নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩০ অক্টোবর৷৷ অন্ধকার ভবিষ্যতের আশংকায় আগরতলার রাজপথে এডহক ভিত্তিতে নিযুক্ত ১০৩২৩ শিক্ষকদের

বিদ্রোহ আছড়ে পড়লো৷ বর্তমান এবং পূবর্তন সরকারকে তাঁরা কাঠগড়ায় দাঁড় করালো৷ তাদের চাকুরিচ্যুতির জন্য দায়ি পূর্বতন সরকারের মন্ত্রি এবং পদস্থ আধিকারীকদের তদন্ত ক্রমে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার দাবি জানালেন শিক্ষকরা৷ পাশাপাশি, তাঁদের পেটে লাথি পড়লে রাজ্য সরকারও টিকে থাকতে পারবেনা বলে হুশিয়ারি দিলেন চাকুরিচ্যুতরা৷ মঙ্গলবার এডহক ভিত্তিতে নিযুক্ত ১০৩২৩ শিক্ষকদের একটি সংগঠন রাজধানী আগরতলায় বিক্ষোভ মিছিল সংগঠিত করেছে৷
আগামী ১ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে শিক্ষক মামলার শুনানি হবে৷ দুই সদস্যক ডিভিশন বেঞ্চ থেকে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে মামলাটি স্থানান্তরিত হতেই এডহক ভিত্তিতে নিযুক্ত শিক্ষকরা আতঙ্কে ভুগছেন৷ তাদের ধারনা, ১ নভেম্বরই এই মামলার চূড়ান্ত ফয়সলা হবে৷ তাদের আতঙ্কের পেছনে কারণ হল, সম্প্রতি শিক্ষা দপ্তর এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে তাদের ইএল সহ বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে৷ ফলে, তাঁরা ধরে নিচ্ছে হয়তো বা ১ নভেম্বরের পর তাদের চাকুরি পাকাপাকি ভাবে সমাপ্ত হচ্ছে৷
এরই মধ্যে, চাকুরিচ্যুত শিক্ষকদের একাংশ সরকারের প্রতি আস্থা রেখে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করছেন৷ কিন্তু, অপর আরেকটি অংশ রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধেই আওয়াজ তুলছে৷ মঙ্গলবার মিছিল থেকে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধেও আওয়াজ উঠেছে৷ এদিন বিদ্রোহী শিক্ষকরা পূর্বতন এবং বর্তমান রাজ্য সরকারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন৷ এদিন শিক্ষকদের পক্ষ থেকে দাবি তোলা হয়েছে, তাদের চাকুরিচ্যুতির জন্য যাঁরা দায়ি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে৷ কারণ, অন্যের গাফিলতির দায় তাদের বহন করতে হচ্ছে৷ জনৈক শিক্ষকের কথায়, পূর্বতন সরকারের আমলে তাদের চাকুরি দেওয়ার ক্ষেত্রে ভুল নিয়োগ নীতি এখন ১০৩২৩ শিক্ষকদের জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ তাঁর বক্তব্য, জেনে বুঝে তাদেরকে পূর্বতন সরকার অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিয়েছে৷ তাই, তদন্তক্রমে তৎকালীন সরকারের মন্ত্রী এবং পদস্থ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে৷ এদিন বিদ্রোহী শিক্ষক শিক্ষিকাদের পক্ষ থেকে সিবিআই তদন্তেরও দাবি জানানো হয়েছে৷
এদিকে, পূর্বতন সরকারের পাশাপাশি বর্তমান বিজেপি-আইপিএফটি জোট সরকারকেও হুশিয়ারি দিয়েছেন চাকুরিচ্যুত শিক্ষকরা৷ এদিন মিছিলে অংশ নেওয়া জনৈক শিক্ষক বিজেপি – আইপিএফটি জোট সরকারকে ভিশন ডকুমেন্টের কথা মনে করিয়ে দেন৷ তাদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, সে কথাও মনে করিয়ে দেন তিনি৷ তাঁর হুশিয়ারি, শিক্ষক শিক্ষিকাদের পেটে লাথি পড়লে সরকার টিকে থাকবে না৷ তিনি বুঝিয়ে দিতে চেয়েছেন, চাকুরিচ্যুত শিক্ষকদের শিক্ষক পদে পূনঃনিযুক্তি কিংবা বিকল্প ব্যবস্থা না করা হলে বিজেপি আইপিএফটি জোট সরকার টিকে থাকতে পারবে না৷ এদিন তাদের বিদ্রোহে মনে হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টে মামলার ফয়সলা হলে রায় তাদের বিরুদ্ধে গেলে পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করতে পারে৷