BRAKING NEWS

মিজোরামে ‘বাঙালি তাড়াও’ অভিযান বন্ধ না হলে অসম ও ত্রিপুরায় আন্দোলন গড়ে তুলবে ‘আমরা বাঙালি’

গুয়াহাটি, ০৮ আগস্ট, (হি.স.) : মিজোরামে এখনই ‘বাঙালি তাড়াও’ নিপীড়ন বন্ধ না হলে অসম, ত্রিপুরা, এমন-কি প্রয়োজনে পশ্চিমবঙ্গ-সহ দেশের অন্যান্য প্রান্তে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলবে ‘আমরা বাঙালি’। এ ব্যাপারে উগ্র জাতীয়তাবাদী মিজোদের বাঙালি বিতাড়ন অভিযানে লাগাম ধরতে এবং ভাষিক এই জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দিতে কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপ চেয়েছে আমরা বাঙালি।
সংগঠনের অসম রাজ্য কমিটির সচিব সাধন পুরকায়স্থ এ ব্যাপারে জানিয়েছেন, মিজোরামে যদি সত্বর বাঙালিদের ওপর নিপীড়ন বন্ধ করা না হয়, তা হলে তাঁরা একযোগে শিলচর (দক্ষিণ অসম), ত্রিপুরায় তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলবেন। শিলচরে আন্দোলন হলে পরিস্থিতি কোন স্তরে গিয়ে পৌঁছয় তা মনে করিয়ে ১৯৭৯ সালের সেই দিনগুলির কথা বর্ণনা করেন সাধনবাবু। এমন অপ্রিতিকর পরিস্থিতি যাতে সৃষ্টি না হয়ে সে জন্য উগ্র মিজোদের সংযত করে মিজোরামে বাঙালিদের শান্তিতে ব্যবসা-বাণিজ্য করার ব্যবস্থা করতে শিলচর ও করিমগঞ্জের দুই সাংসদকেও তৎপর হওয়ার আবেদন জানিয়েছেন আমরা বাঙালির অসম-সচিব পুরকায়্স্থ।
ঘটনার বিবরণ দিয়ে তিনি বলেন, মিজোরামের লুংলেই শহরে ‘ইয়ং মিজো অ্যাসোসিয়েশন’ (ওয়াইএমএ) নামের এক বেসরকারি, অরাজনৈতিক সংগঠন সেখানকার বাঙালিদের দোকানপাটে তালা লাগিয়ে নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে মিজোরাম ছাড়ার নোটিশ জারি করছে। দেদার এই নোটিশ পেয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন দিশেহারা বাঙালিরা। সাধনবাবুর অভিযোগ, বাঙালিদের বিরুদ্ধে ওয়াইএমএ-এর এ জাতীয় নির্যাতন চরম বেআইনি, অসাংবিধানিক। আর সব দেখেও না দেখার ভান করে এ ধরনের কার্যকলাপের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থাই গ্রহণ করছে না মিজোরাম সরকার।
ভারতবর্ষের নাগরিক হিসেবে জীবিকার টানে যে কোনও রাজ্যে যে কোনও মানুষের ব্যবসা-বাণিজ্য করার অধিকার রয়েছে। এই অধিকার সংবিধান-স্বীকৃত। এর বলেই ধর্ম-ভাষা-বর্ণ নির্বিশেষে যে কোনও নাগরিক দেশের যে কোনও রাজ্যে স্থায়ী বসবাসও করতে পারেন। কিন্তু মিজোরামের মতো রাজ্যে এই সাংবিধানিক অধিকারকে কেবল খর্ব করাই নয়, দস্তুরমতো বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ প্রদর্শন করা হচ্ছে। এর পিছনে রাজ্য সরকারের অদৃশ্য ইশারা রয়েছে কিনা সে ব্যাপারেও সন্দিহান আমরা বাঙালির রাজ্য সচিব পুরকায়্স্থ। তাঁর ব্যাখ্যা, না হলে একটি রাজ্যে কিছুদিন পর পর একটি ভাষিক জনগোষ্ঠীর ওপর এ ধরনের নির্যাতন চলবে, সব জেনে এবং দেখেও সরকার নীরব থাকে কী করে ! তাই এমন কার্যকলাপকে সরকারিভাবে প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।
এর আগেও একাধিকবার মিজোরামে বাঙালি বিতাড়ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। এ সব ঘটনা কেন্দ্রীয় সরকারের অজানা নয়। তাই অবিলম্বে কেন্দ্রীয় এবং মিজোরাম সরকারকে মিজোরামে বাঙালিদের জীবন-সম্পত্তি রক্ষায় প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দাবি তুলেছেন সাধনবাবু। অন্যথা এর বিরুদ্ধে অসম-ত্রিপুরা এবং পশ্চিমবঙ্গে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলতে ‘আমরা বাঙালি’ বাধ্য হবে এবং এর জন্য কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে কেন্দ্র ও রাজ্য — উভয় সরকারই দায়ী থাকবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন রাজ্যসচিব সাধন পুরকায়স্থ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *