শিলচর (অসম), ১০ আগস্ট, (হি.স.) : দু-দিন ধরে শিলচরের অসম বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কাজকর্ম ও পড়াশোনা লাটে ওঠার পর বৃহস্পতিবার বেলা দুটোয় প্রত্যাহার হল অসম বিশ্ববিদ্যালয় ভূমিহীন সংস্থার আন্দোলন। এখন থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে দরগাকোনায় কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপনের সময় জমি হারানো পরিবারের লোকেদের তৈরি এই সংস্থা একাধিক দাবিতে বুধবার সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়য়ের মূল গেটে অবরোধ গড়ে তোলে।
কয়েকশো আন্দোলনকারীর অবরোধের ফলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোনও শিক্ষক, ছাত্র ও কর্মী ভিতরে ঢুকতে পারেননি। অচল হয়ে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজকর্ম। সে দিন কর্তৃপক্ষ কোনও ধরনের সমাধানসূত্র দিতে ব্যর্থ হওয়ায় সংস্থা বৃহস্পতিবারও তাদের অবরোধ কর্মসূচি জারি রাখে। ফলে এদিনও কোনও কাজকর্ম হয়নি বিশ্ববিদ্যালয়ে। বন্ধ থাকে ক্লাস, প্র্রশাসনিক কাজকর্ম।
এ দিকে ভূমিহারাদের দাবিদাওয়া অবিলম্বে মিটিয়ে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে কর্তৃপক্ষের ওপর চাপ সৃষ্টির উদ্দেশে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সংযোগকারী শিলচর-হাইলাকান্দি সড়কে অবরোধ সৃষ্টি করে পড়ুয়ারা। প্রায় দুশো ছাত্রছাত্রীর আন্দোলনে ব্যস্ত আন্তঃজেলা সংযোগকারী এই সড়কের দু-পাশে দাঁড়িয়ে পড়ে শত শত যানবাহন। চূড়ান্ত অসুবিধার মুখে পড়েন যাত্রীরা।
এই অবস্থায় বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আন্দোলনস্থলে পৌঁছোন কাছাড়ের অতিরিক্ত জেলাশাসক এ আর মজুমদার। তিনি অসম বিশ্ববিদ্যালয় ভূমিহীন সংস্থার সদস্য ও পড়ুয়াদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। প্রতিশ্রুতি দেন, স্বাধীনতা দিবসের পর প্রশাসন তাঁদের সঙ্গে দাবি-দাওয়া নিয়ে কথা বলবেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দীর্ঘ সময় ধরে আলোচনার পর প্রশাসনের প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে ভূমিহারাদের সংস্থা ও পড়ুয়ারা বেলা দুটোয় তাদের আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেয়।
অসম বিশ্ববিদ্যালয় ভূমিহীন সংস্থার সভাপতি পবনকুমার কৈরি জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সময় এই অঞ্চলের বাসিন্দাদের কাছ থেকে ৩৫০ বিঘা জমি নিয়েছিল সরকার। প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, তাঁদের প্রতিটি পরিবারের একজন করে সদস্যকে বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি দেওয়া হবে। তাছাড়া ভরতির ক্ষেত্রে এই পরিবারগুলোর সন্তানদের জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণ থাকবে। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনও প্রতিশ্রুতি রাখেনি বিশ্ববিদ্যালয় বা সরকার।