রাজ্যের নারীরা সুরক্ষিত নন, সরকারকে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে সতর্ক করল জাতীয় মহিলা কমিশন

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২০ জুন৷৷ রাজ্যে নারীরা সুরক্ষিত নন, এই অভিযোগের ভিত্তিতে রাজ্য সফরে এসে জাতীয় মহিলা

জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্যা সুষমা শাহু মঙ্গলবার আগরতলায় সাংবাদিক সম্মেলনে৷ ছবি নিজস্ব৷

কমিশনের সদস্যা সুষমা শাহু পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকায় কড়া ভাষায় সমালোচনা করেছেন৷ পাশাপাশি নারীদের উপর নির্যাতন বৃদ্ধি পেলেও রাজ্য সরকার মৌনতা অবলম্বন করছে বলে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন৷ তাই, এই পরিস্থিতির বদল আনতে এবং নারীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য তিনি রাজ্য সরকার সতর্ক করে গেছেন৷ নারী সংক্রান্ত অপরাধে ত্রিপুরা পূর্বোত্তরে শীর্ষস্থানে রয়েছে বলে তিনি দাবি করেন৷ তবে, জাতীয় স্তরেও নারীরা সুরক্ষিত নন, সেবিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে গেছেন৷ নারীদের উপর সংগঠিত অপরাধ নিয়ে জাতীয় হার চেপে গিয়েছেন তিনি৷

মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, ধর্ষণ এবং খুনের ৯টি মামলা তার হাতে এসেছে৷ কোন কোন মামলায় অভিযুক্তরা গ্রেপ্তার হলেও পুলিশ মামলাটি দূর্বল করার জন্য অভিযুক্তদের মানসিক বিকলাঙ্গ দেখানো হচ্ছে৷ এমন ১৫টি মামলা তাঁর হাতে এসেছে৷ তিনি জানিয়েছেন, মহিলাদের উপর নির্যাতনের বিষয়ে রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশকের সাথে কথা হয়েছে৷ নারীদের উপর নির্যাতনের সমস্ত মামলা রিপোর্ট তিনি চেয়েছেন৷ রিপোর্ট না দিলে রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশককে সমন পাঠিয়ে দিল্লিতে ডাকা হবে৷ আনোয়ারা ইস্যুতে এদিন তিনি অভিযুক্ত চিকিৎসকদের কড়া ভাষায় সমালোচনা করেছেন৷

তিনি বলেন, পুলিশ নিপীড়িতদের অভিযোগ নিতে চায় না৷ আর তারা দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চায় না৷ রাজ্যে অদ্ভুত পরিস্থিতি বিরাজ করছে৷ সুষমা শাহু বলেন, এতো অভিযোগ জমা পরার কারণ সম্পর্কে পুলিশ সুপারকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি রাজ্যের সচেতনবলে জানিয়েছেন৷ এনজিও’রা মানুষকে সচেতন করছে৷ সুষমা শাহু সমস্ত এনজিও’র রিপোর্ট দিতে পুলিশ প্রশাসনকে বলেছেন৷ তাঁর বক্তব্য, সচেতন সমাজে এধরনের ঘটনা ঘটারই কথা নয়৷ পাশাপাশি প্রত্যেক অটো সিন্ডিকেটগুলিকে অটোর রেজিস্ট্রেশন থাকা বাধ্যতামূলক বলে তিনি জানিয়ে গিয়েছেন৷ সিন্ডিকেটগুলির দায়িত্ব এই সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য তাদের কাছে রাখার৷ কারণ, অটোর মধ্যেও শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটছে এরাজ্যে৷ তাঁর দাবি, রাজ্যের জনসংখ্যার অর্ধেক নিপীড়নের শিকার৷ আর অত্যাচারের ঘটনার পেছনে প্রতিটি ক্ষেত্রেই শাসক দলের ক্যাডাররা যুক্ত৷ তাই সরকার ও প্রশাসন তাদের বাঁচানোর চেষ্টা করছে৷ রাজ্য সরকার নারীদের উপর সংগঠিত অপরাধ নিয়ে মৌন অবস্থান নিয়েছে৷ কারণ, মুখ খুললেই দলীয় ক্যাডাররা ফেঁসে যাবেন৷ সুষমা শাহু জানান, তিনি আগামী কিছু দিনের মধ্যে আবার রাজ্যে ফিরে আসবেন এবং বিভিন্ন ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখবেন৷

রাজ্য সফরে এসে জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্য সুষমা শাহু কুকিছড়ায় নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যদের সাথে দেখা করেছেন৷ এছাড়াও আরও কয়েকজন নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যরা তাঁর সাথে দেখা করেছেন৷ আনোয়ারা চৌধুরীর বাবা এদিন রাজ্য অতিথিশালায় তাঁর সাথে দেখা করে ন্যায় বিচার চেয়েছেন৷