BRAKING NEWS

বরাক উপত্যকায় বিজেপির পালে হাওয়া তুলতে ১১ এপ্রিল শিলচর আসছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী

শিলচর (অসম), ৮ এপ্রিল (হি.স.) : বরাক উপত্যকায় বিজেপির পালে হাওয়া তুলতে আগামী ১১ এপ্রিল নির্বাচনি সমাবেশে অংশগ্রহণ করতে আসছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিন মাস আগে যে মাঠে জনসভার আয়োজন করা হয়েছিল সেই রামনগরেই চলছে এবারের সমাবেশস্থল প্রস্তুতের কাজ।

বিজেপির জেলা কমিটির সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবারের জনসভায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আসবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং, মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল, নেডা-র আহ্বায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী ড. হিমন্ত বিশ্বশর্মা, অসমে নির্বাচনি পর্যবেক্ষক ড. মহেন্দ্র সিং-সহ গেরুয়া ব্রিগেডের অনেক তাবড় তাবড় নেতা। কাছাড় বিজেপির পক্ষে এই খবর জানিয়ে বলা হয়েছ, মূলত বরাক উপত্যকার শিলচর এবং করিমগঞ্জ আসনে বিজেপির দুই প্রার্থীর পক্ষে হাওয়া তুলতে আসছেন সপার্ষদ প্রধানমন্ত্রী। প্রস্তাবিত জনসভাকে সফল করতে বরাকের তিন জেলার মণ্ডল কমিটি থেকে গ্রাম পঞ্চায়েত কমিটি থেকে কর্মী জড়ো করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

গত ৪ জানুয়ারি ওই একই মাঠেই ভাষণ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেদিন প্রায় তিন লক্ষের বেশি জনসমাগম হয়েছিল। আগামী বৃহস্পতিবারের নির্বাচনি সমাবেশে ওই সংখ্যা অতিক্রম করবে বলে আশা করছে জেলা বিজেপি। অসমে বিজেপি যতটি আসন পাবে বলে দাবি করেছে, তার মধ্যে বরাকের শিলচর এবং করিমগঞ্জ দুটি আসনও রয়েছে। তাই কেন্দ্রও রাজ্য স্তরের নেতারা প্রচার অভিযানে কোনও খামতি রাখতে চাইছেন না। এবার বরাকের দুই আসনের মধ্যে শিলচর আসনের প্রার্থী প্রয়াত বিধায়ক বিমলাংশু রায়ের ছেলে তথা প্রদেশ বিজেপির অন্যতম মুখপাত্র ডা. রাজদীপ রায় এবং করিমগঞ্জে অসম বিধানসভার উপাধ্যক্ষ কৃপানাথ মালাহ।

দ্বিতীয় দফার ভোট আগামী ১৮ এপ্রিল দুজনের ভাগ্য নির্ধারণ করবেন গণদেবতারা। এবারের লোকসভা নির্বাচনে শিলচরে মোট পোলিং ১৪৬১ স্টেশনে মোট ১১,৯১,২৮৯ ভোটার তাঁদের মতাধিকার প্রয়োগ করবেন। তাঁদের মধ্যে পুরুষ ৬,১৩,৯৩১ জন, মহিলা ভোটার ৫,৭৭,২৮৩ এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ৭৫ জন। এই আসনে ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থী সুস্মিতা দেব ৪২.০৭ হারে ৩,৩৬,৪৫১টি ভোট পেয়েছিলেন। বিপরীতে বিজেপি প্রার্থী কবীন্দ্র পুরকায়স্থ ৩৭.৬৬ হারে ৩,০১,২১০টি ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে এবং সৰ্বভারতীয় সংযুক্ত গণতান্ত্ৰিক মোৰ্চা (এআইইউডিএফ)-র কুতুব আহমেদ মজুমদার ১০.৬৯ হারে ৮৫,৫৩০ ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থানে ছিলেন। এই আসনে বিজেপি প্রার্থী হিসেবে একমাত্র কবীন্দ্র পুরকায়স্থই তিনবার বিজয়ী হয়েছিলেন। ১৯৯১, ১৯৯৮ এবং ২০০৯ সালে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন কবীন্দ্র। কিন্তু ২০১৪ সালে সুস্মিতা দেবের কাছে পরাজিত হয়ে যান তিনি।

এদিকে করিমগঞ্জ আসনে এবার মোট ১,৭২১টি পোলিং স্টেশনে মোট ভোটার ১৩,৩৮,০০৫ ভোটার রয়েছেন। এঁদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬,৯৬,৬৩৮ জন, মহিলা ভোটার ৬,৪১,৩৪৯ এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন ১৮ জন। এই আসনে ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে সৰ্বভারতীয় সংযুক্ত গণতান্ত্ৰিক মোৰ্চা (এআইইউডিএফ) দলের হয়ে রাধেশ্যাম বিশ্বাস বিজয়ী হয়েছিলেন। ভারতীয় জনতা পার্টির পক্ষে দুই বার করিমগঞ্জ আসন দখল করেছিলেন দ্বারকানাথ দাস ১৯৯৬ এবং ১৯৯১ সালে। এর পর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি বিজেপি। এবার সর্বশক্তি নিয়ে মাঠে নেমেছে গেরুয়া বাহিনী।

এবারের নির্বাচনে বিজেপি শিলচর এবং করিমগঞ্জে প্রত্যেক শ্রেণির সমান ভোট পাবে বলে আশা করছেন দলীয় প্রার্থীরা। শিলচর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত সাতটি বিধানসভার এলাকার মধ্যে ছয়টি বিজেপির দখলে। এগুলো শিলচর, সোনাই, ধলাই (তফশিলি), উধারবন্দ, বড়খলা, কাটিগড়া। একমাত্র লক্ষ্মীপুর আসনে কংগ্রেসের বিধায়ক রয়েছেন। বিপরীতে করিমগঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রের অধীনে রয়েছে ৮টি বিধানসভা এলাকা। এগুলোর মধ্যে রাতাবাড়ি (তফশিলি) এবং পাথারকান্দি বিজেপির দখলে। রাতাবাড়ির বিধায়ক তথা বিধানসভার উপাধ্যক্ষ কৃপানাথ মালাহ করিমগঞ্জ সংসদীয় আসনে বিজেপি প্রার্থী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *