নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৭ জুন৷৷ পারিবারিক অশান্তির জেরে পৃথক স্থানে দুই গৃহবধূ গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন৷ জানা গেছে, রাণীরবাজারে মোহনপুর এলাকায় রূপালি দাস(২৩) এবং গন্ডাছড়া ষাইটঘাট এলাকায় অঙ্কিতা মন্ডল (২২) আত্মহত্যা করেছেন৷ অঙ্কিতা মন্ডল পণের জন্য নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ মৃতার বাপের বাড়ির সদস্যদের৷ এদিকে, রূপালি দাস স্বামী অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত এই সন্দেহে শ্বশুড় বাড়ি ছেড়ে দুই মাস ধরে বাপের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেন৷ কিন্তু, সেখানেও কেন তিনি শ্বশুড় বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন না, এনিয়ে নানা প্রশ্ণ উঠায় অভিমানে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন৷
জানা গেছে, গকুলনগর রাস্তার মাথা এলাকার বাসিন্দা দুলাল দাসের সাথে সাত বছর আগে বিয়ে হয়েছিল রাণীরবাজার মোহনপুর এলাকার রূপালি দাসের৷ কিন্তু, গত কিছুদিন ধরে স্বামী অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন এই সন্দেহে পরিবারে অশান্তি চলছিল৷ দুই মাস আগে রূপালি দাস বাপের বাড়ি চলে যান৷ সোমবার রাতে বাবার সাথে তার শ্বশুড় বাড়ি কেন ফিরে যাচ্ছে না তা নিয়ে তীব্র বাদানুবাদ হয়৷ এরপর রাত সাড়ে নয়টা নাগাদ ঘরের দরজা লাগিয়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন রূপালি দাস৷ বাড়ির লোকজন দরজা ভেঙ্গে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে রাণীরবাজার প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান৷ কিন্তু, চিকিৎসকরা তার অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে তাকে জি বি হাসপাতালে স্থানান্তর করেন৷ জি বি হাসপাতালে রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ তার মৃত্যু হয়েছে৷ ধারণা করা হচ্ছে, শ্বশুড় বাড়ি ফিরে যাওয়া নিয়ে বাপের সাথে তীব্র বাদানুবাদে ঐ গৃহবধূ অভিমানে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন৷
এদিকে, তিন মাস আগে গন্ডাছড়া ষাইটঘাট এলাকার অঙ্কিতা মন্ডলের (২২) সাথে অমরপুর বাজার এলাকার বাসিন্দা নরেশ বিশ্বাসের বিয়ে হয়েছিল৷ কিন্তু, তাদের বিয়ে শ্বশুড়ি পূর্ণিমা বিশ্বাস মেনে নেননি৷ অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই পণের জন্য অঙ্কিতার উপর তার শ্বাশুড়ি নানাভাবে নির্যাতন করেছেন৷ বিয়ের তিন মাসের মধ্যে অঙ্কিতা তিনবার শ্বশুড়বাড়ি ছেড়ে বাপের চলে গিয়েছিলেন৷ শালিসি সভায় মিটমাট করা হয়েছিল৷ গতকাল অঙ্কিতা এবং তার শ্বাশুড়ির মধ্যে প্রচন্ড ঝগড়া হয়েছে৷ শ্বাশুড়ি তাকে মারধর করেছে বলে অভিযোগ৷ রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ নিজ ঘরেই কেরোসিন ঢেলে শরীরে আগুন লাগিয়ে দেন অঙ্কিতা৷ তখন তার স্বামী বাড়িতে ছিলেন না৷ প্রতিবেশীরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে অমরপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান৷ কিন্তু, চিকিৎসকরা তার অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে তাকে রাত ১২টা নাগাদ জি বি হাসপাতালে স্থানান্তর করেন৷ জি বি হাসপাতালে আজ সকাল সোয়া আটটা নাগাদ তার মৃত্যু হয়েছে৷
2017-06-28

