নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১০ আগস্ট ৷৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও ত্রিপুরা উপজাতি এলাকা স্বশাসিত জেলা পরিষদের সদর দফতর খুমলুঙ সহ
পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকায় টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে৷ সন্ত্রাস কবলিত এলাকা গুলো থেকে বহু জনজাতি পরিবার ঘরবাড়ি ফেলে নিরাপদ দূরত্বে চলে এসেছে৷ অন্য দিকে পুলিশ সতঃপ্রনোদিত মামলা নথিভুক্ত করেছে৷ মধ্যরাতে আহতদের দেখতে হাসপাতালে ছুটে যান গ্রাম উন্নয়ন মন্ত্রী নরেশ জমাতীয়া৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সুরক্ষা বাহিনীকে যথেষ্ঠ বেগ পেতে হয়েছে৷ যদিও গভীর রাত অবধি সংঘর্ষ চলে৷ নতুন করে সংঘর্ষ এড়াতে বিস্তারিত খোঁজ খবর নিয়েছেন এবং সর্র্বেচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করার নির্দেশ দিয়েছেন৷ যদিও এলাকায় থমথমে অবস্তা বিরাজ করছে৷ জানাগেছে, আইপিএফটি’র সাধারণ সম্পাদক মেবার কুমার জমাতিয়া সহ বেস কয়েকজনের বিরুদ্ধে হিংসা ছড়ানো, অগ্ণি-সংযোগ এবং সম্পত্তি নষ্ট করার অভিযোগ এলে অভিযোগ লিপিবদ্ধ করা হয়৷
গতকাল বিকাল থেকে শুরু হওয়া রাজনৈতিক সন্ত্রাস অধিক রাত পর্যন্ত স্থায়ী হয়৷ সিপিআইএমও আইপিএফটির মধ্যে হামলা পাল্টা হমলায় সমগ্র এলাকা রণাঙ্গনে পরিণত হয়৷ সিপিআএম পার্টি অফিসে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করে পরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়৷ সিপিআইএম ক্যাডারদের কমপক্ষে ৩০ মটোর সাইকেল পুরিয়ে দেওয়া হয়৷ পার্শ্বপর্তী গ্রামে আইপিএফটি’র কর্মীদের উপর সিপিআইএম ক্যাডারদের হামলার পাল্টা হিসাবে এই ঘটনা৷ আর এর পরেই শুরু হয়ে যায় হামলা ও পাল্টা হামলা৷ উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে৷ জিবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীনদের মধ্যে ৩ দজনের অবস্থা খুবই খারাপ৷
খুমুলুঙে আইপিএফটি- সিপিআইএম সংঘর্ষের জেরে আবারও বিঘ্নিত হল আইনশৃঙ্খলার পরিবেশ৷ ক্ষমতাসীন সিপিআইএম এই ঘটনাকে সামনে রেখে আজ বিকাল থেকে রাজ্য জুড়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সভা সংগঠিত করতে শুরু করেছে৷ পাহাড়ি এলাকায় আইপিএফটিও পৃথক কর্মসূচী নিয়েছে৷ ফলে রাজ্যের সর্বত্র উত্তেজনা ছড়াচ্ছে৷ এদিকে গতকাল বিকাল থেকে শুরু হওয়া রাজনৈিৈতক সংঘর্ষ সম্পর্কে পুলিশ জানিয়েছে, আইপিএফটি’র অতর্কিত আক্রমণের মুখে আহত হয়েছেন সিপিআইএম’র প্রাক্তন চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান সহ সাধারণ নাগরিকদের একাংশ৷ আগুনে ত্রিশটি বাইক, সুকটারসহ অন্যান্য ছোট যানবাহন৷ ভাংচুর করা হল দোকানপাট৷ ধবংস হয় প্রচুর সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তি৷ এখনও সমগ্র এডিসি সদরে সাধারণ জনমতে আতঙ্ক বিরাজ করছে৷ যদিও বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত হলেও চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাস্থলে রয়েছে জেলা পুলিশ সুপার সহ পুলিশের পদস্থ আধিকারিকরা৷ পুলিশ এবং টিএসআর মোতায়েন রয়েছে সদর দফতরের আশপাশের এলাকাতে৷ পুলিশ ঘটনার বিবরণে জানিয়েছে, এদিনের ঘটনাতে সিপিআইএমের স্থানীয় কিছু ক্যাডারবাহিনীও দায়ী রয়েছেন৷ সিপিআইএম ক্যাডার হিসাবে পরিচিত রাজেশ দেববর্র্মর উস্কানিতেই এদিনের ঘটনার সূত্রপাত৷ পরে দাবানলের মতো অসান্তি ছড়িয়ে দেয আইপিএফটি৷ পুলিশ সূত্রে দাবী এদিন দুপুরে খুমুলুঙ এডিসি সদর কার্যালয়ের পেঠনে কিলিংরাই পারাতে প্রথম ঘটনার সূত্রপাত৷ সেখানে সুকুমার দেববর্র্মর বাড়িতে আইপিএফটি দলের সভা চলছিল৷ সুকুমার দেববর্র্ম প্রাক্তন সিপিআইএম নেতা৷ সম্প্রতি তিনি আইপিএফটিতে যোগদান করেন৷ তার বাড়িতে স্থানীয়দের নিয়ে গোপন সভা হচ্ছিল৷ এই খবর পেয়ে স্থানীয় সিপিআইএম ক্যাডার হিসাবে পরিচিত দুই রাজেশ দেববর্র্ম দলবল নিয়ে হামলা চালায়৷ এই ঘটনা হয় দুপুরের পর৷ অভিযুক্তরা সেখানে গিয়ে আইপিএফটি নেতাদের গালাগাল করে বলে অভিযোগ৷ সেখানে প্রতিরোধ করেন আইপিএফটি সমর্থকরা৷ সুকুমার দেববর্মার বাড়ির ঝামেলা কিছুক্ষণের মধ্যেই শেষ হয়ে যায়৷ কিন্তু পরক্ষনেই গোটা এলাকাতে জড়ো হয় প্রায় চার শতাধিক আইপিএফটি সমর্থক৷ তারা মিছিল বের করে থানায় ডেপুটেশন দেয়৷ দাবী জানানো হয় অভিযুক্ত ক্যাডারদের অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে৷ যদিও থানার ওসি দিলীপ দেববর্র্ম তাদের বুঝিয়ে-শুনিয়ে পরিস্থিতি শান্ত রাখতে আবেদন করেন৷ কিন্তু থানা থেকে বের হয়ে আইপিএফটি কর্মী সমর্থকরা খুমুলুঙস্থিত সিপিআইএমের দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালায় বলে অভিযোগ৷ সেখানে তারা প্রায় ত্রিশটি বাইকে আগুন লাগিয়ে দেয়৷ আক্রমণ থেকে বাঁচতে নেতারা বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যান৷ পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করে৷ জানা গেছে, উভয় দলের বহু কর্মী সমর্থক আহত হন৷ আহতদের মধ্যে বেশ কয়েক জনের অবস্থা গুরুতর বলে জানাগেছে৷ এদিকে রাধাপুর থানায় আইপিএফটি এবং সিপিআইএমের তরফে পৃথক পৃথক দুটি মামলার অভিযোগ জমা পরেছে৷
2017-08-11

