখল করেছে৷


এ-বছর নবম স্থান অর্জন করেছে তিন জন৷ ধর্মনগরের গোল্ডেন ভ্যালি দ্বাদশ শ্রেণি বিদ্যালয়ের বিরাট দেবনাথ, উদয়পুর ইংলিশ মিডিয়াম দ্বাদশ শ্রেণি বিদ্যালয়ের কৃষ্ণেন্দু সাহা এবং ধর্মনগর সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের রিশ্মিতা ধর সব বিষয়ে লেটার মার্কস-সহ ৪৬৩ নম্বর পেয়ে নবম স্থান দখল করেছে৷ এছাড়া, গোমতি জেলার চন্দ্রপুর সরকারি দ্বাদশ শ্রেণি বিদ্যালয়ের পুনিত দেবনাথ সব বিষয়ে লেটার মার্কস-সহ ৪৬২ নম্বর পেয়ে দশম স্থান অর্জন করেছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *