নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১১ আগষ্ট৷৷ নির্যাতিতার অভিযোগে সত্যতা থাকলেও মামলা নেয়নি পুলিশ৷ আর এই খবরে খুবই ক্ষুব্ধ হয়েছেন মহিলা
কমিশনের চেয়ারপার্সন৷ সরকার পরিবর্তনের পর নারী নির্যাতনের বীভৎস চিত্র প্রকাশ্যে আসায় মহিলা কমিশন সক্রিয় হয়েছে৷ মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন বর্ণালী গোস্বামী শনিবার বলেন, দেরিতে হলেও এক বীভৎস চিত্র সম্প্রতি রাজ্যবাসীর সামনে এসেছে৷ আমি নির্যাতিতা মেয়েটির উপর যে পাশবিক নির্মম অত্যাচার হয়েছে তার ভিডিও ফুটেজ দেখেছি৷ তাই অতিসত্বর কর্তব্যরত পুলিশ ও নীরব দর্শকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্তা নিতে রাজ্য পুলিশের ডিজিকে নির্দেশ দিতে হল মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সনকে৷
তিনি মুঙ্গিয়াকামী থানার কর্তব্যরত পুলিশ অফিসারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ণ তুলেন৷ বর্ণালী বলেন, এ ধরনের ঘটনা সমাজের অবক্ষয়ের বহিঃপ্রকাশ৷ নিন্দাজনক ঘটনার সঙ্গে যারা যুক্ত তারা যেন কেউই ছাড়া না পায় তার জন্য পুলিশের মহানির্দেশককে ব্যবস্থা নিতে বলেছিলেন বিধানসভার মুখ্যসচেতক কল্যাণী রায়৷ এদিকে মুঙ্গিয়াকামী থানার পুলিশ আরও দুই মূল আসামিকে গ্রেফতার করেছে৷ এ নিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিন আসামিকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ৷
উল্লেখ করা যেতে পারে, রাজ্যের প্রত্যন্ত এলাকা হাজরাপাড়া সিনিয়র বেসিক সুকলে মিড-ডে মিলের রান্না করতেন জেমিলি৷ বাম জামানার শেষদিকে তথা বিধানসভা নির্বাচনের তিনমাস আগে শুধুমাত্র বিরোধী দলের সমর্থক হওয়ায় জেমিলিকে মিড-ডে মিলের রান্নার দায়িত্ব থেকে বাদ দিয়ে দেন এলাকার প্রভাবশালী সিপিআইএম নেতা তথা ভিলেজ কমিটির প্রাক্তন সদস্য দশরথ রিয়াং৷ কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনের পর সরকার পরিবর্তন হওয়ার চারমাস পর গত ১৭ জুলাই বঞ্চিত উপজাতি মহিলা সুকলে গিয়ে সুকল কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চান তাঁকে কেন তাঁর কাছ থেকে ছাঁটাই করে দেওয়া হয়েছে৷ এ ব্যাপারে সুকল কর্তৃপক্ষ কোনও সঠিক উত্তর দিতে পারেননি৷ এদিকে এই খবর স্থানীয় ক্যাডার বাহিনীর কাছে পৌঁছতেই তারা মহিলাকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা নেয়৷ আর সেই মোতাবেক মহিলার স্বামীকে ঘরে রেখে হাজরাপাড়া বাজারে রেশন সামগ্রী সংগ্রহ করতে গেলে এলাকার সিপিআইএম নেতা দশরথ রিয়াং তাঁকে বাজার শেডে ডেকে পাঠায় এবং প্রকাশ্য দিবালোকে বেধড়ক পেটায় বলে অভিযোগ৷ এই কাজে সহযোগিতা করে সিপিআইএমের ক্যাডার বলে পরিচিত লবকুমার রিয়াং এবং চরনিয়া রিয়াং৷ তাদের আক্রমণে গুরুতরভাবে আহত হন মহিলা৷ তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন৷
এর পর মুঙ্গিয়াকামী থানায় অভিযুক্তদের নামধাম দিয়ে মামলা করার পর পুলিশ ঘটনার দিনই অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে৷ কিন্তু অবাক করার বিষয়, রিয়াং সমাজে তাদের নিজেদের মধ্যে বিষয়টি মীমাংসা করা হবে দোহাই দিয়ে অভিযুক্তদের থানা থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসেন সিপিআইএম নেতারা৷ পরবর্তীতে শুরু হয় থানা থেকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য মহিলার উপর চাপ৷ গত ১৭ জুলাই মহিলাকে মারধরের ঘটনাটি ঘটেছিল৷ পুলিশের কাছেও বিচার পাননি তিনি৷ সম্প্রতি কিছু সহৃদয় ব্যক্তি বিষয়টি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টিগোচর করলে তা সংবাদ মাধ্যমে চলে আসে৷ এর পরই তৎপরতা শুরু হয়েছে পুলিশ৷ প্রসাশনে৷ এ বিষয়ে এখন মহিলা কমিশনও যথেষ্ট সক্রিয় হয়েছে৷
2018-08-12
