BRAKING NEWS

যাত্রাপুরে এক পরিবারের নয়জন হারিয়ে ফেললেন মানসিক ভারসাম্য, উন্মত্ততায় আতঙ্কে প্রতিবেশীরা

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩০ জানুয়ারী৷৷ রহস্যজনক ভাবে একই পরিবারের নয়জন সদস্য উন্মাদ হয়ে পাগলামী করছে৷ ভয়ঙ্কর সব কীর্তি করছে পরিবারের ছোট থেকে বড় সকলেই৷ আতঙ্কে রয়েছেন প্রতিবেশীরা৷ পুলিশ প্রশাসন থেকে উন্মাদ নয়জনকে হাসপাতালে পৌঁছানোর চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়েছে৷ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোনামুড়ার যাত্রাপুর এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে৷ সংবাদে প্রকাশ, সোনামুড়া মহকুমার যাত্রাপুর থানার অধীন থলিবাড়ি এডিসি বিলেজের উলুখলা গ্রামের বাসিন্দা গৌরচন্দ্র ত্রিপুরা৷ তার বাড়ির প্রত্যেক সদস্যই উন্মাদ হয়ে পাগলামী করছে গত ছয়দিন ধরে৷ খবর পেয়ে ওই বাড়িতে ছুযে যায় পুলিশ, টিএসআর, ফায়ার সার্ভিস সহ ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীদের একটি টিম৷ কোন ভাবেই ওই পরিবারের মানসিক ভারসাম্যহীন নয়জনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যায়নি৷


এলাকাবাসী ও ওই পরিবারের নিকটাত্মীয়দের মাধ্যমে জানা গিয়েছে, গত চবিবশ জানুয়ারী ওই পরিবারের নমিতা ত্রিপুরা (১৪) নামে এক কিশোরী প্রথমে পাগলামী শুরু করে৷ পরবর্তী সময়ে একে একে গোটা পরিবারের শিশু থেকে বয়স্ক সবারই একই অবস্থা৷ তারা হল, লক্ষ্মী ত্রিপুরা (৪০), শুক্লা ত্রিপুরা (২৪), রাজেন্দ্র ত্রিপুরা (৩০), সরস্বতী ত্রিপুরা (১৭), পূর্ণিমা ত্রিপুরা (১৮), উত্তম ত্রিপুরা (৭), রাইম ত্রিপুরা (৫) এবং পুস্প কুমার ত্রিপুরা (১৫)৷ তারা প্রত্যেকই আক্রান্ত৷ মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে উন্মাদ পাগলামী করছে৷


ওরা এতটাই উন্মাদ হয়ে যে, কখনও পুকুরের জলে গিয়ে ঝাপ দিচ্ছে, কখনও দা-লাঠি কিংবা হাতের কাছে যাই পায় তা নিয়ে মানুষকে আক্রমণ করতে ছুটে যায়৷ তাতে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছেন প্রতিবেশীরা৷ অনেকে বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্রও চলে গিয়েছেন৷ এই ব্যাপারে খবর দেওয়া হয় যাত্রাপুর থানায়৷ যাত্রাপুর থানার এসআই রথিন্দ্র দেববর্মা, এসআই দীপঙ্কর দেবনাথের নেতৃত্বে কয়েক গাড়ী পুলিশ ও টিএসআর ওই বাড়িতে পৌঁছে৷ স্থানীয় জনগণ ও নিকটাত্মীয়দের সাথে নিয়ে পুলিস ও টিএসআর জওয়ানরা মানসিক ভারসাম্যহীন নয়জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে৷ কিন্তু, কোনভাবেই তাদের বাগে আনা সম্ভব হয়নি৷ পরে নিকটাত্মীয়রা বাধা দেয় এই বলে যে তাদের হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করানো সম্ভব হবে না৷ বরং তারা স্থানীয় ওঝা বৈদ্যের সাথে যোগাযোগ করে কোনও না কোনও ভাবে তাদের স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হবে৷ নিকটাত্মীয়দের কাছে থেকে এই বক্তব্য শোনার পর পুলিশ ও মেডিক্যাল টিম ওই বাড়ি থেকে চলে যান৷
এদিকে, উন্মাদ ওই নয়জনকে ঘিরে এলাকাবাসীরা ভীষণ চিন্তায় রয়েছেন৷ কখন কি করে ফেলেন তার কোন ঠিক টিকানা নেই৷ কখনো ধারালো অস্ত্র নিয়ে মানুষের উপর হামলা করতে যায়, আবার কখনো আত্মহননের জন্য জলে ঝাপ দেয়৷ যেকোনও সময় যেকোন ধরনের অঘটন ঘটে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী৷ এই পরিস্থিতিতে দ্রুত প্রশাসনের তরফ থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন এলাকাবাসী৷ অবাক করার ঘটনা হল কীভাবে তারা একসাথে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেললেন সেটাই প্রশ্ণ৷ কুসংস্কারাচ্ছন্ন কিছু লোকের বক্তব্য প্রেতাত্মা ভর করেছে৷ আবার কেউ বলছে, ডাইনী ভর করেছে৷ এলাকার ওঝা বৈদ্যের সাথে যোগাযোগ করে তা স্পষ্ট করতে চাইছে কুসংস্কারাচ্চন্ন জনগণ৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *