নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৭ জুন৷৷ রাজনৈতিক সম্পর্কে উষ্ণতা কমছে৷ তাই হয়তো, সুদীপ বর্মণদের বিজেপির প্রতি সুর

নরম হয়েছে৷ উপদ্রুত আইন জারী নিয়ে ভিন্ন ব্যাখ্যা দিলেন সুদীপবাবু৷ তাঁর মতে, বিজেপি নেতা বোধহয় এইটা বলতে চাইছেন যে, কেন্দ্র হস্তক্ষেপ করে দেখুক রাজ্যে রাজনীতিতে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নেই৷ তাঁর সোজাসাপ্ঢা জবাব, কেন্দ্র এই রাজ্যে হস্তক্ষেপ করুক তা তিনি ১০০ শতাংশ চাইছেন৷ এদিকে, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থীকে সমর্থনের প্রশ্ণেও সুদীপবাবুর ভিন্ন সুর শুনা গেছে৷ তাঁর সাফ কথা, পরিস্থিতির নিরিখে পদক্ষেপ নেবেন তিনি৷ ফলে, ঝেড়ে না কাশলেও খুব শীঘ্রই সুদীপবাবুরা আবারও দল বদল করছেন তার ইঙ্গিত মিলেছে৷
মঙ্গলবার দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে তৃণমূল বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মনের প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, সিপিএম নেতৃত্ব উপলব্ধি করতে পেরেছেন সরকার টিকিয়ে রাখা খুব মুশকিল৷ কারণ, মানুষ পরিবর্তন চাইছে৷ আর এই অবস্থা আঁচ করতে পেরেই চারিদিকে সিপিএম হামলা হুজ্জুতি চালিয়েছে, অভিযোগ সুদীপবাবুর৷ তাঁর সাফ কথা, হামলা হুজ্জুতি সিপিএমের গেম প্ল্যান৷ তাঁর দাবি, আগে যারা সিপিএমের কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করতেন, তার একটা বিরাট অংশ এখন তাঁদের বয়কট করছেন৷ সুদীপবাবুর কটাক্ষ, সিপিএম রাজনৈতিক সন্ত্রাসবাদী দল৷ যেকোন মর্মে তাঁরা ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়৷
সুদীপবাবুর বক্তব্য, দলীয় কর্মীদের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় হয়তো আবেগের বশে বিজেপি নেতা রাজ্যে উপদ্রুত আইন জারী হউক দাবি করেছেন৷ তিনি বলেন, উপদ্রুত আইন মানে আর্ম ফোর্স স্পেশ্যাল পাওয়ার এ্যক্ট (আফস্পা)৷ তাঁর দাবি, দীর্ঘদিন রাজ্যের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল আফস্পা’র বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখিয়েছে৷ এর প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে৷ এরই ফলশ্রুতিতে ১৮ বছর বাদে আফস্পা প্রত্যাহার করা হয়েছিল৷ তিনি মনে করেন, বিজেপি নেতা বোধহয় চেয়েছেন কেন্দ্র এরাজ্যে হস্তক্ষেপ করে দেখুন এখানে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নেই৷ গণতন্ত্র এরাজ্যে বিপন্ন৷ তাঁর সাফ কথা, কেন্দ্র হস্তক্ষেপ করুক তা তিনিও চাইছেন৷ তবে, কেন্দ্রের হস্তক্ষেপের ভিন্ন ব্যাখ্যা তিনি দিয়েছেন৷ তাঁর মতে, রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা যেহেতু রাজ্য সরকারের এক্তিয়ারভুক্ত, তাই কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক, মুখ্য সচিব এমনকি মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে পারে আইনের সুশাসন কঠোরভাবে পালন করা হোক৷ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একাধিকবার রাজ্য সফরে এসে রাজ্যের হালহকিকতের খোজ নিতে পারেন৷ তাঁর বক্তব্য, আমরাও চাইছি কেন্দ্র এবিষয়ে রাজ্য সরকারকে চাপে রাখুক৷
এদিকে, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থীকে সমর্থন করার বিষয়ে তিনি বলেন, শুরু থেকেই আমাদের একটাই অবস্থান, ভোট বিভাজন হোক আমরা তা চাই না৷ বামেদের পরাজিত করতে ভোট বিভাজন আটকাতে হবে৷ তাই রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে রাজ্যের পরিস্থিতির নিরিখে পদক্ষেপ নেওয়া হবে৷ ফলে, ঝেড়ে না কাশলেও, বিজেপি’র প্রতি সুদীপবাবুদের সুর নরম হয়েছে, তা এদিন অনেকটাই স্পষ্ট হয়ে গেছে৷

