ভাদোদরা, ২৪ জুন (হি.স.) : স্কুল ছুটি করাতেই খুন একাদশ শ্রেণির ছাত্রের হাতে খুন হতে হল স্কুলেরই এক নবম শ্রেণির ছাত্রকে৷ এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে ৭৩ বছরের পুরনো ভাদোদরা ভারতীয় বিদ্যালয়ে৷ মৃত ছাত্রের নাম দেব তদভি৷
শনিবার স্কুলের শৌচালয়ে ছাত্রের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধারের পর চাঞ্চল্য ছড়ায় স্কুল চত্বরে৷ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে তদন্ত শুরু করে৷ পুলিশি জেরার মুখে স্কুলের এক একাদশ শ্রেণির ছাত্রের কাছ থেকে মিলল বিস্ফোরক তথ্য৷ পুলিশি জেরায় অভিযুক্ত ছাত্রের স্বীকার করে, ‘শিক্ষিকার বকাবকি
থেকে বাঁচতে স্কুল ছুটির প্রয়োজন ছিল, স্কুল ছুটি করাতেই খুন করেছি’৷

১৬ বছরের স্কুল ছাত্রের এই অকোপট স্বীকারোক্তিতে হতবাক পুলিশ৷ শুধু ছুটি পেতে নবম শ্রেণির তদভিকে কুপিয়ে খুন করে একাদশ শ্রেণির ছাত্র৷ শিক্ষিকাকে ভয় পেয়েই কি এই পদক্ষেপ? না কি মৃত তদভির সঙ্গে পারস্পরিক শত্রুতা ছিল? জেরায় অভিযুক্ত ছাত্র জানায়, হোমওয়ার্ক না করায় তার কলার ধরে বকাঝকা করেন স্কুলের এক শিক্ষিকা৷ তারপর থেকেই স্কুলে আসতে চাইত না ওই ছাত্র৷ কাউকে খুন করলেই ছুটি মিলবে৷ এই কথা ভেবেই তদভিকে নৃশংস ভাবে খুন করা হয়৷
গোটা ঘটনায় ভদোদরা পুলিশ জানাচ্ছে, অভিযুক্ত ছাত্র এতটাই তৎপর যে, ছুরি দিয়ে তদভির উপর হামলার আগে, গায়ের জামা খুলে নেয়৷ যাতে তার গায়ে কোনও রক্তের দাগ না লেগে থাকে৷ এরপরই তদভিকে কুপিয়ে খুন করা হয়৷ গোটা ঘটনা শৌচালয়ে থাকা অন্য দুই ছাত্র না দেখলে সত্য ঘটনা এত তাড়াতাড়ি সামনে আসত না৷ খুন করার পরই অভিযুক্ত ছাত্র নিজের আত্মীয়ের বাড়ি চলে যায়৷অভিযুক্ত ছাত্র খুনের কথা নিজের বাবার কাছে স্বীকার করে৷ তারপরই ছেলেকে নিয়ে ভালসাদের বাস ধরেন ব্যক্তি৷ ততক্ষণে ২ ছাত্রের বয়ান পেয়ে যায় পুলিশ৷ ভালসাদে বাস থামলেই বাবা ও ছেলে পুলিশের জালে আসে৷
প্রশ্ন উঠছে, ১৬ বছরের ছাত্র ধারালো অস্ত্র কোথা থেকে পেল? ধারালো অস্ত্র নিয়ে স্কুলে কীভাবে ঢুকতে পারল? ফরেন্সিক রিপোর্ট অনুসারে, তদভিকে ১০ বার ছুরি দিয়ে আঘাত করা হয়৷ প্রচুর রক্ত বেরিয়ে যাওয়ায় প্রথম আঘাতেই মৃত্যু হয় তার৷ প্রশ্ন উঠছে, খুনের ঘটনায় কোথাও কি ছেলের বাবার প্রচ্ছন্ন সমর্থন রয়েছে৷ শুধুই কি ছুটি পেতে হত্যা? নাকি তদভির উপর রাগ ছিল অভিযুক্ত ছাত্রের? নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে তদভির বাবা চায়ের দোকান চালান৷ ছেলের পড়াশুনার দায়িত্ব নেন তদভির কাকা৷ তদভির খুনি পুলিশের হাতে এলেও তদন্ত জারি রাখছে ভাদোদরা পুলিশ৷