মুম্বাই, ৩১ ডিসেম্বর (হি.স.) : গত কয়েকদিন ধরে হাসপাতালে ভরতি অভিনেতা কাদের খান। এই অবস্থায় হঠাৎ করেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন অভিনেতা। বিভিন্ন জায়গা থেকে শোকবার্তাও আসতে থাকে। কিন্তু, এই খবর একদমই সত্যি নয় বলে জানালেন কাদের খানের ছেলে সরফরাজ খান। তিনি বলেন, ‘এই খবর কোনওভাবেই সত্যি নয়। বাবা এখন হাসপাতালে আছেন।’
সূত্রের খবর, নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন ৮১ বছরের অভিনেতা। শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন তিনি। তা ছাড়াও তাঁর শরীরে বাসা বেঁধেছিল ডায়াবেটিস-সহ একাধিক রোগ। সম্প্রতি শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে রাখা হয় স্পেশাল ভেন্টিলেশনে। জানা যায়, কানাডাতে ছেলে সরফরাজ ও পূত্রবধূ সহিষ্ঠার সঙ্গে রয়েছেন তিনি। তবে কানাডার কোন শহরে অভিনেতা রয়েছেন সেই বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু জানা যায়নি। রবিবার রাতে হঠাৎই খবর ছড়ায় অভিনেতা কাদের খানের মৃত্যু হয়েছে। সোশ্যাল সাইটগুলিতে নানা গুজবের পর শেষে অল ইন্ডিয়া রেডিওর টুইটার বার্তায় অভিনেতার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়। সেই টুইটের সূত্র ধরেই সংবাদ মাধ্যমগুলিতে কাদের খানের মৃত্যুর খবর প্রচারিত হতে শুরু করে। সোমবার অভিনেতার ছেলে জানান, সব খবরই গুজব। তাঁর বাবা এই মুহূর্তে ভেন্টিলেশনে রয়েছেন।
সরফরাজ জানিয়েছেন, গত কয়েক মাসে কাদেরের শারীরিক অবস্থার ক্রমেই অবনতি হচ্ছিল। শ্বাসকষ্ট বেড়েছিল সাঙ্ঘাতিক ভাবে। নিউমোনিয়ার লক্ষণও ধরা পড়ে। প্রথমে সাধারণ ভেন্টিলেশনে রাখা হলেও, বর্তমানে তাঁকে বিশেষ ভেন্টিলেশনে (BiPAP ventilator) রাখা হয়েছে। ‘প্রোগ্রেসিভ সুপ্রানিউক্লিয়ার পলসি’ (PSP)-এর উপসর্গও দেখা দিয়েছিল অভিনেতার। এটি স্নায়ুঘটিত একটি জটিল রোগ। এই রোগে আক্রান্ত হলে রোগী শরীরের ভারসাম্য রাখতে পারেন না, হাঁটার গতি কমতে থাকে, চোখের সমস্যা দেখা দেয়, চিন্তাশক্তি ধীরে ধীরে কমতে থাকে।
১৯৩৭ সালের ২২ অক্টোবর কাবুলে জন্ম অভিনেতা কাদের খানের। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে প্রথমে শিক্ষকতাকেই পেশা হিসেবে বেছে নেন। পাশাপাশি থিয়েটারের জন্য স্ক্রিপ্ট লিখতেন, অভিনয়ও করতেন। রূপোলি জগতে প্রবেশ অভিনেতা দিলীপ কুমারের হাত ধরে। হিন্দি ও উর্দু মিলিয়ে তিনশোরও বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন কাদের। ১৯৭৩ সালে রাজেশ খন্নার সঙ্গে তাঁর প্রথম অভিনীত ছবি ‘দাগ’। ১৯৭০ সাল থেকে ১৯৮০ পর্যন্ত একাধিক বলি ছবিতে স্ক্রিন রাইটারের কাজ করেছেন তিনি। রাজেশ খন্না, জিতেন্দ্র, অমিতাভ বচ্চন থেকে অনিল কপূর, গোবিন্দা, হালে সলমন খান, অর্জুন কপূর— বলিউডের প্রায় সমস্ত অভিনেতার সঙ্গেই তাঁর কাজ করার রেকর্ড রয়েছে। তাঁর অভিনীত শেষ ছবি ‘হো গ্যায়া হ্যায় দিমাগ কা দহি’।