BRAKING NEWS

পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়নপত্র দাখিল নিয়ে শরিকি বিবাদ, বিজেপি-আইপিএফটির সংঘর্ষ বক্সনগর টাকারজলা ও গোলাঘাটিতে, বাড়ি ঘরে হামলা, ভাঙচুর পার্টি অফিস, গুরুতর জখম এসডিপিওসহ ১৩ পুলিশকর্মী

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১০ সেপ্ঢেম্বর৷৷ ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের উপ নির্বাচনে মনোনয়ন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র শরিক দল বিজেপি ও আইপিএফটির মধ্যে সংঘর্ষে বক্সনগর, টাকারজলা এবং গোলাঘাটি বিধানসভা কেন্দ্রের পরিস্থিতি ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে৷ সোমবার সকালে বক্সনগরে সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে পুলিশ শূণ্যে চার রাউন্ড গুলি চালাতে হয়েছে৷ পাশাপাশি পুলিশ টিয়ার গ্যাসও ছুঁড়েছে৷ সংঘর্ষ চলাকালীন তিনটি বোমা বিস্ফোরণ হয়েছে৷ এই সংঘর্ষে এসডিপিও সহ ১৩ জন পুলিশ কর্মী আহত হয়েছে৷ এদিন এই সংঘর্ষের রেশ টাকারজলা এবং গোলাঘাটি বিধানসভা কেন্দ্রেও ছড়িয়ে পড়েছে৷ সন্ধ্যায় আইপিএফটি কর্মীরা টাকারজলা বিধানসভা কেন্দ্রের অধীন দুইটি বিজেপি পার্টি অফিসে ভাঙচুর চালিয়েছে৷ পাশাপাশি গোলাঘাটি বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক ধীরেন্দ্র দেববর্মার বাড়িতেও আইপিএফটি কর্মীরা ভাঙচুর করেছে বলে অভিযোগ৷ শুধু তাই নয়, ওই বিধানসভা কেন্দ্রের অধীন দুইটি বিজেপি পার্টি অফিসও আইপিএফটি কর্মীরা ভাঙচুর করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে৷ ওই এলাকাগুলিতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে৷

এদিন বক্সনগর বিধানসভা কেন্দ্রে অধীন পঁুটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতে মনোনয়ন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিজেপি ও আইপিএফটির মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে৷ পুলিশের কাছে সংঘর্ষ হতে পারে বলে আগাম খবর ছিল৷ তাই,বক্সনগর ব্লক সকাল থেকেই নিরাপত্তার চাদরে মোড়ে দিয়েছিল পুলিশ৷ এদিন সকাল থেকেই বিজেপি কর্মীরা বক্ল চত্বরে জোড়ো হন৷ ফলে পুলিশ বিজেপি কর্মীদের সেখান থেকে তাড়ানোর চেষ্টা করে৷ অভিযোগ, তাতে বিজেপি কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট, পাটকেল ছুঁড়তে শুরু করে৷ পুলিশও পাল্টা লার্ঠি চার্জ করলে আববাস খান নামে জনৈক ব্যক্তি আহত হন৷ তিনি বর্তমানে হাঁপানিয়া স্থিত ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন রয়েছেন৷ এদিকে, আইপিএফটির কর্মীরা দলবল নিয়ে ব্লক অফিসের কাছাকাছি আসতেই বিজেপি কর্মীরা তাদের বাঁধা দেয়৷ তাতে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়৷ আইপিএফটি কর্মীরা উত্তেজিত হয়ে গাড়ি ভাঙচুর চালায়৷ তাতে, পরিস্থিতি ভয়ংকর রূপ ধারণ করে৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুুলিশ শূণ্যে চার রাউন্ড গুলি চালায় এবং টিয়ার গ্যাস ছঁুড়ে৷ তখনই ঘটনাস্থল থেকে সামান্য দূরে পরপর তিনটি বোমা বিস্ফোরণ হয়৷ সংঘর্ষের খবর পেয়ে সিপাহীজলা জেলার পুলিশ সুপার ঘটনাস্থলে ছঁুটে যান৷ পুলিশের সহায়তায় আইপিএফটি কর্মীরা প্রার্থীদের নিয়ে মনোনয়ন পত্র জমা দিতে যান৷ কিন্তু, মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার সময় সমাপ্ত হয়ে যাওয়ায় এদিনের মতো আইপিএফটি প্রার্থীরা মনোনয়ন পত্র জমা দিতে পারেননি৷

এদিনের সংঘর্ষের ঘটনায় বিজেপি এবং আইপিএফটির কোনও কর্মীই আহত হননি৷ কিন্তু, সংঘর্ষ মোকাবিলা করতে গিয়ে এসডিপিও সহ ১৩ জন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন৷ অনেক চেষ্টার পর পঁুটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতে এলাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় পুলিশ৷ কিন্তু, এই সংঘর্ষের রেশ এখানেই থেমে থাকেনি৷ অভিযোগে জানা গেছে, এদিনের সংঘর্ষের ঘটনায় আইপিএফটি কর্মীদের ক্ষোভ টাকারজলা এবং গোলাঘাটি বিধানসভা এলাকায় আছড়ে পড়ে৷ জানা গেছে, সন্ধ্যা নাগাদ টাকারজলা বিধানসভা কেন্দ্রের অধীন দুইটি বিজেপি পার্টি অফিসে আইপিএফটি কর্মীরা ভাঙচুর করেছে৷ শুধু তাই নয়, গোলাঘাটি বিধানসভা কেন্দ্রেও দুইটি বিজেপি পার্টি অফিসে আইপিএফটি কর্মীরা ভাঙচুর করেছে৷ উত্তেজিত আইপিএফটি কর্মীরা বিজেপি পার্টি অফিস ভাঙচুর করেই থেমে থাকেনি৷ তারা গোলাঘাটি বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক ধীরেন্দ্র দেববর্মার বাড়িতেও ভাঙচুর করেছে বলে অভিযোগ৷ ওই সময় তিনি বাড়িতে ছিলেন না৷ বাড়ি ফিরে সমস্ত ঘটনা তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন৷ খবর পেয়ে পুলিশ তাঁর বাড়িতে ছঁুটে যায়৷ জানা গেছে, তাঁর বাড়ির আশপাশে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে৷

শাসক জোটের শরিক দলের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় সিপাহীজলা জেলা জুড়ে পরিস্থিতি থমথমে হয়ে রয়েছে৷ পুনরায় দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধতে পারে এমনও আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ পুলিশের দাবি, আইন শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *