BRAKING NEWS

কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন রাষ্ট্রমন্ত্রী পান্ডে জানান অশিক্ষক পদে নিয়োগে রাজ্য সরকার কেন্দ্রের গাইডলাইন না মানলে ব্যবস্থা নেয়া হবে

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৬ জুলাই৷৷ শিক্ষা দপ্তরে অশিক্ষক পদে নিয়োগে কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের গাইডলাইন মানা না হলে কোনভাবেই বরদাস্ত করা হবে না৷ নিশ্চই ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷ বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলনে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় একথা জানান কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী ড মহেন্দ্র নাথ পান্ডে৷
পাশাপাশি তিনি আরো জানিয়েছেন, শিক্ষক নিয়োগে রাজ্যকে টেট কিংবা বিএড ছাড় দেওয়া কোনভাবেই সম্ভব নয়৷ কারণ, রাজ্য সরকারকে একাধিকবার এবিষয়ে ছাড় দেওয়া হয়ে গিয়েছে৷ ফলে, আর কোন সুযোগ দেওয়া হবে না৷ তাছাড়া, সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ১০৩২৩ জন শিক্ষকের চাকুরী বাতিল হয়েছে৷ এক্ষেত্রে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে সুপ্রিম কোর্টের রায় মানতেই হবে৷
রাজ্য সরকার সম্প্রতি শিক্ষা দপ্তরে ১২০০০ বিভিন্ন অশিক্ষক পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে৷ তাতে শর্ত রাখা হয়েছে, শিক্ষকতার ন্যুনতম ৫ বছর কিংবা ৩ বছর অভিজ্ঞতা থাকলেই সংশ্লিষ্ট পদে আবেদন করা যাবে৷ এই বিষয়টি নিয়েই বিতর্ক দেখা দিয়েছে৷ মূলত, সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকুরীচ্যুত ১০৩২৩ জন শিক্ষককে পুর্বাসনের উদ্দেশ্যেই রাজ্য ১২০০০ নতুন পদ সৃষ্টি করেছে, তা স্পষ্ট৷ সমাজ কল্যাণ এবং সমাজ শিক্ষা দপ্তরেও ১০০০ অশিক্ষক পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে রাজ্য সরকার৷ তাতেও শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা থাকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে৷
এদিন, এবিষয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কাছে জানতে চাওয়া হয়, অশিক্ষক পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে শিক্ষকতা বাধ্যতামূলক হওয়ার কোন নিয়ম দেশে রয়েছে কিনা৷ জবাবে ড পান্ডে জানান, কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের নির্দিষ্ট গাইডলাইন রয়েছে বিভিন্ন রাজ্যে শিক্ষা দপ্তরে নিয়োগের ক্ষেত্রে৷ যদি রাজ্যে শিক্ষা দপ্তরে অশিক্ষক পদে গাইডলাইন মেনে নিয়োগ করা হয় তাহলে কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের তাতে কোন আপত্তি নেই৷ কিন্তু, নিয়োগের ক্ষেত্রে গাইডলাইন মানা না হলে তা বরদাস্ত করা হবে না৷ মন্ত্রক নিশ্চই রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে৷ প্রয়োজনে কেন্দ্র হস্তক্ষেপও করবে রাজ্য সরকারের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে৷
কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর হুশিয়ারীতে স্বাভাবিকভাবেই চিন্তা বাড়বে রাজ্য সরকারের৷ কারণ, একাডেমিক কাউন্সেলার, স্টুডেন্ট কাউন্সেলার, সুকল লাইব্রেরী এসিসটেন্ট, হোস্টেল ওয়ার্ডেন এবং সুকল এসিসটেন্ট পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম মানা হচ্ছে না বলে মনে করছেন আইন বিশেষজ্ঞরা৷ তাঁদের বক্তব্য, একাডেমিক কাউন্সেলার, স্টুডেন্ট কাউন্সেলার কিংবা সুকল লাইব্রেরী এসিসটেন্ট পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ণয়ের বিষয়টি মানেনি রাজ্য সরকার৷ কাউন্সেলার হিসেবে নিয়োগের ক্ষেত্রে মনোবিদ্যা বিষয়ে স্নাতক সাথে কাউন্সেলিংয়ের অভিজ্ঞতা হওয়া জরুরি৷ রাজ্যে একাডেমিক কাউন্সেলার এবং স্টুডেন্ট কাউন্সেলার হিসাবে চাকুরীর আবেদনের জন্য শিক্ষক পদের যোগ্যতা থাকলেই যথেষ্ট৷ ফলে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ণ উঠেছে, শিক্ষকতার দায়িত্ব যারা পালন করছেন তাদের মনোবিদ্যা সম্পর্কে কতটা ধারণা রয়েছে৷ কারণ, মনোবিদ ছাড়া কাউন্সেলিংয়ের দায়িত্ব পালন করা যথেষ্ট কঠিন বলে মনে করছেন শিক্ষাবিদরা৷ এদিকে, একাডেমিক কাউন্সেলার এবং স্টুডেন্ট কাউন্সেলারদের কার্যপদ্ধতি নিয়েও প্রশ্ণ উঠেছে৷
এদিকে, সুকল লাইব্রেরি এসিসটেন্ট নিয়োগের ক্ষেত্রে লাইব্রেরী সায়েন্স নিয়ে পিজি ডিপ্লোমা কোর্স বাধ্যতামূলক নয় বলে জানিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী৷ স্নাতক ডিগ্রীধারী ও পাঁচ বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা সম্পন্নরাই এই পদে আবেদন করতে পারবেন৷ স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ণ উঠেছে, লাইব্রেরি সংক্রান্ত নিয়োগের ক্ষেত্রে নতুন পদ সৃষ্টি করার এক্তিয়ার রাজ্য সরকারের কতটুকু রয়েছে৷ কারণ, লাইব্রেরি সংক্রান্ত নিয়োগে ভারত সরকার অনুমোদিত গ্রন্থাগার পর্ষদের নির্দিষ্ট গাইডলাইন ইতিমধ্যেই সারা দেশে কার্যকর রয়েছে৷
ফলে, অশিক্ষক পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার যে মূল বিষয়গুলিকে গুরুত্ব দিতে চাইছে না, তাতে কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের গাইডলাইন মানা হচ্ছে কি না, সেই প্রশ্ণই উঠেছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *