BRAKING NEWS

দেশে ধর্মের নামে অশান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে ঃ মুখ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৭ আগস্ট৷৷ আমাদের দেশে ধর্মনিরপেক্ষতার একটা প্রেক্ষাপট রয়েছে৷ ব্রটিশ শাসকরা ধর্মের ভিত্তিতে দেশের মানুষকে ভাগ করতে সচেষ্ট হয়েছিলেন এবং তাই স্বাধীনোত্তর ভারতে সংবিধান প্রণেতারা এই বিভাজিত ভারতে বহু সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলেন৷ একমাত্র দেশের মানব সম্পদ এবং প্রাকৃতিক সম্পদকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারলেই সংবিধানের উদ্দেশ্যগুলি সফল হবে বলে অভিমত প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার৷ তপশিলী জাতি কল্যাণ দপ্তরের উদ্যোগে আজ রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে আয়োজিত ড ভিমরাও রামজী আম্বেদকররে ১২৭তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে ভারতের ধর্মনিরপেক্ষতা ও ড বি আর আম্বেদকর বিষয়ক রাজ্য ভিত্তিক আলোচনা সভার উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার বলেন, ঐক্য ও সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য ধর্মনিরপেক্ষতার দৃষ্টি খুবই জরুরী, কেন না আজকাল দেশে ধর্মের নামে অশান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে৷ দেশের একটা বড় অংশের লোকের এখনো খাদ্য, কাপড় ও আশ্রয়ের অভাব রয়েছে৷ তাই ধর্মনিরপেক্ষতার বিষয়টি আজকের দিনে খুবই প্রাসঙ্গিক৷ এই দৃষ্টিভঙ্গি বা নীতি শুধু কাগজে কলমে নয়, আমাদের দৈনন্দিন জীবনেও তার প্রতিফলন ঘটাতে হবে৷ অন্যাথায় মৌলিক সমস্যাগুলির সমাধান হবে না৷ কারণ শান্তি-সম্প্রীতি এবং ধর্মনিরপেক্ষা একে অপরের পরিপূরক৷ রাজ্যে এই দৃষ্টি ভঙ্গি নিয়েই কাজ করা হচ্ছে৷
আলোচনা সভায় আমাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আগরতলা পুর নিগমের মেয়র ড প্রফুল্লজিৎ সিনহা ও পশ্চিম ত্রিপুরা জিলা পরিষদের সভাধিপতি দিলীপ কুমার দাস৷ আলোচনা সভায় সভাপতির ভাষণে তপশিলী জাতি কল্যণ মন্ত্রী রতন ভৌমিক বলেন, প্রতিবছরই তপশিলী জাতি কল্যাণ দপ্তর ও জাতীয় আলোচনা সভার আয়োজন করে থাকে, কেন না এর একটা ইতিবাচক দিক রয়েছে৷ তিনি বলেন, আমাদের দেশে যেখানে সংসৃকতি, ভাষা, ধর্ম, খাদ্যাভাসে ইত্যাদি নিয়ে ভিন্নতা রয়েছে, সেখানে রাষ্ট্রের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্রকে রক্ষা করার ক্ষেত্রে এ জাতীয় আলোচনা খুবই প্রাসঙ্গিক৷ আলোচনা সভায় মুখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ইউনিভাসিটি গ্র্যান্ট কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুখদেও থোরাত মূলতঃ তিনটি বিষয়ের উপর আলোচনা করেন৷ এই তিনটি বিষয় হলো তপশিলী জাতিদের উন্নয়নে আম্বেদকরের ভূমিকা বা যোগদান, তপশিলী জাতিদের উন্নয়নের লক্ষ্যে আম্বেদকর কি কি নীতি নির্ধারণ করে গেছেন এবং তাদের সামাজিক অবস্থান, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সামাজিক সাম্য বিষয়ে আম্বেদকররের দৃষ্টি ভঙ্গির বিস্তারিত তুলে ধরতে গিয়ে তিনি বলেন, ধর্ম নিরপেক্ষতা ও রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য নিয়ে আম্বেদকর যে স্বপ্ণ দেখে ছিলেন তা হল এমন একটি রাষ্ট্র যেখানে সমাজের সর্বক্ষেত্রে সমতা থাকবে এবংে সেরকম রাষ্ট্র গড়ে তুলতে হলে আমাদের সংবিধানে লিপিবদ্ধ নীতিগুলিকে আমাদের সমাজ জীবন ও সংসৃকতিতে প্রতিফলিত করতে হবে৷
অনুষ্ঠানের শুরুতে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার সহ অন্যান্য অতিথিগণ ড বি আর আম্বেদকরের প্রতিকৃতিতে পূষ্পার্ঘ অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন৷ অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন তপশিলী জাতি কল্যণ দপ্তরের সচিব এল এইচ ডার্লং৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *