গুয়াহাটি, ১৫ আগস্ট ২০১৭, (হি.স) : কোনও প্রকৃত ভারতীয় নাগরিক জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) থেকে বাদ পড়বেন না। এনআরসি-র সম্পূর্ণ খসড়া থেকে যাঁদের নাম ছুটেছে আজ ফেরতাঁদের শংকিত, ভীত, উদ্বিগ্ন না হওয়ার অভয়বাণী শুনিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল। আজ বুধবার স্থানীয় খানাপাড়ায় পশু চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় ময়দানে রাজ্য সরকার কর্তৃক আয়োজিতস্বাধীনতা দিবসের মূল অনু্ষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে রাজ্যবাসীর উদ্দেশে ভাষণ দিচ্ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী সনোয়াল। ভাষণের আগে তিনি তেরঙ্গা জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেছেন। গ্রহণ করেছেন অসমপুলিশ, স্কাউট অ্যান্ড গাইডস, এনসিসি, এসডিআরএফ প্রভৃতি সংস্থার কুচকাওয়াজ।
ভাষণের শুরুতে রাজ্যবাসীকে স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি জাতির পিতা মহাত্মা গান্ধী এবং বীর শহিদদের স্মরণ করেছেন মুখ্যমন্ত্ৰী। স্বাধীনতা সংগ্রামের অসমের মহান সেনানিমণিরাম দেওয়ান, কুশল কোঁওর, পিয়ালি ফুকন, মুকুন্দ কাকতি, কনকলতা বরুয়া, ভোগেশ্বরী ফুকননি-সহ বিভিন্ন বীরকে স্মরণ করে তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। শ্রদ্ধা জানানদেশের নিরাপত্তার সঙ্গে জড়িত সর্বস্তরের বাহিনীকে। তাছাড়া দেশের ভূখণ্ড তথা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় যে সব জওয়ান আত্মবলিদান দিয়েছেন তাঁদের প্রতিও আন্তরিক উষ্ণ শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করেনতিনি। এ প্রসঙ্গে তিনি ভূপেন হাজরিকার একটি গানের কয়েকটি পংক্তিও শুনিয়েছেন। এর পরই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের সর্বোচ্চ আদালতের তত্ত্বাবধানে ভারতের রেজিস্ট্রার জেনারেল অব ইন্ডিয়া,কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের যৌথ সহযোগিতায় ঐতিহাসিক দলিল এনআরসি-র যে সম্পূ্র্ণ খসড়া প্রকাশ হয়েছে আজ স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে ফের সে সম্পর্কে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাছাড়া বরাক-ব্রহ্মপুত্র, পাহাড়-সমতলের জনসাধারণ যেভাবে সহায়তা করেছেন এজন্য তিনি সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতাও ব্যক্ত করেছেন। এছাড়া এনআরসি তৈরি করতে যে ৫৫ হাজার আধিকারিক-কর্মচারী, ৭০হাজার পুলিশকর্মীর নিষ্ঠা ও দায়বদ্ধতার কথাও শুনিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ২০১৬ সালে রাজ্যের ক্ষমতা গ্রহণের পর অসমকে বিদেশিমুক্ত করার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এ পরিপ্রেক্ষিতে এনআরসি হবে এক গুরুত্বপূর্ণ রক্ষাকবচ। দৃঢ়তার সঙ্গে সনোয়ালবলেন, খসড়া-ছুটরা ভয় পাবেন না, কোনও প্রকৃত ভারতীয়ের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হবে না। যা প্রকাশ হয়েছে তা চূড়ান্ত নয়, খসড়া। কোনও প্রকৃত ভারতীয় নাগরিকের নাম যাতে চূড়ান্ত তালিকাথেকে বাদ না পড়ে তা সুনিশ্চিত করতে অসম সরকার সংকল্পবদ্ধ। তবে জানান, নাগরিকপঞ্জিতে যাতে কোনও বিদেশির নাম অন্তর্ভুক্ত হতে না পড়ে সে দিকেও কড়া নজর রাখা হচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের ক্ষমতা গ্রহণের সময় তাঁর উপলব্ধি হয়েছিল এ সরকারের প্রতি জনসাধারণের আস্থা, বিশ্বাস ও প্রত্যাশা খুব বেশি। তাই জনতার আশা-প্রত্যাশা পূরণ করতে সর্বতোপ্রকারেপ্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। বলেন, তাঁর সরকারের অন্যতম লক্ষ অসমবাসীর স্বাভিমান ও মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রক্ষা। রাজ্যের বরাক-ব্রহ্মপুত্র, পাহাড়-সমতলে বসবাসকারী সব ধর্মাবলম্বী, ভাষা-ভাষী মানুষেরমধ্যে ঐক্য, সম্প্রীতি ও সমন্বয় হল তাঁর সরকারের মূল চালিকাশক্তি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সব-কা সাথ সব-কা বিকাশ-এর আদর্শ ও প্রমূল্যবোধকে অনুপ্রেরণার মূলমন্ত্র হিসেবে গ্রহণ করেসর্বশ্রেণির জনসাধারণের সম-উন্নয়ন ঘটানোর সংকল্প নিয়ে কাজে ঝাঁপিয়ছেন।
এ প্রসঙ্গে তাঁর সরকারের কাজকর্মের খতিয়ানও তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, জনতার আস্থা নিয়েই তাঁর সরকার এগিয়ে চলেছে। অসমকে একটি দুৰ্নীতিমুক্ত, সন্ত্ৰাসমুক্ত, প্ৰদূষণ ও বিদেশিমুক্ত রাজ্যহিসেবে গড়ে তুলতে তাঁর সরকার বদ্ধপরিকর। অন্যান্য দিনের মতো আজও তিনি জোরের সঙ্গে বলেন, ভ্রষ্টাচার-দুৰ্নীতির ব্যাপারে এখনও তিনি শূন্য সহনশীল। দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রথম থেকে যে কড়াঅবস্থান নিয়েছিলেন তা আগামীতেও থাকবে। এ প্রসঙ্গে তিনি রাজ্যের সর্বকালের সর্ববৃহৎ এপিএসসি কেলেংকারির বিষয় তুলেন। বলেন, ইতিমধ্যে এপিএসসি-র চেয়ারম্যান (তদানীন্তন) ও সদস্য-সহ৫২ জন গ্যাজেটেড অফিসারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিজেপি জোট সরকারের আমলে গত দুবছরে দুর্নীতির হার বহু কমেছে। রাজ্যের প্রশাসন ব্যবস্থাকে স্বচ্ছ, সংবেদনশীল, দায়বদ্ধ এবংদুর্নীতিমুক্ত করে তুলতে তাঁর সরকার একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বলেও ভাষণে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল।
সরকারের কাজকর্মের খতিয়ান দিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত সিল করতে যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। শীঘ্রই অসমের সঙ্গে সাঁটা সীমান্ত সিলের কাজ সম্পূৰ্ণ হয়ে যাবে। বলেন,অসম চুক্তির বিভিন্ন দফা রূপায়ণের কাজ চলছে। সরকার যে নতুন ভূমিনীতি গ্রহণ করছে তা খিলঞ্জিয়া (ভূমিপুত্র)-দের মাটি-ভিটে সুরক্ষিত থাকবে। রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির যথেষ্ট উন্নতহয়েছে। গত মে মাসে আলফার গুলিতে নিহত পুলিশ অফিসার ভাস্কর কলিতার প্রতিও গভীর শ্ৰদ্ধাঞ্জলি জানান মুখ্যমন্ত্ৰী।
মুখ্যমন্ত্রী এছাড়া বলেন, রাজ্যে ১০ কোটি গাছের চারা রোপণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ইতিমধ্যে বিভিন্ন স্থানে রোপণ হয়েছে চার কোটি ৫০ লক্ষ গাছের চারা। জাতীয় অভয়ারণ্য, সংরক্ষিতবনাঞ্চলের ভূমি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা, গন্ডারের চোরাশিকার উল্লেখযোগ্যভাবে হ্ৰাস পেয়েছে বলে জানিয়ে বলেন, কাজিরঙার বন সুরক্ষাকৰ্মীদের প্ৰদান করা হয়েছে অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র। হিসাবদিয়ে বলেন, গত দু বছরে ১৭০ জন চোরাশিকারিকে গ্ৰেফতার করা হয়েছে। চোরাশিকারিদের বিচার প্ৰক্ৰিয়া ত্বরান্বিত করতে ১০টি ফাস্টট্র্যাক কোর্ট স্থাপন করা হয়েছে। তাছাড়া কাজিরঙায় ৩৩টিহাইল্যান্ড স্থাপন হয়েছে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী।
৭২-তম স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, অ্যাক্ট-ইস্ট পলিসির ফলে অসম-সহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলে এক নতুন গতি এসেছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্ট শিল্পপতি বিনিয়োগ করছেন রাজ্যে।জানান, গুয়াহাটি বিমানবন্দরের নতুন টাৰ্মিনাল নিৰ্মাণকাৰ্য শুরু হয়েছে। গুয়াহাটিতে ভুটান-বাংলাদেশের বাণিজ্যিক দূতাবাস স্থাপন হয়েছে। রাজ্যের ২৫ লক্ষ গ্ৰামীণ পরিবারের বাড়িতে পাকাশৌচালয় নিৰ্মাণ করা হয়েছে। পূৰ্ববর্তী সরকারের আমলে ইন্দিরা আবাসের অসম্পূৰ্ণ তিন লক্ষ গৃহ সম্পুৰ্ণ হয়েছে। প্ৰধানমন্ত্ৰী আবাস যোজনার এক লক্ষ ৯৮ হাজার গৃহ নিৰ্মাণের কাজ চলছে। এছাড়ারাজ্যের সব গ্রামে বিদ্যুতায়নের ব্যবস্থা হচ্ছে। সৌভাগ্য প্রকল্পের অধীনে প্ৰতিঘরে বিনামূল্যের বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ চলছে। বলেন, আগামী দু বছরের সময়সীমায় রাজ্যের ৩২.৫২ লক্ষ পরিবারকেকৰ্মসংস্থাপনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। ১৯ লক্ষ পরিবারকে বিনামূল্যের রান্নার গ্যাস সরবরাহ করা হয়েছে। গ্ৰামাঞ্চলে ৯,৮৪২ কিলোমিটার রাস্তা নিৰ্মাণে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ১,০০০টিকাঠের সেতুকে পাকা করার লক্ষ হাতে নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ২০০টি কাঠের সেতুকে পাকা করার কাজ শুরু হয়ে হয়েছে। অন্যদিকে রাজ্যে জাতীয় সড়কের বর্তমান দৈর্ঘ্য ৩,৮০০ থেকে ৭,০০০কিলোমিটার সম্প্ৰসারণ করা হয়েছে। এছাড়া রাজ্যের ১,৮৪৪ কিলোমিটার পূর্ত সড়ককে জাতীয় সড়কে উন্নীত করা হবে বলে কেন্দ্রীয় সরকার ঘোষণা করেছে। ব্ৰহ্মপুত্ৰের ওপর বগিবিল-কলিয়াভোমরায় দুটি সেতু তৈরির কাজও চলছে। মাজুলির যাতায়াত ব্যবস্থা সুষ্ঠু করতে চারটি নতুন ফেরিসেবা চালু করা হয়েছে। ব্ৰহ্মপুত্ৰের বুকে একটি নতুন রো-রো জাহাজ পরিষেবাও আরম্ভহয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী তাঁর ভাষণে জানান, ৩০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়সাপেক্ষে কৃষকদের আয় দুগুণ বৃদ্ধির পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। প্ৰতিটি গ্রামের কৃষক-গোষ্ঠীকে ভরতুকির ট্র্যাক্টর প্রদান করা হয়েছে।রাজ্যে ১৪ লক্ষ সয়েল হেল্থ কাৰ্ড বিতরণ করা হয়েছে। মাছের উত্পাোদন গত বছরের তুলনায় ২০ হাজার মেট্ৰিকটন বেড়েছে।
ভাষণে তিনি ২০ অনূর্ধ্ব বিশ্ব অ্যাথলেটিক্সে সোনার মেয়ে হিমা দাসকে অসমিয়া নারীর ত্যাগ, কষ্ট, সহিষ্ণুতার প্ৰতীক বলে উল্লেখ করেছেন। তাছাড়া অংকুশিতা বোড়োর বিশ্ব যুব-মহিলা বক্সিঙেস্বৰ্ণপদক, চলচ্চিত্ৰ নিৰ্মাতা রিমা দাস অসমিয়া নারীর সৃষ্টিশীলতার নিদৰ্শন তুলে ধরেছেন বলে মন্তব্য করেন। নারী সমাজকে আরও সবল করতে কনকলতা মহিলা সবলীকরণ প্রকল্প গ্ৰহণেরকথাবলেছেন। জানান, রাজ্যের এক লক্ষ ২৬ হাজার আত্মসহায়ক গোষ্ঠীকে ২৫ হাজার টাকা করে প্ৰদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্ৰাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাৰ্থীদের তিন কোটি ৩৮ লক্ষ বিনামূল্যের পাঠ্যবই বিলি করা হয়েছে। তাছাড়া ৩৭ লক্ষ ৩৪ হাজার ছাত্ৰছাত্ৰীকে দেওয়া হয়েছে বিনামূল্যেরস্কুল ইউনিফৰ্ম। এক লক্ষ যুবক-যুবতীকে আৰ্থিক সাহায্য প্ৰদানের ব্যবস্থা, দেড় লক্ষ যুবক-যুবতীর কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা গ্ৰহণ করার পাশাপাশি ৫৯ হাজার পরিবারকে আৰ্থিক সাহায্য দেওয়াহয়েছে।
তিনি জানান, অসমে ১৯টি ক্যানসার কেয়ার হাসপাতাল নিৰ্মাণের কাজ আরম্ভ হয়েছে। বন্যা ও নদীভাঙন অসমের বহু পুরনো জ্বলন্ত সমস্যা। এই সমস্যা সমাধানের প্রক্রিয়া চলছে। সাম্প্রতিকবন্যায় নিহতদের নিকট আত্মীয়ের হাতে চার লক্ষ টাকা করে এককালীন সাহায্যের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সাংবাদিকদের কল্যাণেও তাঁর সরকার দায়বদ্ধ বলে জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ইতিমধ্যে ৩১ জন সাংবাদিকের পরিবারকে পাঁছ লক্ষ টাকা করে এককালীন সাহায্য দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া অবসরপ্ৰাপ্ত২০ জন সাংবাদিককে পেনশন প্রদান করা ছাড়াও আরও ২০ জন সাংবাদিককে মিডিয়া ফেলোশিপ প্ৰদান করা হয়েছে।
অম্বুবাচি মেলাকে আন্তৰ্জাতিক স্তরে নিয়ে যাওয়ার প্ৰয়াস তাঁর সরকার করছে। ৫০০টি খেলার মাঠকে উন্নীতকরণের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্য চলচ্চিত্ৰ পুরস্কার ফের প্রবর্তনকরা হয়েছে। রাজ্যের চলচ্চিত্ৰ শিল্পের জন্য নীতি প্ৰস্তুতের পরিকল্পনা চলছে বলে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে জানান মুখ্যমন্ত্ৰী।
চা শ্ৰমিকদের জন্য গৃহীত বহু পদক্ষেপের কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী। জানান, সাত লক্ষের বেশি শ্ৰমিককে চা বাগান ধন পুরস্কার মেলার মাধ্যমে ২,৫০০ টাকা করে তাঁদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে দেওয়াহয়েছে। চা বাগানের জন্য ৮০টি মোবাইল মেডিক্যাল ইউনিট চালু করা হয়েছে। ১০০টি বাগানে একটি করে হাইস্কুল নিৰ্মাণ, চা বাগানে প্ল্যান্টেশন লেবার অ্যাক্ট বাস্তবায়িত করা, চা বাগানের গর্ভবতীমহিলাদের পরিপুষ্টির জন্য ১২ হাজার টাকা করে এককালীন সাহায্য, ২০ হাজার লাইন সৰ্দারকে স্মাৰ্টফোন প্ৰদান, চা বাগানের রাস্তায় প্ল্যাভার্স ব্লক বসানোর পদক্ষেপ সরকার গ্রহণ করেছে বলেজানান মুখ্যমন্ত্রী।
এছাড়া রাজ্যের তফশিলি জাতি, তফশিলি জনজাতি এবং অন্যান্য পশ্চাদপদ শ্রেণির আর্থ-সামাজিক এবং শিক্ষাক্ষেত্রের বিকাশে গত বছর এক লক্ষ ২৩ হাজার ছাত্রছাত্রীকে প্রি-মেট্রিক এবং পোস্ট-মেট্রিক স্কলারশিপ দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। রাজ্যের সর্বাঙ্গীন বিকাশে তিনটি পাৰ্বত্য জেলা ছাড়াও বিটিএডি এবং বরাক উপত্যকার উন্নয়নে সরকার গুরুত্ব আরোপ করে এগিয়ে চলেছে।এছাড়া গুয়াহাটি মহানগরের উন্নয়নেও একগুচ্ছ পদক্ষেপের কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। জানান, শহরের উন্নয়নে ‘অমরূত’-এর বলে গুয়াহাটি, শিলচর, নগাঁও এবং ডিব্রুগড়ে ১৬টি প্রকল্প রূপায়ণকরা হয়েছে।
রাজ্যের ধর্মীয় ও ভাষিক সংখ্যালঘুদের আর্থ-সামাজিক সবলীকরণের জন্য সংখ্যালঘু অধ্যুষিত ২০টি জেলায় ২১টি মডেল আবাসিক বিদ্যালয় নির্মাণের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। সেভাবে দুই লক্ষ৫০ হাজারের বেশি সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রীকে গত বছর প্রি-মেট্রিক এবং পোস্ট-মেট্রিক স্কলারশিপ দেওয়ার পাশাপাশি সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় নয়টি মহিলা কলেজ স্থাপনের কথাও সরকার ঘোষণাকরেছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তাছাড়া, অন্ধবিশ্বাস আর কুসংস্কার দূর করতে ‘মানুষ মানুষের জন্য’ শীর্ষক এক প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল।