BRAKING NEWS

বিজেপি দাঙ্গাবাজ দল : ফিরহাদ হাকিম

কলকাতা, ৩ আগস্ট (হি.স.): ‘বিজেপি দাঙ্গাবাজ দল । এরা যেখানেই গিয়েছে, সেখানেই অশান্তি বাধিয়েছে’। শুক্রবার সকালে অসম থেকে কলকাতায় ফিরেই এই মন্তব্য করলেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম । আগামী দিনে দলনেত্রী নির্দেশ দিলে ফের অসমে যাবেন বলেও জানিয়েছেন ফিরহাদ হাকিম ।

শিলচর বিমানবন্দরে থেকে সারা রাত ধর্নার পর আজ সকালে কলকাতায় ফিরেন তৃণমূলের ৬ প্রতিনিধি ৷ গতকাল অসম সফরের উদ্যেশ্য শিলচর বিমানবন্দরে পৌঁছায় তৃণমূলের ৮ জনের একটি প্রতিনিধি দল ৷ বৃহস্পতিবার অসমের সার্বিক পরিস্থতি খতিয়ে দেখতে ওই রাজ্যে যায় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধিদলটি । আট জনের সেই দলে ছিলেন দুই বিধায়ক মহুয়া মৈত্র ও ফিরহাদ হাকিম । এছাড়া বাকি ৬ সাংসদ হলেন অর্পিতা ঘোষ, মমতা বালা ঠাকুর, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, রত্না দে নাগ, সুখেন্দু শেখর রায় এবং নাদিমুল হক । পরিকল্পনা ছিল নাগরিকপঞ্জি নিয়ে নিজেদের অবস্থান জানাতে প্রথমে শিলচর ও পরে গুয়াহাটি যাবে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল ।

বৃহস্পতিবার তৃণমূলের ওই প্রতিনিধিদলের কাউকে শিলচর বিমানবন্দরের বাইরে যেতে দেওয়া হয়নি । সমস্ত সময় তাঁদের নজরবন্দি করে রাখা হয় । প্রথম দিকে পুলিশের সঙ্গে একপ্রস্থ হাতাহাতিও হয় । সারা রাত বিমানবন্দরের লাউঞ্জের ডর্মিটরিতে রাত কাটাতে হয় তৃণমূলের সাংসদ, বিধায়কদের । সরকারি আতিথ্য গ্রহণ করতে অস্বীকার করেন তাঁরা । সরকারের পাঠানো খাবারও খাননি তাঁরা । এরপর রাতের খাবারের দায়িত্ব তুলে নেন পশ্চিমবঙ্গের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম । তাঁর আপ্তসহায়ককে দিয়ে বাইরে থেকে খাবার আনান ফিরহাদ । রুটি-সবজি খেয়েই রাত কাটান তৃণমূলের সাংসদ বিধায়করা ।

দীর্ঘ ১৭ ঘণ্টা পর শিলচর বিমানবন্দর থেকেই শুক্রবার সকাল ৭টা ৪০ মিনিটের বিমানে কলকাতায় ফেরেন ৬ জন । দলের দুই সাংসদ অর্পিতা ঘোষ ও মমতাবালা ঠাকুর শিলচর বিমানবন্দরেই রয়ে যান । তাঁরা সেখান থেকে দিল্লি যান । শিলচর থেকে কলকাতায় ফিরে নিজেদের এই অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন তৃণমূল প্রতিনিধিদলের সদস্য সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় । তিনি বলেন, ‘তিনটি ঘরে সারারাত কাটাতে বাধ্য করা হয়েছে’। তাঁদের সঙ্গে অনুপ্রবেশকারীর মতো ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রবীণ তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যসভায় দলের মুখ্যসচেতক সুখেন্দু শেখর রায় । দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান তিনি । সংসদে তাঁদের এই হেনস্থার বিরুদ্ধে সরব হবেন বলে জানিয়েছেন সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর । তিনি বলেন, ‘মনে হচ্ছে আমাদের যেন বন্দি করে রাখা হয়েছে । বিমানবন্দরের বাইরে কয়েকশো পুলিশ দাঁড়িয়ে রয়েছে । মনে হচ্ছে আমরা যেন উগ্রপন্থী । আমরা যেখানে যাচ্ছি, পুলিশ আমাদের অনুসরণ করছে । এমনকি শৌচালয়ে যাওয়ার সময়ও একা যেতে দেওয়া হছিল না’।

যদিও তৃণমূল সাংসদ বিধায়কদের হেনস্থার অভিযোগ খারিজ করেছে অসম রাজ্য বিজেপি । অসম রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র রাজদীপ রায়ের উল্টে অভিযোগ, তৃণমূল প্রতিনিধিদের মারামারির কারণে অসম পুলিশ কর্মীদের চিকিত্সারও প্রয়োজন হয়েছে । ১৪৪ ধারা জারি থাকার কারণে তাঁদের এয়ারপোর্ট ছেড়ে যেতে নিষেধ করা হয় । কিন্তু সেই বারণ তাঁরা শোনেননি ।

কিন্তু, শুক্রবার সকালে কলকাতায় ফিরেই তোপ দেগেছেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম । তিনি বলেন, ‘দাঙ্গাবাজ দল হচ্ছে বিজেপি, ভারতবর্ষ সবার ভারতবর্ষের বিধায়করা সব জায়গায় যেতে পারে, অগনতান্ত্রিকভাবে বিজেপি সরকার আমাদেরকে মানুষের কাছে পৌঁছাতে দেয়নি’৷ তৃণমূলের ওই প্রতিনিধি দলের সদস্য তথা বারাসতের সাংসদ ডাঃ কাকলি ঘোষ দস্তিদারের অভিযোগ, ‘অসমের অভিজ্ঞতায় মনে হয়েছে, দেশে আইনের শাসন আছে কি না তা নিয়ে সন্দেহ আছে । যেন অঘোষিত জরুরি অবস্থা চলছে’ ।

সোমবার প্রকাশিত হয়েছে অসমের নাগরিকপঞ্জির দ্বিতীয় খসড়া তালিকা । যেখানে বাদ গিয়েছে ৪০ লক্ষেরও বেশি মানুষের নাম। যা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক । প্রতিবাদে সরব হয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । পাল্টা সরব বিজেপি নেতৃত্বও ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *