BRAKING NEWS

বোধনের রাতেই রাজপথে ভীড়, নিরাপত্তা জোরদার

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৬ সেপ্ঢেম্বর৷৷ বোধনের সন্ধ্যায় রাজধানী আগরতলা শহরে দর্শনার্থীদের ঢল নেমেছে৷ গত দুদিন ধরেই আগরতলা শহরের বনেদি ক্লাবগুলোর পুজো প্যান্ডেল উদ্বোধনের ধুম পড়েছে৷ বোধনের সন্ধ্যায় সবকটি প্যান্ডেলই দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়৷ এবছর পুজো শুরু হওয়ার দুতিনদিন আগে থেকেই পুজো প্যান্ডেল দর্শনার্থীদের খুলে দেওয়ার প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে৷ এই প্রবণতার মধ্য দিয়ে এটাই প্রমাণিত হচ্ছে শারদোৎসবকে কেন্দ্র করে মানুষের মধ্যে উৎসাহ উদ্দীপনা কতটা গভীর৷ বোধনের সন্ধ্যা রাত থেকেই রাজধানী আগরতলা শহরের প্রতিটি রাস্তায় যানবাহনের আনাগোনা ও দর্শনার্থীদের ভিড় জানান দিচ্ছিল যেন দুর্গাপূজা পুরোদমে শুরু হয়ে গেছে৷ বনেদি ক্লাবগুলোর প্রতিটি প্যান্ডেলেই স্বেচ্ছাসেবীরা শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে দর্শনার্থীদের প্রতিমা দর্শনের জন্য সুযোগ করে দিয়েছে৷ এছাড়া প্রতিটি এলাকাতেই মোতায়েন করা হয় পুলিশ ও টিএসআর বাহিনীর জওয়ানদের৷ আগমনীর সুরে রীতিমত মোহিত গোটা রাজ্য৷ শুধু রাজধানী আগরতলা শহরেই নয়, রাজ্যের গ্রাম পাহাড়েও শারদোৎসবকে কেন্দ্র করে মানুষের মধ্যে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা পরিলক্ষিত হয়৷ অবশ্য গ্রাম পাহাড়ে বোধনের সন্ধ্যায় তেমন লোকসমাগম হয়নি৷ [vsw id=”wtkQLHJayX0″ source=”youtube” width=”425″ height=”344″ autoplay=”yes”]বুধবার সপ্তমী পুজোর দিন থেকে ভিড় জমবে গ্রামপাহাড়ের পুজো মন্ডপগুলিতেও৷ শহর এলাকার পুজোরগুলির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে যেতে পারছে না গ্রামপাহাড়ের পুজোগুলো৷ কারণ বিভিন্ন সামগ্রীর দাম লাফিয়ে বেড়েছে৷ সে অনুপাতে চাঁদা সংগ্রহের পরিমাণ বাড়েনি৷ স্বাভাবিক কারণেই বিভিন্ন স্থানে পুজোর সংখ্যাও এবছর কিছুটা কমেছে৷ চাঁদা সংগ্রহের ক্ষেত্রে কোন ধরনের চাপ সৃষ্টি কিংবা বলপূর্বক চাঁদা আদায়ের কোথাও কোন সুযোগ নেই৷ প্রশাসন এসব বিষয়ে কঠোর মনোভাব গ্রহণ করেছে৷ স্বাভাবিক কারণেই পুজো উদ্যোক্তারা ইচ্ছা করলেই বিশাল পরিমাণ চাঁদা আদায় করতে পারছে না গ্রাম পাহাড়ে৷ স্বেচ্ছায় যে পরিমাণ চাঁদা মিলছে তা দিয়েই সার্বজনীন দুর্গোপুজা সম্পন্ন করতে হচ্ছে৷ কিন্তু শহর এলাকার চিত্রটা অনেকটা ভিন্নতর৷ শহর এলাকায় জনসংখ্যা প্রতিবছর বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ শহর এলাকার মানুষের আর্থিক সমৃদ্ধি গ্রামপাহাড়ের তুলনায় অনেকটাই বেশি৷ সরকারি কর্মচারীদের বেশিরভাগই শহর অঞ্চলে বসবাস করেন৷ ব্যবসায়ীর সংখ্যাও শহরাঞ্চলেই বেশি৷ স্বাভাবিক কারণেই শহর অঞ্চলের ক্লাবগুলো আশানুরূপ চাঁদা আদায় করতে সক্ষম হচ্ছে৷ ফলে তাদের পুজোর বাজেট প্রতিবছরই বাড়ছে৷ সে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পুজোতে চলেছে পাহাড়ি আয়োজন৷
ষষ্ঠীর সন্ধ্যায় রাজধানী আগরতলা শহরে যে চিত্র পরিলক্ষিত হয়েছে তাতে দেখা গিয়েছে আলোকমালায় সজ্জিত হয়ে উঠেছে গোটা শহর৷ যাবতীয় ধর্মীয় রীতিনীতি মেনে সর্বত্র শুরু হয়েছে শারদোৎসব৷
এদিকে, শারদোৎসবকে শান্তিপূর্ণভাবে অতিবাহিত করার লক্ষ্যে আরক্ষা প্রশাসনের তরফে যাবতীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে৷ পুলিশের পাশাপাশি অতিরিক্ত টিএসআর বাহিনীকে আগরতলা শহর এলাকার শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার কাজে নিযুক্ত করা হয়েছে৷ গুরুত্বপূর্ণ পুজো মন্ডপগুলোতে মেটাল ডিটেক্টার বসানো হয়েছে৷ বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরাও৷ সাদা পোশাকের পুলিশের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে৷ যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিহত করার লক্ষ্যে আরক্ষা প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে৷ পুলিশ ও টিএসআর বাহিনীর পাশাপাশি ট্রাফিক পুলিশের তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে৷ ট্রাফিক পুলিশেও অতিরিক্ত কিছু নিরাপত্তা কর্মীদের যুক্ত করা হয়েছে৷ যানবাহন চলাচলের ওপর কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে৷ আন্তর্জাতিক সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে৷ জাতি উপজাতির ঐতিহ্যবাহী শারদোৎসবকে অবাদ ও শান্তিপূর্ণ করতে রাতদিন চবিবশ ঘন্টা পুলিশ ও নিরাপত্তা কর্মীরা সতর্ক থাকবেন বলে আরক্ষা প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *