গর্ভপাত করানোর জন্য সম্পূর্ণ সিদ্ধান্ত মায়ের, জানাল শীর্ষ আদালত

নয়াদিল্লি, ২৯ অক্টোবর (হি.স.) : গর্ভপাত করানোর জন্য আবশ্যক নয় স্বামীর অনুমতি৷ শনিবার গর্ভপাত সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানিতে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক নারী তাঁর গর্ভস্থ ভ্রূণকে জন্ম দেবেন কিনা, এটা সম্পূর্ণ তাঁর সিদ্ধান্ত৷ যদি তিনি সন্তান জন্মের জন্য প্রস্তুত না থাকেন অথবা গর্ভস্থ ভ্রূণকে জন্ম দিতে না চান তাহলে অন্য কারোর সেই সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করার অধিকার নেই ৷
গর্ভপাত সংক্রান্ত এই মামলায় সুপ্রিমকোর্ট স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, স্ত্রী যেহেতু নিজের গর্ভে ভ্রূণটি ধারণ করেছেন , তাই এব্যাপারে সম্পূর্ণ সিদ্ধান্তে নেওয়ার অধিকার তাঁরই৷ এক্ষেত্রে মহিলার স্বামীর অনুমতির কোনও প্রয়োজন নেই৷ চণ্ডীগড়ের বাসিন্দা এক ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হন৷ সেই মামলার শুনানিতেই এই গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়েছে শীর্ষ আদালত৷
১৯৯৪ সালে মামলাকারীর সঙ্গে চণ্ডীগড়েরই এক মহিলার বিবাহ হয়৷ বিয়ের এক বছর পরে তাদের একটি পুত্রসন্তান হয়৷ কিন্তু সাংসারিক সমস্যার কারণে তারা আলাদা হয়ে যান৷ ডিভোর্স মামলা চলাকালীন কোর্টের পরামর্শে ফের তারা ২০০২-এর নভেম্বর থেকে একসঙ্গে থাকতে শুরু করেন৷ এই সময়ে মামলাকারীর স্ত্রী ফের গর্ভবতী হয়ে পড়েন৷ কিন্তু সম্পর্কের অবনতির কারণে তিনি ডিভোর্সের সিদ্ধান্তেই অনড় থাকেন৷ একইসঙ্গে গর্ভপাতের সিদ্ধান্ত নেন৷
নতুন সমস্যার সূত্রপাত এখানেই৷ মহিলার স্বামী গর্ভপাতে অসম্মতি জানান৷ একইসঙ্গে তাঁর অনুমতি ছাড়া গর্ভপাত করানোর জন্য মহিলার বিরুদ্ধে আদালতে ৩০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের মামলা দায়ের করেন৷ তাঁর দাবি, সম্মতি ছাড়া তাঁর ঔরসে সৃষ্ট ভ্রূণের অ্যাবরশন করানোর জন্য তিনি সাংঘাতিক আঘাত পেয়েছেন এবং মানসিক যন্ত্রণা ভোগ করেছেন৷
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ মামলাকারী এই আবেদন খারিজ করে দেয়৷ একইসঙ্গে দেশের সর্বোচ্চ আদালত স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়, নিজের গর্ভস্থ ভ্রূণ নিয়ে স্ত্রীর সিদ্ধান্তই চুড়ান্ত৷ এমনকি একজন ভারসাম্যহীন গর্ভবতী মহিলাও নিজের গর্ভপাতের সিদ্ধান্ত নিজে নিতে পারবেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *