হাসপাতালের ভিত্তি প্রস্থর স্থাপনে রাজ্যের আপত্তি, অভিযোগ হেমন্তবিশ্বের, খন্ডন বাদলের

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৩ জুন৷৷ রাজ্যে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ তুলেছেন আসামের স্বাস্থ্যমন্ত্রী তথা নেডার কনভেনার হেমন্ত বিশ্ব শর্মা৷ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী অনুপ্রিয়া প্যাটেল রাজ্যে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ভিত্তি প্রস্থর স্থাপনের অনুষ্ঠানের দিনক্ষণ স্থির করে আসবেন বলে রাজ্য সরকার চিঠি পাঠিয়েছিলেন৷ কিন্তু, রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বাদল চৌধুরী উপস্থিত থাকতে পারবেন না এবং রাজ্যে ভিত্তি প্রস্থর স্থাপনের মতো অনুষ্ঠানের রীতি নেই বলে জবাব পাঠান কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকে৷ রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর প্রতি এই আচরণ অসৌজন্যমূলক বলে সমালোচনা করেন শ্রীশর্মা৷ এই অভিযোগের খন্ডন করে রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বাদল চৌধুরী জানিয়েছেন, আসামের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এই ধরনের চিন্তাধারণা দূর্ভাগ্যজনক৷ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করার মানসিকতা রাজ্য সরকারের নেই৷ বরং কেন্দ্রের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চেষ্টা করা হয়৷ তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী যেদিন আসতে চাইছিলেন সেদিন কোনভাবেই রাজ্যে অবস্থান করা সম্ভব ছিলনা৷ সেকথাই তাঁকে জানানো হয়েছিল৷ পাশাপাশি তিনি এও জানান, কেন্দ্রীয় প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্থর অনুষ্ঠান তাঁদের চাহিদা মতো রাজ্য সরকার সহযোগিতা করে থাকে৷
রাষ্ট্রপতি নির্র্বচনের পর ত্রিপুরা বিধানসভা নির্র্বচনের জন্য বিজেপি সর্বশক্তি দিয়ে লড়াইয়ে নামবে বলে শুক্রবার সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন অসমের অর্থমন্ত্রী তথা উত্তরপূর্র্বঞ্চল গণতান্ত্রিক জোট (নেডা) এর চেয়ারম্যান হেমন্ত বিশ্বশর্র্ম ৷ রাজ্য সফরে এসে তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ করেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘রাষ্ট্রপতি নির্র্বচনের পরেই বিজেপির প্রধান লক্ষ্য হবে ত্রিপুরা বিধানসভা নির্র্বচন৷ আর এবার ত্রিপুরা আড়পারের লড়াই হবে৷ অনেক শুভাচিন্তক, বুদ্ধিজীবী ব্যক্তিবর্গ এবং সংগঠনের সঙ্গে বিজেপির কথাবার্তা হয়েছে’’৷
তিনি বলেন, ‘‘ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার বিধানসভা নির্বচনের ৮ মাস আগেই বিব্রত হয়ে পড়েছেন৷ তার এবং মন্ত্রীসভার সদস্যদের কার্যকলাপ এসব স্পষ্ট করে দিয়েছে৷ কেন্দ্রীয় সরকার সুপার স্পেশ্যালিটি হসপিটালের জন্য ১৫০কোটি টাকা অনুমোদন করেঠিল৷ কিন্তু এই হাসপাতসের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের জন্য ইচ্ছা প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী অনুপ্রিয়া প্যাটেল ত্রিপুরা সরকার কে চিঠি দিয়েছিলেন৷ কিন্তু ত্রিপুরা সরকারের তরফে স্বস্থ্যমন্ত্রী বাদল চৌধুরী চিঠি দিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে ত্রিপুরায় না আসার এবং এই ধরনের কোন কার্যক্রম করা যাবে না বলে চিঠি দিয়েছিলেন’’৷ হেমন্ত বিশ্বশর্র্ম সংশ্লিষ্ট বিষয়ে চিঠিপত্র দেখিয়ে বলেন, ‘‘কোন রাজ্য সরকারের মন্ত্রী এমনটা করতে পারেন তা ভাবা যায় না৷ শুধু তাই নয় রাজ্য সরকার এবং শাসক দল বারংবার কেন্দ্রীয় বঞ্চনার কথা বলেও দেড়শো কোটি টাকার অনুমোদিত প্রকল্প গ্রহণ করেনি’’৷ তিনি আরে উল্লেখ করেন বামেদের পতন অবশ্যম্ভাবী৷ আর তাই এখন রাজ্য সরাকার যা খুশি কাজ করছে৷ মুখ্যমন্ত্রী এবং তার ঘনিষ্ঠরাও আতঙ্কে ভুগছেন৷
এদিন শ্রীশর্মার সমস্ত অভিযোগের খন্ডন করেন রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বাদল চৌধুরী৷ তিনি মহাকরণে সাংবাদিকদের জানান, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যেদিন রাজ্যে এসে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করতে চাইছিলেন সেদিন এরাজ্যে অবস্থান করা সম্ভব ছিল না৷ তাই তিনি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে তা জানিয়েছেন৷ অথচ এই বিষয়টিকে নিয়ে নোংরা রাজনীতি করা হচ্ছে৷ এবিষয়ে আসামের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মার বক্তব্য অত্যন্ত দূর্ভাগ্যজনক বলে মন্তব্য করেন বাদলবাবু৷
তিনি জানান, কেন্দ্র-রাজ্য যৌথভাবে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল গড়ে তুলছে৷ এই প্রকল্পে কেন্দ্র দিচ্ছে ১২০ কোটি টাকা এবং রাজ্য দেবে ৩০ কোটি টাকা৷ কেন্দ্র এই প্রকল্পের দায়িত্ব দিয়েছে সিপিডব্লিউকে৷ তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য জে পি নাড্ডা রাজ্যে এসেছেন৷ তাঁর সাথে যথেষ্ট সৌজন্যতা দেখানো হয়েছে৷ বিভিন্ন বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা হয়েছে৷ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ভিত্তি প্রস্থর নিয়েও খোলা মনে চিঠি পাঠানো হয়েছিল৷ অথচ বিষয়টিকে নিয়ে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে মানুষকে বিভ্রান্ত করা চেষ্টা চলছে, দাবি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর৷