নয়াদিল্লি, ১১ অগাষ্ট (হি.স.) : জোট তৈরির অাগেই ফের ফাটল বিরোধী শিবিরে। কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধীর ডাকা বৈঠকে এবার গরহাজির এনসিপি। আগেই সরে গিয়েছে নীতীশ কুমারের সংযুক্ত জনতা দল। এবার সরে যাওয়ার ইঙ্গিত দিল শরদ পাওয়ারের এনসিপি।
শুক্রবার বিরোধী দলগুলোর বৈঠক ডেকেছিলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী। সেখানে দেখা মেলেনি শরদ পাওয়ার বা তাঁর দলের কোনও প্রতিনিধির। আর ১৮ দল থেকে বিরোধী শিবির নেমে এল ১৬ দলে। বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএর মোকাবিলা কোন পথে করা যায়, সেই নীল নকশা তৈরি করতে বিরোধী দলগুলির সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী।সদ্য সমাপ্ত গুজরাটের রাজ্যসভা নির্বাচনে দলের প্রার্থী আহমেদ প্যাটেলকে এনসিপি বিধায়ক ভোট দেয়নি বলে অভিযোগ কংগ্রেসের। এই নিয়ে কংগ্রেস বলেছে, গুজরাটে তাঁদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে এনসিপি। দলের প্রবীণ নেতা প্রফুল্ল প্যাটেল বলেছেন, ‘এনসিপি কংগ্রেসের ডাকা বৈঠক বয়কট করছে।’ কারণ হিসেবে কংগ্রেসের ভিত্তিহীন অভিযোগকে দায়ি করেন তিনি। তাঁর কথায়, কংগ্রেসের অভিযোগ আমাদের আঁতে লেগেছে। তবে কংগ্রেস এখনও বলছে, শরদ পাওয়ার ফোন করে না আসার কারণ হিসেবে অসুস্থতার কথা জানিয়েছেন। অন্যদিকে, রাজনৈতিক মহলের ধারনা, মহারাষ্ট্রে বিজেপি–শিবসেনার মধ্যে টানাপোড়েনের কারণে বিজেপি শিবসেনাকে ছেড়ে শরদের এনসিপির সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধতে চাইছে। এই অবস্থায় কংগ্রেসের সঙ্গে দূরত্ব বাড়াচ্ছে এনসিপি।
এদিন সংসদের অ্যানেক্স ভবনের বৈঠকে মোট ১৬টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে যোগ দিতে বৃহস্পতিবারই নয়াদিল্লি পৌঁছে যান তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উপস্থিত ছিলেন, মায়াবতী, অখিলেশ যাদব। উপস্থিত ছিলেন সীতারাম ইয়েচুরি সহ বাম নেতারা। এছাড়া উপস্থিত ছিল আরজেডি, জেএমএম, ডিএমকে, এনসি, আরএলডি, জেডিএস, কেরল কংগ্রেসের প্রতিনিধিরা। এদিনের বৈঠকে একটি কোর কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৈঠক শেষে ইয়েচুরি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বিজেপির মোকাবিলা করতে হলে বিরোধী শিবিরকে বিকল্প আদর্শ কড়চা তৈরি করতে হবে। এজন্য নির্দিষ্ট কৌশল অবলম্বন করতে হবে। একইসঙ্গে মানুষের সমস্যাগুলিকে আরও বেশি করে তুলে ধরতে হবে। ইয়েচুরির মতে, গত তিন বছরে একের পর এক রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে ভাল ফল করার পর থেকে মোদীর রাজনৈতিক ক্ষমতার আশ্চর্য রকমভাবে বেড়েছে। ফলে তার মোকাবিলা করতে হলে একটা মজবুত জমির প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে সবকটি বিরোধীদের এককাট্টা হতে হবে বলেও মনে করেন তিনি।
তবে এদিনের বৈঠকের তাল কাটে এনসিপির গরহাজির হওয়াকে কেন্দ্র করে। জানা গিয়েছে, এই বৈঠকের আহ্বায়ক ছিলেন কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ। তিনিই সকলকে আমন্ত্রণ জানান। কিন্তু, আসেননি শরদ পওয়ার। যদিও গুলাম নবি আজাদ জানান, শরদ পাওয়ার অসুস্থ হওয়ায় আসতে পারেননি। অন্যদিকে, হাজির ছিলেন না শরদ যাদবও। যদিও উপস্থিত ছিলেন বিক্ষুব্ধ জেডিইউ সাংসদ আনোয়ার আলি।